প্রসঙ্গ পাহাড়-সমস্যার ‘সমাধান’
কেউ বলছেন, চুক্তিপত্র দেখে নিই, কেউ হুমকি দিচ্ছেন আন্দোলনের
কেউ চুক্তিপত্র ভাল করে দেখে বুঝেশুনে এগোতে চাইছেন। কেউ আবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যেমন বামেরা চুক্তিপত্র দেখার পরেই সবিস্তার মন্তব্য করতে চান। একই ভাবে সুবাস ঘিসিংও ক’দিন পরিস্থিতি দেখার পরে মুখ খুলতে চান। পক্ষান্তরে, আদিবাসী বিকাশ পরিষদ তো রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকে বলেছেন, “সরকার কী ভাবে পাহাড় সমস্যা মেটাবে, তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। সীমানা ঠিক করার জন্য কমিটি হচ্ছে শুনেছি। আমরা বলতে চাই, ওতে তরাই-ডুয়ার্স কোনও ভাবে থাকবে না। তা হলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না। জোরদার আন্দোলন হবে।”
মঙ্গলবার দুপুরে মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোর্চা নেতৃত্বের বৈঠকের পরে সরকারের তরফে পাহাড় সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এর পরেই দার্জিলিং পাহাড় এবং সমতল জুড়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। পাহাড়ের মোর্চা বিরোধী দলগুলি বিমল গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র অভিযোগ তুলেছে। সিপিআরএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অরুণ ঘাটানি বলেন, “মোর্চা পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ওঁরা ভোটে লড়েছিল। এমনকী, প্রয়োজনে রাজ্যের জন্য বিধায়কেরা ইস্তফা দেবেন বলে গুরুঙ্গ ঘোষণা করেন। অথচ কলকাতা গিয়ে ‘গোর্খাল্যান্ডের’ নামও মুখে আনছেন না। আমরা মোর্চার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।”
গোর্খা লিগও চুক্তিপত্রের বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে পড়েছে। দলের এক নেতা জানান, গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখে যে দলের উত্থান, তারা কী ভাবে এমন চুক্তি করতে পারেন, সেটা স্পষ্ট হয়নি। গোর্খা লিগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহন শর্মা বলেন, “আমরা শীঘ্রই বৈঠক ডেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব। তার পরেই কর্মসূচি চূড়ান্ত করব।”
গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লিতে মোর্চার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে যিনি অংশ নিয়েছিলেন, সেই প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও চুক্তিপত্র ভাল করে দেখে বিশদে মন্তব্য করতে চান। আপাতত তাঁর বক্তব্য, “অন্তর্বর্তী স্বশাসনের ব্যাপারে মোর্চা তো আগেও রাজি হয়েছিল। পাহাড়ে গিয়েই সুর বদলে ফেলে। যাই হোক, পাহাড় সমস্যার দ্রুত সমাধান হলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হব। কিন্তু নতুন স্বশাসিত সংস্থার সীমানা, পার্বত্য পরিষদের অবস্থা, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে বক্তব্য ছাড়াও চুক্তির বিস্তারিত বিষয় এখনও স্পষ্ট নয়। আমরা তা পুরোপুরি খতিয়ে দেখেই মন্তব্য করতে চাই।” একই ভাবে সিপিআই-এর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরীর বক্তব্য, “ভোটের আগে রাজ্য, কেন্দ্রের সঙ্গে মোর্চার কথাবার্তা যে দিকে এগোচ্ছিল, তাই হয়েছে বলে আপাতত মনে হচ্ছে। এতো তা হলে নতুন কিছু নয়!” যাঁর বিরোধিতা করে বিমল গুরুঙ্গের উত্থান, সেই সুবাস ঘিসিং এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জলপাইগুড়িতে অরবিন্দনগরে ভাড়াবাড়িতে থাকেন ঘিসিং। দোতলা বাড়ির বড় ঘরে টিভি পর্দাতেই দুপুর থেকে মনোনিবেশ করেছিলেন জিএনএলএফ সুপ্রিমো। গোটা পাহাড়, তরাই থেকে বহু অনুগামী, কর্মী সমর্থকদের টেলিফোনও এসেছে তাঁর কাছে। তবে তিনি কোনও টেলিফোন ধরেননি। শুধুমাত্র পাহাড়ের কয়েক জন জিএনএলএফ নেতাকে টেলিফোন করে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এক বিশ্বস্ত সঙ্গীর মাধ্যমে এ দিন ঘিসিং জানিয়েছেন, সরকার ও মোর্চার মধ্যে চুক্তিপত্র খতিয়ে দেখার পরেই দ্রুত তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে যা বলার বলবেন। অন্য দিন বিকেলের পরে বাড়ির ছাদে ও বারান্দায় সময় কাটালেও এ দিন তিনি ঘরের বাইরে আসেননি।
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.