|
|
|
|
দলে অনুশাসন জারির রূপরেখা বাঁধল তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²কলকাতা |
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে সরকারের সঙ্গে দলের ‘সমন্বয়’ রক্ষার পাশাপাশি দলকে আরও ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ করার জন্য কঠোর অনুশাসন জারি করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, কলকাতার দলীয় বিধায়ক ও পুর কাউন্সিলদের নিয়ে মঙ্গলবার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তৃণমূল নেতৃত্ব এই ‘বার্তা’ই দেন। এক শীর্ষ নেতার কথায়, “নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষের সঙ্গে বিনয়ী ও ভদ্র ব্যবহার করতে হবে। কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। প্রশাসনের মাধ্যমেই দুর্নীতি দূর করতে হবে। আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া চলবে না। দলনেত্রীর সেই নির্দেশই আমাদের নেতৃত্ব এ দিনের বৈঠকে ব্যাখ্যা করেছেন।”
৩৪ বছরের সিপিএমের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরে তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে ঘিরে মানুষের যে ‘আশা-আকাঙ্খা’ তৈরি হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে দলের ‘ভাবমূর্তি’ কোনও পরিস্থিতিতে ‘কালিমালিপ্ত’ যেন না-হয়, তার জন্য কলকাতার জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। তৃণমূল অন্দরের খবর, বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীদের কাছে স্পষ্ট কিছু ‘নির্দেশ’ মুকুলবাবু দিয়েছেন।
দল ক্ষমতায় আছে বলে প্রশাসনের কাজে দলের কোনও নেতা বা কর্মীর হস্তক্ষেপ না-করার জন্য যেমন কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তেমনই যত্রতত্র রাস্তার ফুটপাত বা কারও জমি দখল করে দলীয় দফতর খুলে বসা চলবে না বলেও জানানো হয়েছে। বৈঠকে কোনও কোনও বক্তা প্রশ্ন তোলেন, দখল করা জমি বা রাস্তায় বা ফুটপাতে সিপিএম বা বামফ্রন্টের শরিক দলের কোথাও কোথাও কার্যালয় রয়েছে। সেগুলির কী ব্যবস্থা হবে? তৃণমূল নেতৃত্ব পরিষ্কার জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ভার প্রশাসনের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। মুকুলবাবু ছাড়াও এ দিনের বৈঠকে তৃণমূলের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ (ববি) হাকিম, সাধন পাণ্ডে, মণীশ গুপ্ত, জাভেদ খান ছাড়াও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন লাউডন স্ট্রিটের একটি বাড়িতে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী সুব্রত বক্সী। বৈঠকে নেতারা জানিয়ে দেন, শৃঙ্খলারক্ষার প্রশ্নে কোনও ‘আপস’ করা হবে না। দলীয় এক সূত্রের খবর, সিপিএম বা অন্য কোনও দল থেকে তৃণমূলে যোগদানের বিষয়েও ‘কড়াকড়ি’ করা হবে বলে নেতৃত্ব জানিয়েছেন। তৃণমূলে কেউ যোগ দিতে চাইলে তা দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে অবশ্যই জানাতে হবে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। এই নিয়ম কেউ ভাঙলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও ‘হুঁশিয়ারি’ দেওয়া হয়েছে।
এ বার ব্রিগেডে সমাবেশ করে ২১ জুলাই দলের ‘শহিদ দিবস’ পালিত হবে। তা নিয়ে প্রচারের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। বলা হয়েছে, জোর করে কোনও বাড়ি বা সরকারি সম্পত্তির দেওয়ালে প্রচার-লিখন চলবে না। শহরের বাসিন্দাদের ‘বিরক্ত বা অসুবিধা’ করে প্রচার করা যাবে না। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবেশে যোগ দিতে যাঁরা আসবেন, তাঁদের থাকা-খাওয়া ও রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করতে কাউন্সিলরদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। |
|
|
 |
|
|