|
|
|
|
টাটারা প্রকল্প না গড়ায় ‘খাস’ হচ্ছে ওই জমি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বর্তমান জমি অধিগ্রহণ আইনের সংশোধন নয়, শুধুমাত্র সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে নিতে একটি নতুন বিল আনছে সরকার। নাম হবে ‘সিঙ্গুরের জমি পুনর্বাসন ও উন্নয়ন বিল’। শুক্রবার রাতেই বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকারের এক মুখপাত্র জানান, সংবিধানের সপ্তম তফসিলের ২ নম্বর তালিকায় রাজ্যের হাতে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার ভিত্তিতেই নতুন বিলটি তৈরি করা হচ্ছে। এই বিলে বলা হচ্ছে, চার বছরেও উৎপাদন শুরু করতে না পেরে সিঙ্গুরের ওই জমি ছেড়ে চলে গিয়েছে টাটা গোষ্ঠী। তাদের সহযোগী শিল্প সংস্থাগুলিও কোনও শিল্প গড়তে পারেনি। এই অবস্থায় ওই ৯৯৭.১১ একর জমি ‘খাস’ করে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। অধিগ্রহণের সময়ে যে সব জমি মালিক ক্ষতিপূরণ নেননি, এই জমির একটি অংশ তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বাকি জমি ভবিষ্যতে শিল্প অথবা অন্য কোনও জনস্বার্থবাহী কাজে ব্যবহার করা হবে। বিলে থাকছে, কোনও পক্ষ (পড়ুন টাটাগোষ্ঠী) ক্ষতিপূরণ চাইলে তাদের জেলা (হুগলি) জজের কাছে আবেদন করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার জানিয়েছেন, আগামী ১৪ জুন, মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে সিঙ্গুর নিয়ে নতুন বিলটি পেশ করা হবে। সেইমতো নতুন বিলের খসড়া চূড়ান্ত করতে এ দিন সারাদিন ধরে মহাকরণে চলে তৎপরতা। মুখ্যমন্ত্রী তো বটেই, তাঁর সঙ্গে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, তৃণমূলের সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই দফায় দফায় বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সিঙ্গুরের জমি ফেরাতে প্রথমে তামিলনাড়ুর অনুকরণে জমি অধিগ্রহণ আইন সংশোধনের কথা ভাবা হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে জমি অধিগ্রহণ আইন সংশোধন করে তামিলনাড়ু সরকার ঠিক করে, শিল্পের জন্য জমি নিয়ে তিন বছর ফেলে রাখলে তা জমির আসল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অনুরূপ সংশোধনী সিঙ্গুরের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা অসুবিধা বলে জানিয়ে দেয় আইন দফতর। তাদের যুক্তি, তামিলনাড়ুর সংশোধনীতে আসল মালিকের কাছে জমি ফিরিয়ে দেওয়া কথা বলা হয়েছে। সিঙ্গুরের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। কারণ, সিঙ্গুরে ‘অনিচ্ছুকদের’ জমি প্রকল্প এলাকার মধ্যে ছোট ছোট জোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেন, “তামিলনাড়ুর ওই আইনে অনেক গণ্ডগোল আছে। আমাদের আইনে যাতে তা না থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।” এই কারণেই একেবারে নতুন একটি আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। |
|
|
|
|
|