|
|
|
|
শিল্প উৎসাহ নীতিতেও নীতীশের ‘সংরক্ষণ-রাজনীতি’ |
অত্রি মিত্র • পটনা |
এত দিন পর্যন্ত বেসরকারি ক্ষেত্রে অনগ্রসর এবং তফসিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে বারবার সরব হয়েছেন নীতীশ কুমাররা। এ বার বিহারের নয়া শিল্প-উৎসাহ নীতিতে সেই সংরক্ষণের নীতিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে ‘নজির’ গড়লেন নীতীশ সরকার। সম্প্রতি পাঁচ বছরের জন্য বিহারের ‘শিল্প-উৎসাহ নীতি-- ২০১১’ ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বলা
হয়েছে, যে সব লগ্নিকারী কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে,
তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ বাড়তি ছাড়ের ব্যবস্থা করবে সরকার।
বিহার সরকারের শিল্প দফতরের প্রধান সচিব সি কে মিশ্রের দাবি, “সারা দেশের মধ্যে বিহারই প্রথম রাজ্য, যারা নিজেদের শিল্পনীতিতে এ ভাবে সংরক্ষণের উপরে বাড়তি ছাড়ের কথা ঘোষণা করল।” তবে এই ঘোষণায় যে বাড়তি বিনিয়োগ আসবে, এমনটা আশা করছেন না কেউই। রাজ্যের এক পদস্থ কর্তার কথায়, “এটি রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা। কিন্তু এর কারণে বাড়তি বিনিয়োগের সম্ভাবনা কেউই দেখছেন না।”
রাজ্য সরকারের নয়া শিল্প উৎসাহ নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের শিল্প-বণিক মহলও। বিহার চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি ও পি শাহের কথায়, “বিভিন্ন রাজ্যের শিল্প-উৎসাহ নীতির নিরিখে বর্তমানে বিহারেরটাই এক নম্বর। এতে বিহারের বিনিয়োগের সম্ভাবনা যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে হচ্ছে।” আর সংরক্ষণের ঘোষণা নিয়ে ও পি শাহের বক্তব্য, “এ নিয়ে অসুবিধের কিছু
নেই। সরকার তো জোর করছে না। আপনি মানলে বাড়তি ছাড় পাবেন। না মানলেও কোনও অসুবিধে নেই। বাকি ছাড় তো পাচ্ছেনই।”
সার্বিক ভাবে শিল্প উৎসাহ নীতি ঘোষণা করে সি কে মিশ্র বলেন, “আমরা ওড়িশা, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের শিল্পনীতি ভাল করে দেখেছি। তার পরেই এ রাজ্যের শিল্পনীতি তৈরি করা হয়েছে। শিল্পের মানচিত্রে বিহার একেবারেই আনকোরা। তাই এ রাজ্যে বিনিয়োগ আনতে বেশ কিছু ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।” প্রাথমিক ভাবে নতুন বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে ন’টি ক্ষেত্রকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্যের শিল্প দফতর। সেগুলি হল: খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্প, পর্যটন, অত্যাধুনিক হাসপাতাল, তথ্য ও প্রযুক্তি, উচ্চশিক্ষা, ইলেকট্রনিক্স হার্ডওয়্যার, বস্ত্র এবং বিদ্যুৎ ও অপ্রচলিত শক্তি।
নতুন শিল্প উৎসাহ নীতিতে বলা হয়েছে: কারখানার জন্য জমির রেজিস্ট্রেশন করালে লগ্নিকারীদের ১০০ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি মকুব করবে সরকার। একই ভাবে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত যারা বিনিয়োগ করবে তাদের ৫ কোটি এবং ৫০০ কোটির বেশি যারা বিনিয়োগ করবে তাদের ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হবে। অন্য দিকে, লগ্নিকারীরা মূল্যযুক্তি কর বাবদ যে পরিমাণ অর্থ দেবেন তার ৮০ শতাংশ সরকার লগ্নিকারীকে আবার ফেরত দেবে।
বিহারে এখন সবচেয়ে বেশি লগ্নি প্রয়োজন বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে। সে কথা মাথায় রেখেই যারা এই ক্ষেত্রে লগ্নি করবে, তাদের প্রাথমিক ভাবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা হয়েছে। আর অপ্রচলিত বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ছাড়ের পরিমাণ ৬০ শতাংশ। তবে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ‘সংরক্ষণ নীতি’ মানলে এই সব সুবিধেই আরও ১০ শতাংশ করে বেড়ে যাবে। |
|
|
|
|
|