|
|
|
|
প্রদেশ সভাপতির পদে থাকার চেষ্টায় দিল্লি গেলেন মানস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আগামিকাল, শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের নতুন কংগ্রেস সভাপতির নাম ঘোষণা করতে পারে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার পর মানস ভুইয়াঁকে যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ ছাড়তে হবে, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সেই প্রেক্ষিতেই
বলা হচ্ছিল, সভাপতির দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন রাজ্যের বর্ষীযান কংগ্রেস
নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রদেশ সভাপতি পদে থেকে যেতে মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন মানসবাবু।
রাজ্যের সেচ, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী তথা বর্তমান প্রদেশ সভাপতি মানসবাবু গতকাল রাতে দিল্লি এসেছেন। তার পর দফায় দফায় দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব অহমেদ পটেল এবং এআইসিসি-র তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদের সঙ্গে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মানসবাবু আজও হাইকম্যান্ডকে একটি চিঠি লিখে জানিয়েছেন, তিনি সাংগঠনিক নেতৃত্বের দায়িত্বেই থাকতে আগ্রহী। তেমন হলে তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে পারেন। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করায় মানসবাবু বলেন, “রাজ্যের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে আমি প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচটি চিঠি পাঠাই কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে। তবে এটা ঠিকই যে, সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনই আমার প্রথম পছন্দ।” পরবর্তী প্রদেশ সভাপতি হিসাবে তাঁকে কারও নাম প্রস্তাব করতে বললে তিনি কী বললেন?
নর্থ ব্লকে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অতিরিক্ত ব্যক্তিগত সচিব প্রদ্যোৎ গুহের ঘরে বসে মানসবাবুর স্পষ্ট জবাব, “একান্তই যদি প্রদেশ সভাপতি বদলাতে হয়, তা হলে আমাদের প্রজন্ম তথা নতুন প্রজন্মের কাউকে করা উচিত।” রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “মানসবাবুর এই বক্তব্যেই স্পষ্ট যে, তিনি প্রদীপবাবুকে পরবর্তী প্রদেশ সভাপতি পদে চান না। কারণ প্রদীপবাবু বয়সে মানসবাবুদের চেয়ে বড়। সেই অর্থে, আগের প্রজন্ম।” কংগ্রেসের একাংশ জানাচ্ছে, প্রদীপবাবুকে যাতে প্রদেশ সভাপতি না-করা হয়, সে ব্যাপারে প্রণববাবুর কাছেও আর্জি জানিয়েছেন বর্তমান প্রদেশ সভাপতি।
বস্তুত, নতুন প্রদেশ সভাপতি মনোনয়নে হাইকম্যান্ডের কাছে বিকল্প ছিল সীমিত। প্রদীপবাবু ছাড়া বিবেচনার মধ্যে ছিল বহরমপুরের সাংসদ তথা মুর্শিদাবাদের জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, প্রাক্তন যুব কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্য কংগ্রেসের ছ’বারের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যোৎ গুহ এবং আলিপুয়ারদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়ের নাম। তবে আপাতত দৌড়ে এগিয়ে প্রদীপবাবুই। কারণ, হাইকম্যান্ড চাইছে, এমন একজন প্রদেশ সভাপতি থাকুন, যিনি তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলবেন। বিধানসভা ভোটে গোঁজ প্রার্থী দেওয়ায় অধীর সেদিক দিয়ে খানিকটা পিছিয়ে। আবার প্রদ্যোৎবাবু দীর্ঘদিন প্রণববাবুর অতিরিক্ত ব্যক্তিগত সচিব হিসাবে কাজ করছেন। ফলে হঠাৎ করে তাঁকে প্রদেশ সভাপতি করা সম্ভব নয়। তবে সর্বভারতীয় কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রদ্যোৎবাবুকে প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি বা কার্যকরী সভাপতির মতো পদের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। আবার অধীরকে মুর্শিদাবাদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গে মোট চার বা পাঁচটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হবে। পরিষদীয় দলনেতা পদেও নতুন মুখ আনা হবে। দেবপ্রসাদবাবু প্রদেশ সভাপতি না-হলে তাঁকে পরিষদীয় দলনেতা করা হতে পারে। ওই পদের দৌড়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদের বিধায়ক মহম্মদ শোহরাবের নামও। |
|
|
|
|
|