ছুটির হাওয়ায় ইতালিতে সনিয়া, লন্ডনে জেটলি
রামদেব আর আন্না হাজারের অনশন যে সরকারে কোনও সঙ্কট ডেকে আনছে না, তার সব চেয়ে বড় প্রমাণ, সাত দিনের জন্য ছুটি কাটাতে আজ সনিয়া গাঁধীর বাপের বাড়ি যাওয়া। রামদেব থেকে ডিএমকে একের পর এক বিষয় নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের হাজারো উদ্বেগের মধ্যেই দলনেত্রীর ইউরোপ সফর বুঝিয়ে দিয়েছে, আর যাই হোক, এখনই মনমোহন সিংহের সরকারের সামনে বড় কোনও বিপদ নেই।
১০ জনপথ সূত্র বলছে, সনিয়া প্রথমে দুবাই যাচ্ছেন। সেখান থেকে ইতালি। প্রিয়ঙ্কা, রবার্ট এবং নাতি-নাতনিরা শীঘ্রই তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন। রাহুল গাঁধীরও যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রত্যেক বছর গ্রীষ্মকালে সনিয়া গাঁধী সপরিবারে ছুটি কাটান বিশ্বের নানা প্রান্তে। তাঁর মা পাওলো মাইনো ডিসেম্বরে বড় দিনের সময় নিয়ম করে ভারতে আসেন। কিন্তু এই সময়টায় তিনি চান, মেয়ে তাঁর কাছে আসুক।
বিজেপির শীর্ষ নেতা অরুণ জেটলি এ বছরও ছুটি কাটাতে প্রায় দশ দিনের জন্য লন্ডন এবং আমেরিকা যাচ্ছেন। তবে তাঁর সফরে রথ দেখার সঙ্গে কলাবেচাও আছে। তিনি প্রথমে লন্ডনে যাবেন। সেখান থেকে ওয়াশিংটনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’-এর আমন্ত্রণে বক্তৃতা দেবেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে অরুণের বৈঠকও হবে। আমেরিকা সফর সেরে অরুণ ফিরে আসবেন লন্ডনে। সেখানে ছুটি শেষ করে দেশে ফিরবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বলেরও লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রামদেবের অনশনের জন্য তাঁকে সেই সফর বাতিল করে দিতে হয়। এখন আর তাঁর বিদেশ সফরে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। কপিলের কথায়, “নো চান্স।” রামদেবকে নিয়ে কোনও সমস্যা না থাকলেও এটা স্পষ্ট যে, সরকার ও দলের মধ্যে মতপার্থক্য এখনও যথেষ্ট। এই পরিস্থিতিতে ঐক্য রচনার চেষ্টায় মন দেওয়াটা সিব্বলের মতো নেতার জন্য অনেক বেশি জরুরি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে অবশ্য সবচেয়ে বেশি বিদেশে যান আনন্দ শর্মা। একে তো তিনি বাণিজ্য মন্ত্রী। কাজের জন্য তাঁকে বিদেশ যেতেই হয়। তার উপরে তাঁর স্ত্রী লন্ডনে থাকেন। তবে কংগ্রেসের মন্ত্রীদের মধ্যে ছুটি নেওয়ার কোনও বাতিকই নেই যার, তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রণববাবু বিদেশে যান নিতান্তই কাজে। এবং একান্তই বাধ্য হয়ে। এ মাসের শেষে তাঁর ওয়াশিংটন যাওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক আর্থিক সম্মেলনে যোগ দিতে। প্রণববাবু বিদেশে গেলেও সব সময় চেষ্টা করেন, যাতে কম দিনে সফর শেষ করা যায়। প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে অটলবিহারী বাজপেয়ী বিদেশ সফরে যেতে খুব ভালবাসতেন। এক টানা দশ দিন আমেরিকায় থাকার দৃষ্টান্তও তাঁর ছিল। শনি-রবিবারটা বিদেশে কাটাতে চাইতেন তিনি। মনমোহন সিংহ কিন্তু এ ব্যাপারে একেবারে অন্য রকম। মরিশাসে বৈঠকে গিয়েও তিনি সমুদ্র দেখার উৎসাহ পাননি!
সনিয়া অবশ্য ছুটি কাটাতে ভালবাসেন। এ ব্যাপারে তাঁর ইউরোপীয় মানসিকতা অটুট। দেশের ভিতর ছুটি কাটানোটা তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন। দিল্লিতেও ১০ জনপথে কার্যত নিরাপত্তার ঘেরাটোপেই থাকেন। তিনি কোথায় যাবেন এবং যাবেন না, সবটাই স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে। এ বারও সনিয়ার সফরের আগে নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু কর্মী সফরস্থল পরিদর্শন করে এসেছেন। রাহুলকে অবশ্য দেশের নানা অংশে ছুটি কাটাতে দেখা যায়।
রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্য বেড়াতে গিয়েও টেনশন থেকেই যায়। লালকৃষ্ণ আডবাণীর জিন্না সংক্রান্ত বিবৃতি নিয়ে যখন হইচই শুরু হয় তখন অরুণ জেটলি বিদেশে ছিলেন। জিন্না-বিতর্কের জন্য আচমকা ছুটি শেষ করে তাঁকে দেশে ফিরে আসতে হয়। সনিয়া বিদেশে গেলেও দলের রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।
কংগ্রেস নেতারা আপতত নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছেন, দলনেত্রী যখন চলে গেলেন, তাঁর মানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদল কিংবা বড় মাপের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত এখনই হচ্ছে না। সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হবে মধ্য জুলাইয়ে। তার আগে সকলেই এখন একটু হাঁফ ছাড়লেন।
Previous Story Desh Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.