ভাতা নেবেন না পুর চেয়ারম্যান
টাকাটা দেওয়া হবে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের
মাধ্যমিকে মোটামুটি ভাল ফল করলেও এক ছাত্রীর উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি। শহরের বাসিন্দা ওই ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ভর্তির ব্যবস্থার আর্জি জানাতে চেয়ারম্যানের কাছে যান মা। মাকে চেয়ারম্যানের কাছে সাহায্যের আর্জি জানাতে দেখে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন ছাত্রীটি। কিছু সাহায্য করা হলেও পুরসভায় এই কাজের জন্য কোনও তহবিল বা ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা উপলব্ধি করেন চেয়ারম্যান মোহন বসু। তখনই সিদ্ধান্ত নেন তিনি পুরসভা থেকে পাওয়া নিজের প্রাপ্য সাম্মানিক ভাতা নেবেন না। তা দুঃস্থ পড়ুয়াদের সাহায্যে ব্যবহৃত হবে। কিছু দিন পর উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বার হতেই জলপাইগুড়ির হরিজন বস্তির দুই ছাত্রের ভাল ফলের কথা জানতে পারেন। জানতে পারেন পুরনো বই জোগাড় করে কী ভাবে তারা পড়াশোনা করেছেন। সমস্ত বই খাতা কিনতে পারলে ফল আরও ভাল হত বলে চেয়ারম্যানের কাছে তাঁরা আক্ষেপও করেন। এর পর আর দেরি করেননি। গত সোমবার চেয়ারম্যান পারিষদের জরুরি বৈঠক ডেকে নিজের প্রাপ্ত ভাতা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেন। কাগজে-কলমে করে তাতে সিলমোহর দেন জলপাইগুড়ি পুর চেয়ারম্যান। প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকা ভাতা হিসাবে তিনি পেয়ে থাকে পুরসভার চেয়ারম্যান হিসাবে। সেই হিসাবে বছরে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তা থেকে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ, বৃহস্পতিবার পুরসভার মাসিক সভায়। চেয়ারম্যানের ভাতার হিসাব দেখিয়ে বছরে ষাট হাজার টাকার তহবিল গঠন করা হবে। তা থেকে প্রতি বছর পাঁচ জন ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার বন্দোবস্ত করা হবে। পুরসভার সভায় আজ সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। যে ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করা হবে তা শুধু এক বছরের জন্য নয়। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করবে পুরসভা। চেয়ারম্যান মোহনবাবুর আশা দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের জন্য গড়া তহবিলের টাকা ধীরে ধীরে বাড়বে। তহবিলে সাধারণ বাসিন্দারাও যাতে অনুদান পাঠাতে পারেন তার সংস্থানও রাখা হবে। চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘শহরের বেশ কয়েকজন দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীর আবেদন শুনে বিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম। অথচ তাদের সাহায্যের জন্য তহবিল বা ব্যবস্থা না নেই। তাই চেয়ারম্যান হিসাবে যে সাম্মানিক ভাতা পুরসভা থেকে পাই তা দিয়েই হতবিল গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মধ্যে কোনও বড় ব্যাপার নেই। শুধুমাত্র নিজের নৈতিক এবং সামাজিক দায়িত্ব পালন করছি।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কাউন্সিলর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, “চেয়ারম্যান যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে নিচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। ধরা যাক, পঞ্চম শ্রেণির কোনও ছাত্রীকে চলতি বছরে সাহায্য করা হল। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ না করা পর্যন্ত তাকে ওই সাহায্য করা হবে। প্রতি বছর নতুন পাঁচ জন করে ছাত্রছাত্রীকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.