মমতার বিরুদ্ধে ফ্রন্টের অস্ত্র ‘জরুরি অবস্থা’
মতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোকাবিলায় ৩৬ বছরের পুরনো ইন্দিরা গাঁধীর ‘জরুরি অবস্থা’কে হাতিয়ার করছে বামফ্রন্ট।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন রাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর সরকার দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। পর দিন ২৬ জুন থেকেই দেশে জরুরি অবস্থা কার্যকর হয়। এখন রাজ্যে আবার সেই ‘জরুরি অবস্থার পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে বলে ফ্রন্ট নেতাদের অভিমত। নতুন ‘প্রজন্মের’ কাছে ৩৬ বছর আগেকার সেই ‘কালো দিন’ তুলে ধরতে বামফ্রন্ট জেলায় জেলায় এ বার ২৫ এবং ২৬ জুন ‘শান্তি ও গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ পালন করবে। আলিমুদ্দিনে বৃহস্পতিবার রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠকে ওই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান। তাঁর কথায়, “তখন (জরুরি অবস্থা) ব্যক্তিগত ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা হত। ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। এখনও বিরোধীদের উপর হামলা-আক্রমণ হচ্ছে। ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে এটা জানাতে হবে।” ওই বিষয়ে কলকাতাতেও কর্মসূচি নেওয়ার ব্যাপারে কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে বিমানবাবু জানিয়েছেন।
ভোটে ফ্রন্টের ‘বিপর্যয়’ নিয়ে সিপিএম সহ শরিক দলগুলি পর্যালোচনা শুরু করেছে বলে বিমানবাবু জানিয়েছেন। পর্যালোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সমস্ত শরিক দলের পর্যালোচনা চূড়ান্ত হলেই তবে ফ্রন্টে তা নিয়ে আলোচনা হবে। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদারও জানান, তাঁরা প্রাথমিকভাবে ভোটের ফল বিশ্লেষণ করলেও বুথভিত্তিক পর্যালোচনা সম্পূর্ণ হয়নি। তবে এর মধ্যেই ফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক নেতৃত্বের পরিবর্তন চেয়ে মুখ খুলেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি সমালোচনার তির ছোড়া হয়েছে। বুদ্ধবাবু সাধারণত ফ্রন্টের বৈঠকে থাকেন না। এ দিনও বৈঠক চলাকালীন তিনি আলিমুদ্দিনে ছিলেন। তবে বৈঠকে ছিলেন না। ছিলেন তাঁর দলের বিমানবাবু, সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, মদন ঘোষ ও বিনয় কোঙাররা। বিমানবাবু অবশ্য বলেন, “নেতৃত্ব বদল নিয়ে এ দিন কোনও আলোচনা হয়নি। সময়ও ছিল না।” তবে পাশাপাশিই তিনি জানান, পরে তিনি বিষয়টি শরিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বস্তুত, ভোটে ‘বির্পযস্ত’ কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে বাম শিবির। এ দিনের বৈঠকে সেই ‘আন্দোলনের মানসিকতা’ই প্রতিফলিত হয়েছে। ভোটের পরে বিরোধী দলের দফতর থেকে শুরু করে শাখা সংগঠনের দফতরেও শাসক তৃণমূলের হামলা মোকাবিলা নিয়ে এ দিন ফ্রন্টের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, যেখানেই হামলা হবে, সেখানেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রতিবিধান চেয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। বিমানবাবু বলেন, “হামলার ঘটনা ঘটলেই জেলাশাসক,পুলিশসুপার থেকে শুরু করে এসডিপিও, বিডিও, এসডিও-স্তরে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিতে হবে।” হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রচারও অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত এ দিন ফ্রন্টের বৈঠকে নেওয়া হয়েছে।
বিধানসভার অধিবেশনেও সরকারকে ‘নাস্তানাবুদ’ করতে তৈরি হচ্ছে বিরোধী ফ্রন্ট। দীর্ঘ ৩৪ বছর শাসক হিসাবে থাকার পরে বিরোধীর ‘ভূমিকা’ কেমন হবে, তা বিধায়কদের বোঝাতে কর্মশালা হবে। বিমানবাবুর বক্তব্য, “বামফ্রন্টের ৬১ জন বিধায়কের মধ্যে ৩১ জনই নতুন। বিধানসভায় বিরোধী ভূমিকা নিয়ে অনেকেই অবহিত নন। তাই কর্মশালা হবে।” বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু জানান, আগামী ২২ তারিখ বামফ্রন্টের বিধায়কদের ‘ক্লাস’ নেবেন বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত।
Previous Story Rajya Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.