|
|
|
|
এক সময়ের খাসতালুকেই খুন হয় শ্যামল |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²রিষড়া |
যে কারখানা এক সময় হুব্বা শ্যামলের অপরাধ জগতের স্বর্গরাজ্য ছিল, রিষড়ার সেই জে কে স্টিলের ভিতরেই সম্ভবত খুন হতে হয় তাকে। ওই বন্ধ কারখানার ভিতরে ঝোপের মধ্য থেকে বুধবার শ্যামলের প্যান্ট এবং খুনে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছোরা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত ২ জুন দুপুরে হুগলির ‘ডন’ শ্যামলের পচাগলা নগ্ন দেহ উদ্ধার হয় গঙ্গা লাগোয়া বৈদ্যবাটি খাল থেকে। ২৯ মে রাত থেকে সে নিখোঁজ ছিল। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, ওই দিনই শ্যমলকে খুন করে দেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রমেশ মাহাতো এবং তার শাগরেদ জিতেন্দ্রকে সিংহকে জেরা করে পুলিশ এই তথ্য পেয়েছে। শ্যামলের দেহ পাওয়ার পরের দিনই রমেশ এবং জিতেন্দ্রকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আদালত তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। বুধবার রমেশ এবং জিতেন্দ্রকে নিয়ে জে কে স্টিল কারখানায় যান তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতেরা কারখানার একটি জায়গায় ঝোপের কাছে নিয়ে যায় পুলিশকে। সেখান থেকেই ওই প্যান্ট ও ছোরা উদ্ধার হয়।
কী ভাবে খুন হল দোর্দণ্ডপ্রতাপ সমাজবিরোধী হুব্বা?
পুলিশ জানায়, ঘটনার মূল চক্রী রমেশই। সে হুব্বাকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষেছিল। শ্যামলকে তা বুঝতে না দেওয়ার জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করত। ঘটনার দিন রমেশের গাড়িতে চেপেই শ্যামল জমি দেখতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে রিষড়ার দাসপাড়ায় রমেশের ফ্ল্যাটের কাছে তারা নেমে যায়। রমেশ ফ্ল্যাটে উঠে যায়। শ্যামল সেখানে রাখা বাইকে চেপে বাড়ির পথে রওনা হয়।
ততক্ষণে অবশ্য রমেশের ছক অনুসারে কিছুটা দূরে জে কে স্টিল লাগোয়া গলির মধ্যে অপেক্ষা করছিল কুখ্যাত তিন দুষ্কৃতী নেপু, চিকুয়া এবং সরলা। শ্যামল মোটর সাইকেল নিয়ে এগোতেই অন্ধকারে তারা শ্যামলের পথ আগলায়। অস্ত্র দেখিয়ে তাকে জে কে স্টিলের (এই বন্ধ কারকানার যাবতীয় মালপত্র উধাও করেছিল শ্যামল) ভিতরে ঢুকিয়ে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে রমেশও সেখানে এসে পৌঁছয়। এর পরেই ‘অপারেশন’ হয়। গলা কেটে খুন করা হয় শ্যামলকে। আড়াআড়ি ভাবে পেট চিরে দেওয়া হয়। মাঝরাতে গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। শ্যামলের মোটর সাইকেলটি অবশ্য পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।
পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার পরে বৃহস্পতিবার রমেশ এবং জিতেন্দ্রকে ফের শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতের এসিজেএম রতনকুমার দাসের এজলাসে তোলা হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|