|
|
|
|
বিকেন্দ্রীকরণ জেলাতেও |
|
বেলতলা মোটরযান বিভাগ ভেঙে আরও তিন কেন্দ্র
স্বপন সরকার |
|
বেলতলার মোটর ভেহিকল্স বা মোটরযান বিভাগ যে ‘ঘুঘুর বাসা’, এই অভিযোগ পরিবহণ দফতরেরও অজানা নয়। নতুন সরকার সেই ঘুঘুর বাসা উৎখাত করে মানুষকে সহজ পরিষেবা দিতে ওই বিভাগকে ভেঙে আরও তিনটি কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি জেলার রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কার্যালয় বা আরটিও ভেঙে একাধিক কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সামগ্রিক ভাবে এই ব্যবস্থা দেখভালের জন্য একটি ডিরেক্টরেট গড়ে তোলার কথা ভাবছে পরিবহণ দফতর। এই ব্যবস্থায় ‘এক জানলা’ পদ্ধতিতে কাজ করাতে চাইছে সরকার।
এই বিকেন্দ্রীকরণ কেন?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বেলতলা বা জেলার বিভিন্ন পরিবহণ দফতর দালালদের কব্জায় চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই সব জায়গায় কাজ করতে গিয়ে মানুষ হয়রানির শিকার হন। রাজ্যে পালাবদলের পরে নতুন সরকার মনে করছে, মানুষের ভোগান্তি বন্ধ করার জন্য ওই কেন্দ্রগুলির বিকেন্দ্রীকরণই একমাত্র ব্যবস্থা হতে পারে। পরিবহণ দফতর ঠিক করেছে, বেলতলার মোটরযান বিভাগ ভেঙে কসবা, সল্টলেক ও উত্তর কলকাতায় তারা একটি করে কেন্দ্র গড়ে তুলবে। পরিবহণ দফতর ইতিমধ্যে বেলতলা কার্যালয়ের কাছ থেকে এই বিষয়ে নানা তথ্য জানতে চেয়েছে। ওই সব কেন্দ্র গড়ে তুলতে কী কী প্রয়োজন, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে বেলতলার কর্তৃপক্ষকে। বেলতলার দফতর ভেঙে যে-তিনটি কেন্দ্র গড়া হবে, পরিবহণ দফতরের কর্তারা কয়েক দিনের মধ্যে তার জন্য জায়গা দেখতে যাবেন।
বিকেন্দ্রীকরণের ব্যবস্থা হচ্ছে জেলাগুলিতেও। পরিবহণ দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, জেলার পরিবহণ বিভাগকে ভেঙে মহকুমা পর্যায়ে এই ধরনের কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। সব মহকুমায় তা তৈরি করা যাবে না। দফতরের এক কর্তার কথায়, “যে-মহকুমায় গাড়ির সংখ্যা বেশি, সেখানেই এই কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।”
তাঁর অভিযোগ, গাড়ি চলার উপযুক্ত কি না, সেই পরীক্ষা এবং সিএফ সার্টিফিকেটকে কেন্দ্র করে ওই সব জায়গায় দুর্নীতি হয়। ফলে বহু গাড়ি চলার উপযুক্ত না-হওয়া সত্ত্বেও অনুমোদন পেয়ে যায়। পরে দেখা যায়, ওই সব গাড়িই দুর্ঘটনায় পড়ছে বেশি। প্রাণহানি ঘটছে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, কোন কোন গাড়ি পারমিট বা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চলছে, নতুন ব্যবস্থায় তা জানা এবং তার উপরে নজরদারি করা সহজ হবে। অনেক লাভজনক রুটে বেসরকারি বাস চললেও সরকারি বাস চালানো হচ্ছে অলাভজনক রুটে। নতুন ডিরেক্টটরেটের ভূমিকা হবে এই সব অব্যবস্থা চিহ্নিত করে তার অবসান ঘটানো। নতুন ব্যবস্থার উদ্দেশ্য, যতটা সম্ভব ভর্তুকি বন্ধ করে পরিবহণ সংস্থাগুলিকে লাভজনক করে গড়ে তোলা।
নতুন ব্যবস্থা কেন, তা জানতে চাওয়া হলে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সী বলেন, “কাজের সুবিধার জন্য আমরা এক জানলা নীতি নিতে চাইছি। একই ছাতার তলায় সব কাজ হয়ে যাবে।” জেলার ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেশি বলে মনে করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “মোটর ভেহিকল্সের কাজ করতে অনেক দূর থেকে মানুষকে জেলা সদরে আসতে হয়। দূরত্ব কমাতে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে কোনও কোনও মহকুমায় আমরা নতুন কেন্দ্র খুলতে চাইছি।” |
|
|
|
|
|