|
|
|
|
বিধাননগর ও দমদম |
কলকাতা কত জল দিচ্ছে, মাপবে মিটার |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
কলকাতা পুরসভা বলছে, যথেষ্ট পরিমাণ জল পাঠানো হচ্ছে বিধাননগরে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, জলসঙ্কটে ভুগছে বিধাননগর। কথা এবং বাস্তবের মধ্যে এই ব্যবধান ঘোচাতে এ বার উপনগরীতে জল মাপার মিটার বসানোর কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। একই ভাবে জল মাপার মিটার বসবে দক্ষিণ দমদম পুর-এলাকাতেও। ওই মিটার দিয়ে কলকাতা পুরসভার মাধ্যমে তাদের এলাকায় আসা টালা-পলতার জলের পরিমাণ জানা যাবে। এর ফলে জলসঙ্কট তৈরি হলে সেই মতো জলের সরবরাহ বাড়ানো যায় কি না, তা বোঝা যাবে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
প্রতি বছরের মতো এ বার গ্রীষ্মেও বিধাননগর ও দক্ষিণ দমদম এলাকায় জল সরবরাহ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। পুরসভা সূত্রের খবর, বিধাননগরে প্রতিদিন অন্তত ৯০ লক্ষ গ্যালন জল দরকার হয়। এর মধ্যে কলকাতা পুরসভার মাধ্যমে ৫০ থেকে ৫৫ লক্ষ গ্যালন টালা-পলতার জল আসার কথা। বাকি ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ গ্যালন জল মাটি থেকে তোলা হয়। সেই মিশ্রিত জলই সরবরাহ করা হয় উপনগরীর বাসিন্দাদের বাড়িতে।
বিধাননগরের পুর-কর্তৃপক্ষ কলকাতা পুরসভার কাছে অতিরিক্ত জল সরবরাহের দাবি জানিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে এক কোটি গ্যালন জল সরবরাহের পরিকল্পনাও হয়েছিল। কিন্তু হিসেব মতো জল পাওয়া যাচ্ছে না বলেই বিধাননগর ও দমদম এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ।
পুরমন্ত্রী এ দিন বলেন, “বিধাননগর, দমদম এবং দক্ষিণ দমদম বলছে জল আসছে না। অথচ কলকাতা পুরসভা বলছে, পরিমাণ মতো জল দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঠিক কত জল আসছে, তা জানতে এ বার জলের মিটার বসাবে কলকাতা পুরসভা। ফেব্রুয়ারির পর জলের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।”
পুরমন্ত্রী আরও জানান, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের জল দমদম এবং দক্ষিণ দমদমে ঢোকা শুরু হলেই ওই এলাকার বরাদ্দ টালা-পলতার জল বিধাননগরের জন্য বরাদ্দ করা হবে। তবে তার জন্য সময় লাগবে।
এ দিন বিধাননগরের নগরায়ন ভবন এবং উন্নয়ন ভবনে কেমডিএ-র সহ-সভাপতি তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর সঙ্গে জল নিয়ে আলোচনা করেন পুরমন্ত্রী। মেয়র পরে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।” উল্লেখ্য, কেএমডিএ র সভাপতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, “মূল সমস্যাটা জলের হিসেব নিয়ে। হিসেব জানা গেলেই জলের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমি আজও চিঠি দিয়েছি মেয়র এবং পুরমন্ত্রীকে। মেয়র জল সমস্যার বিষয়টি স্বীকারও করে নিয়েছেন। বিধাননগর এবং দমদম, দু’জায়গাতেই সোমবার মিটার বসবে। জলের মিটার বসানো হবে বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্ক এবং লেকটাউনের দু’টি জলাধারে। ওই দু’টি জলাধারেই কলকাতা থেকে টালা-পলতার জল প্রথমে আসে।”
করুণাময়ী, জিডি, সিডি, বিএ, সিএ, এবি-এসি, বিজে, সিজে, কেবি-কেসি-সহ সল্টলেকের তিনটি সেক্টরের বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দাদের অভিযোগ, হয় জল আসছে না, নয়তো জল আসছে সরু সুতোর মতো। আর তা-ও খুব অল্প সময়ের জন্য। এ সবের পাশাপাশি পুরমন্ত্রী জানান, বিধাননগরে দীর্ঘদিন ধরে কর আদায় যে হচ্ছে না, তা নিয়েও রাজ্য সরকার ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে। পুরমন্ত্রী বলেন, “নাগরিকেরা যাতে কর দিতে পারেন, তার জন্য প্রয়োজনে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চাওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|