আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের জের
তড়িঘড়ি এল নির্দেশ, হাসপাতাল থেকে সরছে শুয়োরের খোঁয়াড়
বশেষে কালনা মহকুমা হাসপাতালে শুয়োরের বসতির দিকে নজর পড়ল প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার এক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেলে তাঁর রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি জানিয়ে দেন, হাসপাতাল থেকে শুয়োর ও খোঁয়াড় উচ্ছেদের জন্য অভিযান শুরু হবে আগামী সোমবার।
বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকায় মহকুমা হাসপাতালে অবাধে শুয়োর চড়ে বেড়োনোর একটি ছবি প্রকাশিত হয়। এর পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সাত সকালেই মহকুমাশাসকের কাছে ফোন চলে আসে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার। হাসপাতালে যাতে আর শুয়োরের দেখা না মেলে তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন তিনি। সেই নির্দেশ মতো স্বপনকুমার মিস্ত্রি নামে এক আধিকারিককে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি। হাসপাতালে এসে শুয়োর চড়ার বেশ কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি করে নিয়ে যান তিনি। জানা গিয়েছে, স্বপনবাবু মহকুমাশাসককে এ দিন জানিয়েছেন, পঞ্চাশেরও বেশি শুয়োর রয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। এ ক্ষতিকর পার্থেনিয়ামে ভরে উঠেছে গোটা চত্বর।
মহকুমাশাসকের নির্দেশ মতো হাসপাতালের সুপার অভিরূপ মণ্ডল এ দিন জানিয়ে দেন, প্রথমে শুয়োর উচ্ছেদ নিয়ে একটি নোটিস দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চলবে মাইকে ঘোষণাও। তার পরে সোমবার থেকেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হবে অভিযান।
শুয়োরের খোঁয়াড়।
কালনা হাসপাতালে শুয়োরের রমরমা অবশ্য এই দু’দিনের কথা নয়। বহু বছর ধরেই শুয়োরের দল হাসপাতাল চত্বরে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায়। হাসপাতাল ভবনের পিছন দিকে রয়েছে নোংরা ফেলার জায়গা। ওই জায়গাটি মূলত তাদের আঁতুড়ঘর। দিনের পর দিন ধরেই রোগীর আত্মীয়রা এদের অস্তিত্ব নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু শুয়োর-উচ্ছেদ করতে কোনও হেলদোল চোখে পড়েনি এত দিন। অভিযোগ, হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরাই জড়িত শুয়োর প্রতিপালনের সঙ্গে। চত্বরের মধ্যে শুয়োরের খোঁয়ার তো আছেই, আবার বাইরে থেকেও ঝাঁকে ঝাঁকে শুয়োর হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। কারণ, হাসপাতাল চত্বরে বহু জায়গাতেই পাঁচিল নেই। এই দু’দলের চাপে পড়ে রোগীর আত্মীয়দের অবস্থা বেশ কাহিল।
এক রোগীর আত্মীয় ভবানীপ্রসাদ গুহ বলেন, “শুয়োরের তাড়ায় সেদিন তো আমার হাত থেকে খাবার পড়ে গেল। হাসপাতালে এদের কে থাকতে দিল? খোঁয়াড় উচ্ছেদ করলে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাও বাড়বে।” শুয়োর তাড়ানোর অভিযানের কথা শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন আর এক রোগীর আত্মীয়। পূর্বস্থলীর ওই বাসিন্দা সুন্দরলাল হাঁসদা বললেন, “হাসপাতালের বড়বাবুরা কি এত দিন নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন? শুয়োরগুলো এমনিতেও তো চার দিকে নোংরা আর জঞ্জাল ছড়ায়।”
মহকুমাশাসকের আশ্বাস, “শুধু হাসপাতালের ভিতর থেকে শুয়োরের খোঁয়ার উচ্ছেদ করা হবে, তা নয়। বাইরে থেকে যাতে ওই চত্বরে ওরা নতুন করে আবার ঢুকতে না পারে, তাও নিশ্চিত করা হবে।”
বছরের পর বছর সযত্নে বংশ পরম্পরায় কালনা হাসপাতালে লালিত পালিত হয়েছে শুয়োরের দল। তাই প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসনের এই আচমকা ঘুম ভাঙা নিয়ে। হঠাৎ হঠাৎ হাসপাতাল পরিদর্শনে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। তাই কি তড়িঘড়ি এই ব্যবস্থা, প্রশ্ন রোগীর আত্মীয়দের।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.