|
|
|
|
মৈত্রী এক্সপ্রেসে |
মৈত্রী এক্সপ্রেসে যাত্রী টানতে যাত্রার দিন বদল দু’পারেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এ-পার বাংলা ও-পার বাংলার যাত্রীদের মধ্যে সাড়া পড়ে যাবে ভেবেই কলকাতা-ঢাকা ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ চালু করা হয়েছিল। কিন্তু তিন বছরেও তেমন সাড়া মেলেনি। তাই এ বার যাত্রী বাড়ানোর জন্য ওই ট্রেন চলাচলের দিন পাল্টে ফেলা হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক রেল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এখন কলকাতা থেকে বুধ ও শনিবার মৈত্রী এক্সপ্রেস ছাড়ে ঢাকার পথে। ঢাকা থেকে কলকাতার জন্য ট্রেন ছাড়ে মঙ্গল ও রবিবার। নতুন ব্যবস্থায় কলকাতা থেকে ট্রেন ছাড়বে শনি ও মঙ্গলবার। এ-পার থেকে দিন বদলের সূচনা হবে ২ জুলাই। ঢাকা থেকে দিন বদল শুরু হবে ১ জুলাই। নতুন ব্যবস্থায় ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়া হবে শুক্র ও বুধবার।
দিন বদলের যুক্তি কী? রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, দু’দেশে সাপ্তাহিক ছুটির দিন আলাদা। কলকাতায় সাপ্তাহিক ছুটি রবিবার, কোনও কোনও শনিবারেও ছুটি থাকে। ঢাকায় সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার। দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য ছুটির দিনকে কাজে লাগালে ফল মিলতে পারে। এখন যিনি কলকাতা থেকে বুধ বা শনিবার ঢাকায় পৌঁছচ্ছেন, তাঁকে ফেরার গাড়ি ধরতে হয় রবি বা মঙ্গলবার। জুলাই থেকে শনি বা মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছলে ফেরার ট্রেন মিলবে বুধ বা শুক্রবার। একই ভাবে এখন ঢাকা থেকে মঙ্গল ও রবিবার কলকাতায় আসার পরে ফেরার ট্রেন মেলে বুধ বা শনিবার। নতুন ব্যবস্থায় ঢাকা থেকে বুধ বা শুক্রবার কলকাতায় এসে ফিরতি ট্রেন পাওয়া যাবে শনি বা মঙ্গলবার। দু’দেশের রেলকর্তারা মনে করছেন, এ ভাবেই ছুটির ও কাজের দিনের বেশি সদ্ব্যবহার করতে পারবেন দু’দেশের যাত্রীরা। কলকাতা থেকে অবশ্য এখনই শনিবার ওই ট্রেন ছাড়ে। কর্তৃপক্ষের আশা, বাংলাদেশে ছুটির দিন শুক্রবার ট্রেন ছাড়ার নতুন ব্যবস্থায় বিশেষ ফল মিলবে।
২০০৮ সালে দু’দেশের মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচলের সূচনা হয়েছিল অনেক প্রত্যাশা নিয়ে। ভাবা হয়েছিল, সড়কপথের বদলে রেলপথেই এ বার থেকে বেশি যাত্রী যাতায়াত করবেন। প্রয়োজনে সপ্তাহে দু’দিনের বদলে আরও বেশি দিন ট্রেন চালানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ২০০৮-এর ১৪ এপ্রিল, পয়লা বৈশাখ কলকাতা স্টেশন থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ছাড়ার সময়। কিন্তু বাস্তবে কখনওই প্রত্যাশিত জনপ্রিয়তা পায়নি এই ট্রেন।
গোড়ায় মনে করা হয়েছিল, ১৪ ঘণ্টার দীর্ঘ রেলযাত্রার জন্যই মৈত্রী এক্সপ্রেসে ভিড় হচ্ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৯ সালে রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পরে ওই বছরের ১ অগস্ট থেকে ট্রেনটি চলাচলের দিন বদলে দেওয়া হয়। যাত্রার সময়ও কমিয়ে আনা হয় প্রায় দু’ঘণ্টা।
কিন্তু তাতেও তেমন ফল হয়নি। গত মে মাসের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা থেকে যে-আট দিন মৈত্রী এক্সপ্রেস ছেড়েছিল, সেই সব দিনে গড় যাত্রী-সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৭। সর্বাধিক যাত্রী হয়েছিল ৭ মে ১১৯ জন। সব চেয়ে কম যাত্রী হয়েছিল ৪ মে ৫৮ জন মাত্র। এক রেলকর্তা অবশ্য বলেন, আগে গড় যাত্রী হত আরও কম, ৬০ জনের মতো। অথচ ওই ট্রেনের আসন-সংখ্যা ভারতীয় রেকে ৩৭০, বাংলাদেশি রেকে ৪১৮। সাধারণ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে বাতানুকূল প্রথম শ্রেণি সব রকম কোচই রয়েছে ওই ট্রেনে। নতুন ব্যবস্থায় কতটা কাজ হয়, এখন সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|