নরমে-গরমে চেষ্টা রামদেবকে বোঝানোর, উদ্বেগে বিজেপি
প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে রামদেব-অধ্যায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে শুরু করেছে কেন্দ্র। তার ইঙ্গিত পেয়ে আশঙ্কা বাড়ছে বিজেপি শিবিরে।
রামদেব-পরিস্থিতি সামলানোর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে সুকৌশলে সে কাজ রূপায়ণ করছেন কেন্দ্রের মন্ত্রী সুবোধকান্ত সহায়। আজ কলকাতা যাওয়ার আগেও সুবোধ কান্তের সঙ্গে কথা হয়েছে প্রণববাবুর। তার পর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও সাম্প্রতিক গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করেছেন তিনি। রামদেবের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব নিয়ে এ দিন প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেন স্বামী অগ্নিবেশ। প্রণববাবু তাঁকে জানান, মধ্যস্থতাকারীর দরকার নেই। তবে রামদেবের সঙ্গে দেখা হলে অগ্নিবেশ যেন তাঁকে অনশন তুলে নিতে বলেন।
কেন্দ্র এখন রামদেবকে বোঝাচ্ছে, রামলীলা ময়দান থেকে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পিছনে অন্য কারণ ছিল। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর এসেছিল, রামদেবের প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এই খবর জানিয়ে বলেন, “গোয়েন্দাদের কাছে রামদেবের উপরে হামলার সম্ভাবনার খবর এসেছিল। তা কত দূর সত্যি, তা খতিয়ে দেখার বিষয়। কিন্তু রামলীলা ময়দান থেকে তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন ছিল।” কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকের মত, রামলীলায় পুলিশি অভিযানের আগে এই আশঙ্কার বিষয়টি যোগগুরুকে বোঝানো যেত।
সেই সঙ্গে রামদেবের উপর নিরন্তর চাপ বাড়ানো চলছে। ইতিমধ্যেই রামদেব ও তাঁর সঙ্গী বালকৃষ্ণর ‘প্রকৃত স্বরূপ’ ফাঁস করতে নেমে পড়েছে কংগ্রেস ও সরকার। রামদেবের সম্পত্তির খতিয়ান, তাঁর ট্রাস্টের অধীনে ব্যবসা, ওষুধ তৈরি সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্তে নেমেছে। চাপের মুখে রামদেব ও বালকৃষ্ণ তাঁদের সম্পত্তির যে খতিয়ান প্রকাশ করেছেন, তার মধ্যেও গলদ আছে বলে দাবি করছে সরকার। সম্পত্তির যে খতিয়ান তাঁরা তুলে ধরেছেন, দেখা যাচ্ছে খরচের পরিমাণ তার থেকে অনেক বেশি। বালকৃষ্ণের ৩টি ভুয়ো পাসপোর্ট রয়েছে বলেও অভিযোগ করছে সরকার। একটি হত্যা মামলায় রামদেব ও বালকৃষ্ণের যোগসাজশের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে রামদেব যত চাপের মধ্যে পড়ছেন, বিজেপি ও সঙ্ঘ শিবিরে চিন্তা বাড়ছে। রামদেবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ তাঁকে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বিজেপি শিবির থেকে বারবার বলার চেষ্টা হচ্ছে, তিনি অনশন ভাঙেননি। উত্তরাখণ্ডের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী রমেশচন্দ্র পোখরিয়ালও সেই দাবি করেন। যোগগুরুর স্বাস্থ্যের অবনতি হলেও দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা অনশন প্রত্যাহারের আবেদন জানাননি। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার মতে, যদি রামদেব অনশন ভাঙেন বা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেন, তা হলে বিজেপিরই লোকসান। কারণ, বিজেপি ও আরএসএস রামদেবের আন্দোলনকে সমর্থন জুগিয়েছে। বিজেপির কোনও নেতা কালো টাকা উদ্ধার বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হলে যে ভাবে জনগণের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি সমর্থন নিয়ে দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের মুখ হয়ে দাঁড়িয়েছেন রামদেব। ফলে বিজেপি দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে চাইলেও রামদেবের জনসমর্থনকে পুঁজি করতে চায়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে রাতে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক হয়।
কালো টাকা উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করার আগে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করেন রামদেব। সঙ্ঘ পরিবার রামদেবের আন্দোলনকে সমর্থন করেছে। কিন্তু দিগ্বিজয়ের মতো কংগ্রেস নেতারা যখন রামদেবের আন্দোলনের সঙ্গে আরএসএসের যোগসাজশের অভিযোগ তোলেন, তখন পিছিয়ে আসতে বাধ্য হন যোগগুরু। বিজেপি এখন বলছে, রামদেব বা আন্না হাজারে নন, আসল বিষয় দুর্নীতি। যখন সনিয়ার নেতৃত্বে জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ আইন করার পরামর্শ দেয়, তখন সমস্যা হয় না। অথচ আন্না হাজারে বা রামদেব সরব হলেই সরকারের সমস্যা! কালই আডবাণী ব্লগে বিষয়টি তুলবেন।
Previous Story Desh Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.