|
|
|
|
ফের মিলল অস্ত্র |
হাড়গোড়-কাণ্ডে সিআইডি তদন্ত |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
এক দফা নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছিল মামলার। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে অভিযুক্তেরা খালাস পেয়েও গিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের দশক-পুরোনো এমন দু’-দু’টি মামলার পুনর্তদন্ত শুরু হতেই আর এক দফা বিড়ম্বনায় সিপিএম।
ছোট আঙারিয়া-কাণ্ডে ১০ বছর ধরে ‘ফেরার’ এক অভিযুক্ত--সিপিএম কর্মী দিল মহম্মদকে নিজেদের হেফাজতে পেয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। অন্য দিকে, সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের আদিবাড়ির গ্রামের কাছ থেকে হাড়গোড় উদ্ধারের পরে ৯ বছর আগে কেশপুরের এক ‘গণহত্যা’ মামলারও ফের তদন্ত শুরু করল সিআইডি। শনিবার গড়বেতা-৩ ব্লকের উড়াসাই পঞ্চায়েতের বেনাচাপড়ায় সুশান্তবাবুর বাড়ির কিলোমিটার খানেক দূরের দাসেরবাঁধ থেকে উদ্ধার হয়েছিল বেশ কিছু হাড়গোড়। সেই হাড়গোড় ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর কেশপুরের পিয়াশালায় সিপিএমের হামলায় ‘নিহত’ ৭ তৃণমূল কর্মীর বলে দাবি ওঠার পরেই তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি। উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় শনাক্তকরণে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিবিআইয়ের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির সাহায্য নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
২০০২ সালেই কিন্তু পিয়াশালার ঘটনায় ২০ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কেশপুর থানায় (কেস নং ৬১/০২)। তৃণমূলের তরফে যে ৭ জন দলীয় কর্মী নিহত বলে দাবি করা হয়েছিল, উদ্ধার হয়েছিল তাঁদের মধ্যে দু’জনের দেহও। অন্য ৫ জনের খোঁজ মেলেনি। তার পরেও কারও সাজা হয়নি। সাক্ষ্য-প্রমাণ নাকি ‘পাওয়াই যায়নি’। ‘নিষ্পত্তি’ হয়ে গিয়েছিল মামলার। তৃণমূলের অভিযোগ, সে-সময়ের শাসকদল সিপিএমের প্রতি পক্ষপাতের কারণেই পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করেনি। মামলা তাই ভেস্তে গিয়েছিল। হাড়গোড় উদ্ধারের পরে নতুন করে কোমর বেঁধেছেন কেশপুরের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। পিয়াশালায় ‘নিহত’ বলে দাবি অজয় আচার্যের ছেলে শ্যামল সোমবারই কেশপুরের আনন্দপুর থানায় নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগেরই তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। এ বার অভিযুক্তের সংখ্যা বেড়ে ৪০ হয়েছে। সুশান্ত ঘোষ, কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক তরুণ রায়, সিপিএমের কেশপুর জোনাল সদস্য এন্তাজ আলিদের মতো দাপুটে নেতাদের নাম রয়েছে এ বারের অভিযোগে। আগে কেন এই নেতাদের নামে অভিযোগ করা হয়নি? তৃণমূলের ব্যাখ্যা, সেই সময়ে পুলিশ নাম-কা-ওয়াস্তে অভিযোগ নিয়েছিল। সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্যের দাবি, ‘সবই তৃণমূলের সাজানো।’ দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ দিকে মঙ্গলবার ফের গড়বেতার গিলাবনি থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। বংশী সাঁত নামে স্থানীয় এক সিপিএম কর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা পুলিশকে জানান। পুলিশ মাটির উপর থেকেই উদ্ধার করে হাড়গোড়। ক’মাস আগে সেখানে একটি দেহ দাহ করা হয় বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। বংশীকে আটক করা হয়েছে। জেলায় জেলায় অস্ত্র-উদ্ধারও অব্যাহত। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার জাগলদ্বীপ, গোবিন্দপুর এবং পাটরাই এলাকা থেকে সব মিলিয়ে দু’টি মাস্কেট, তিনটি ওয়ান-শটার, একটি হাতকামান, একটি পাইপগান, কিছু কার্তুজ উদ্ধার হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুর থানা এলাকার মথালিবাড় গ্রামে এক সিপিএম কর্মীর বাড়ির পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার হয় বোমা-ভর্তি ড্রাম, বেশ কিছু কার্তুজ। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর বালিয়াডাঙা গ্রামে উদ্ধার হয় ৪৭টি বোমা, ৩৯ রাউন্ড গুলি, ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৭টি বল্লম। হুগলির খানাকুলের শাবলসিংহপুরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়েছে। জখম সিপিএমের খানাকুল লোকাল কমিটির সদস্য প্রভাস ভুক্ত। তিনি কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি। তৃণমূলের দাবি, তাদের এক জখম কর্মী ভর্তি আরামবাগ হাসপাতালে। |
|
|
 |
|
|