আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের জের
ভাতারের হাসপাতালে আচমকা জেলাশাসক
দেরিতে হলেও ঘুম ভাঙল প্রশাসনের।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ে মঙ্গলবার ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গেলেন বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা। দ্রুত জঞ্জাল সাফাই করতে বললেন, ভর্ৎসনা করলেন চিকিৎসকদের। জেলাশাসকের কথায়, “আনন্দবাজারে এই হাসপাতালের বেহাল অবস্থার কথা পড়ে আমি বিচলিত বোধ করেছি। অবস্থা যে এতটা খারাপ, সত্যিই তা জানতাম না। বলে এসেছি, অবিলম্বে সুস্থ পরিবেশ ফেরাতে হবে।”
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল সোমবার। এ দিন ভাতারের বিডিও অমর্ত্য চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে জেলাশাসক জানতে চান, প্রসূতিরা কী ধরনের পরিষেবা পাচ্ছেন। কয়েক জন গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, প্রসূতিদের কখনও কখনও ফিরিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল। তাঁরা বাধ্য হয়ে গ্রামের ধাইদের শরণাপন্ন হচ্ছেন। এ কথা শুনেই উপস্থিত চিকিৎসকদের প্রতি জেলাশাসকের কটাক্ষ, “আপনাদের উচিত ধাইদের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া। জটিল প্রসবের কথা বলে যে প্রসূতিকে আপনারা ফিরিয়ে দিচ্ছেন বা অন্য হাসপাতালে যেতে বলছেন, তাঁর প্রসব ধাইরা করিয়ে দিচ্ছেন কী করে!” হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাতার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি বলেন, “আপনার যা যা দরকার, তলিকা করে দিন। লেবার রুম, পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে যা করার করতে হবে জানান। রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বলা বন্ধ করুন। যা যা ওষুধ দরকার, তার তালিকা তৈরি করুন।”
নিজস্ব চিত্র।
দুপুরে জেলাশাসক প্রায় দু’ঘন্টা ধরে গোটা হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। সারা হাসপাতাল জুড়ে জমে থাকা আবর্জনার স্তূপ, আগাছার জঙ্গল দেখে সাফাইয়ের নির্দেশ দেন বিডিও-কে। যান প্রতিটি ওয়ার্ডে। রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। দেখেন, পানীয় জলের যথেষ্ট সরবরাহ নেই। নেই সাপে কাটার ওষুধ ‘অ্যান্টি-ভেনম সিরাম’ও। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেও বসেন। জেলাশাসক জানান, জুনের মধ্যে হাসপাতালের চত্বরে জমে থাকা জঞ্জাল ও আগাছা সরানো, নিকাশি নালাগুলি পাকা করার জন্য তিনি বিডিও-কে দায়িত্ব দিয়েছেন। এর জন্য তাঁকে চার লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে তাঁকে জানানো হয়েছে, সেখানে লেবার রুমের ব্যবস্থা যথেষ্ট ভাল। অনেক যন্ত্রপাতিও রয়েছে। প্রায় ১৫-২০ জন সেবিকা রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রসবের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে জেলাশাসক বলেন, “ওখানে আপাতত তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন। দুর্গাপুর থেকে আরও এক চিকিৎককে পাঠানো হবে। প্রসবের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য হাসপাতালকে আরও এক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।”
জেলাশাসককে জানানো হয়, তিন মাস ধরে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ থাকায় নারী ও পুরুষদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের অস্ত্রোপচার বন্ধ। টেকনিশিয়ান থাকা সত্ত্বেও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। অবিলম্বে অপারেশন থিয়েটার চালুর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপালশ ল্যাব চালুর ব্যাপারেও প্রস্তাব চেয়েছেন জেলাশাসক। হাসপাতালের দু’টি ফাঁকা পড়ে থাকা গুদামে আপাতত বহির্বিভাগ চালুর নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত শনিবারই ওই হাসপাতালের পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক বনমালি হাজরা। এ দিন তিনি বলেন, “জেলাশাসক মনোযোগ দিয়ে আমাদের বিভিন্ন দাবি শুনেছেন। বলেছেন, সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। আরও বলেছেন, হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য অর্থের অভাব হবে না।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.