|
|
|
|
অবৈধ স্কুলগাড়ির দাপট চলছেই শহরে |
আর্যভট্ট খান |
শহরে স্কুলগাড়ি নিয়ে অনিয়ম চলছেই। হাজার চারেক স্কুলগাড়ির মধ্যে বৈধ, অর্থাৎ পারমিট পাওয়া গাড়ির সংখ্যা মাত্র ৬০টি। বেআইনি স্কুলগাড়িগুলিকে বৈধ করার সময়সীমা ছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। তার পরেও কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। তবু শহরের রাস্তায় যে সব স্কুলগাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে, তার অধিকাংশই বেআইনি। পুলকার সংগঠনগুলোর দাবি, তারাও চাইছে শহরের রাস্তায় বৈধ ভাবে চলতে। তাদের অভিযোগ, বৈধকরণের নানা বিষয় নিয়ে আগের সরকারের সঙ্গে চলেছে টানাপোড়েন। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সী বলেন, “স্কুলগাড়ি সংগঠনের তরফে চিঠি পেয়েছি। সব দিক খতিয়ে দেখে বৈধকরণ প্রক্রিয়াটি দ্রুত করার চেষ্টা হবে।”
দুর্ঘটনা ঘটলেই স্কুলগাড়ি কেন পারমিট ছাড়া চলছে, প্রতিবার এই প্রশ্ন ওঠে। পারমিট বা বৈধতা না থাকায় অনেক স্কুলগাড়িই ন্যূনতম নিয়ম মানে না বলে অভিযোগ। লজঝ্ড়ে গাড়িতে বাচ্চাদের ঠাসাঠাসি করে নিয়ে যাওয়ায় বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। অভিভাবকেরা অনেক সময়ে স্কুলগাড়ির অনভিজ্ঞ চালকদের নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন। তাতে কাজের কাজ অবশ্য কিছুই হয়নি। বৈধকরণের সময়সীমা বহু দিন আগে পেরিয়ে গেলেও হাতে গোনা কয়েকটি স্কুলগাড়ি পারমিট পেয়েছে।
পুলকার অ্যাসোসিয়েশনগুলোর অবশ্য অভিযোগ, আগের সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই বৈধকরণের পুরো প্রক্রিয়াটি ঢিমেতালে চলছিল। ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘সাউথ ক্যালকাটা কার পুল অপারেটর্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-র তরফে জানানো হয়েছে, পারমিট করানোর প্রক্রিয়ায় প্রথমেই বাধা পড়েছে মোটর ভেহিক্লসে গাড়িকে বাণিজ্যিক করতে গিয়ে। নানা অজুহাতে গাড়ি বাতিল হয়েছে বলে অভিযোগ। ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক আবির রায়ের অভিযোগ, “গাড়িতে ফার্স্ট এড বক্স থেকে শুরু করে জলের বোতল সব থাকলেও নানা অভিযোগে গাড়ি বাতিল হয়েছে। অনেক সময়ে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে স্কুলগাড়ির কমার্শিয়াল নম্বর পাওয়ার পরে ফাইল হারিয়ে গিয়েছে বলে মোটর ভেহিক্লস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। ফলে প্রক্রিয়া এগোয়নি। আমরা এই সব জানিয়ে পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। আশা করি, দ্রুত সমাধান হবে।”
বেলতলার পাবলিক ভেহিক্লস বিভাগের (পিভিডি) সচিব উজ্জ্বল সেনগুপ্ত অবশ্য বলেন, “বেশির ভাগ স্কুলগাড়িই ট্যাক্স ঠিকঠাক মেটায়নি। ফলে পারমিট পেতে দেরি হচ্ছে।” অন্য দিকে আবিরবাবুর বক্তব্য, “রোড ট্যাক্স অত্যন্ত বেশি হওয়াতেই অনেক স্কুলগাড়ির মালিক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ফলে পুলকার বৈধকরণ প্রক্রিয়াটি শ্লথ হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ স্কুলগাড়ির মালিকই চাইছেন এই রোড ট্যাক্স কমানো হোক।” ‘সাউথ ক্যালকাটা কার পুল অপারেটর্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র তরফে উজ্জ্বল দে বলেন, “আমরা সকলেই চাই দ্রুত পারমিট হয়ে যাক। স্কুলগাড়ি বৈধতা পেলে আমাদেরও নানা দিক থেকে সুবিধা হবে। তবে বিগত সরকার যে রোড ট্যাক্স নির্ধারণ করে গিয়েছে, তা অনেকটা বেশি। বছরে সাড়ে আট হাজার টাকার উপরে। আমরা নতুন সরকারের পরিবহণমন্ত্রীকে এই ট্যাক্স কমানোর জন্য আবেদন করব।” |
|
|
|
|
|