|
|
|
|
ছাত্রের দেহ নিয়ে বিক্ষোভ বসিরহাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² বসিরহাট |
দু’দিন আগে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। দু’দিন পরে মনোজিত রায়ের দেহ ফিরল কফিনে। ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁর পরিবার ও গ্রামের লোকজন। এই দিন মনোজিতের কফিনবন্দি দেহ রাস্তায় আটকে তাঁরা ক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বেঁকি বাজারে ওই অবরোধের জেরে টাকি সড়কে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। বসিরহাট থানার আইসি হবিবুর রহমান জনতাকে শান্ত করে অবরোধ সরান।
গত শনিবার রাতে জলপাইগুড়ির কলেজে হস্টেলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মনোজিৎ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই রাতেই ট্রেনে চেপে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই রাতেই হস্টেল থেকে ফোন করে তাঁর মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। এই খবরেই স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, “কলেজ শেষ। চাকরিও পেয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফেরার দিন এমনকী হল যে ছেলেটিকে মরতে হল?”
বিক্ষোভকারীদের তরফে পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ওই ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর উচ্চপর্যায়ের তদন্তর দাবি জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ এবং হস্টেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার লিখিত দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার করতে গিয়ে কার্যত সর্বস্ব খোয়ানো পরিবারের এক জনের চাকরি ও আর্থিক সাহায্যের দাবি জানান তাঁরা। এ দিন দুপুরে কফিন বসিরহাটে পৌঁছাতেই কান্নায়, ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। গাড়ি থেকে নামিয়ে কফিন রাখা হয় রাস্তার মাঝে বেঞ্চে। ছাত্রের মৃত্যুর জন্য দায়ি চক্রান্তকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে শুরু হয় অবরোধ-বিক্ষোভ। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামে। তা দেখে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা অঞ্জলিদেবী ও বোন মৌমিতা। একই অবস্থা মধুসূদনবাবুর। তিনি বলেন, “ছেলেটা বলেছিল জিনিসপত্র আনার জন্য শিয়ালদহ যেতে। আর দু’মাস পরেই চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু সঙ্গীরা ওকে বাঁচতে দিল না।”
স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান আব্দুস সাত্তার বলেন, “বাড়ি বন্ধক রেখে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পাঠিয়েছিলেন মধুসূদনবাবু। চাকরি পেয়ে ছেলে সংসারের হাল ধরবে ভেবেছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুতে গোটা পরিবার পথে বসেছে।” দেহ আনতে শিলিগুড়ি যান বসিরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রবি আবদুল্লা। তিনি বলেন, “ঘটনার পরে কলেজের অধ্যক্ষ বা হস্টেল কর্তৃপক্ষ দেখা করার সৌজন্য পর্যন্ত দেখায়নি। হস্টেলে গিয়ে দেখেছি মদের বোতল ও মাদকে ছয়লাপ।” |
|
|
 |
|
|