|
|
|
|
প্রাথমিক পরীক্ষায় গর্ভে শিশু মিলল না |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর ও কলকাতা |
গর্ভে সন্তান আছে ভেবে যে তরুণীর পেট কেটে কিছুই মেলেনি, প্রাথমিক পরীক্ষার রিপোর্ট জানাল, তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন না। তবে যিনি তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার করেছিলেন, কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের সেই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ শুভেন্দু দত্তকে আপাতত ‘কর্মে অব্যাহতি’র নির্দেশ দিয়েছেন নদিয়ার জেলাশাসক সঞ্জয় বনসল। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “আপাতত ওই চিকিৎসককে কাজ না-দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু এই ঘটনা কার্যত আরও বৃহত্তর সঙ্কটের দিকে ইঙ্গিত করছে।
সাড়ে সাত মাসের সন্তানসম্ভবা ভেবে বুধবার উষা দুর্লভ নামে এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার করেছিলেন শুভেন্দুবাবু। কিন্তু পেট কেটে দেখা যায়, ভিতরে কিছুই নেই। চিকিৎসক দাবি করেন, গ্যাসেই উষাদেবীর পেট ফুলে ছিল। তবে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি না করে কেন অস্ত্রোপচার করা হল, তার সদুত্তর হাসপাতাল দিতে পারেনি। প্রসূতির বাড়ির লোক পাল্টা দাবি করেন, অস্ত্রোপচারের পরেই সদ্যোজাত শিশুটিকে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। এই ‘সংশয়ের’ অবসান ঘটাতেই এ দিন প্রসূতির মূত্রের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মূত্র-পরীক্ষার প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, উষাদেবী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন না। সে ক্ষেত্রে তাঁর পেট কাটা হয়েছিল কীসের ভিত্তিতে? আল্ট্রাসোনোগ্রাফি না হওয়া সত্ত্বেও? শুভেন্দুবাবুর যুক্তি: উষাদেবী নিজেই জানান, তিনি গর্ভবতী। তাঁর সঙ্গে আনা কাগজপত্রে দেখা যায়, গর্ভবতী অবস্থায় সাধারণত যে সব ওষুধ দেওয়া হয় তিনি সেগুলি খাচ্ছিলেন। সে কারণেই তাঁদের সন্দেহ হয়নি।
সাড়ে সাত মাসের কোনও অন্তঃসত্ত্বার পেটে হাত রেখেই কিন্তু যে কোনও চিকিৎসকের শিশুর অস্তিত্ব টের পাওয়ার কথা। সেটুকুও শুভেন্দুবাবু করেননি কেন? সুপার কাজল মণ্ডল জানান, তাঁদের হাসপাতালের মাত্র চার জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। দিনে এক-এক জনকে ১২ থেকে ১৪টা অস্ত্রোপচার করতে হয়। সুপারের কথায়, “এই অবস্থায় প্রসূতিকে ভাল করে পরীক্ষা করা অসম্ভব। ডাক্তারদের পাগলের মতো অবস্থা!” বুধবারের ঘটনা নিয়ে নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল সুপার এবং উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা (১)-সহ চার জনের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তাদের রিপোর্টের উপরেই নির্ভর করছে শুভেন্দুবাবুর ভবিষ্যৎ। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এলেও সারা দিন নিজের ঘরেই বসে ছিলেন শুভেন্দুবাবু। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি তাঁর বক্তব্য, “রাতে এই হাসপাতালে আল্ট্রাসোনোগ্রাফির ব্যবস্থা নেই। সে ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের জন্য পর দিন দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। এর মধ্যে প্রসূতির অবস্থা খারাপ হলে কেউ আমাকে ছেড়ে দিত?” |
|
|
|
|
|