|
|
|
|
বিলিই হয়নি খরা-ত্রাণের চাল |
সুমন ঘোষ ² মেদিনীপুর |
গত বছর অনাবৃষ্টিতে রাজ্যের খরা-কবলিত ১১টি জেলার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন চাল। বিপিএল তালিকাভুক্ত গরিব মানুষদের বিনা পয়সায় ওই চাল দেওয়ার কথা। কিন্তু এক বছর পরেও এক কেজি চালও বিলি হয়নি!
খরা কবলিত ওই ১১ জেলার মধ্যে রয়েছে গরিব এবং আদিবাসী-প্রধান পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়াও। যে তিন জেলার জঙ্গলমহলের অধিকাংশই বিপিএল তালিভুক্ত। পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি-পিছু ১২ কেজি এবং অ-প্রাপ্তবয়স্কদের ৬ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই ত্রাণের চাল আজও পৌঁছয়নি সম্ভাব্য প্রাপকদের কাছে।
২০১০-এ পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। জমির ফসল জমিতেই নষ্ট হয়। পরিদর্শন শেষে রাজ্যের ১১টি জেলাকে ‘খরা-কবলিত’ বলে ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হুগলি, বীরভূম, নদিয়া ও বর্ধমান--এই ১১টি জেলার বিপিএল তালিকাভুক্তদের বিনা পয়সায় চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। চাল দেবে কেন্দ্র আর বণ্টনের দায়িত্ব রাজ্যেরএই ব্যবস্থা হয়। রাজ্য সরকার আবার সমবায় সংস্থা কনফেড-এর জন্য ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৪৯ মেট্রিক টন ও ইসিএসসি-র জন্য ১ লক্ষ ২ মেট্রিক টন চাল বিলির লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে। কিন্তু কনফেডে-এর কাছে সরকারি নির্দেশ এসে পৌঁছয় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ইসিএসসি-র কাছে ৪ মার্চ। অর্থাৎ নির্দেশ পৌঁছতেই প্রায় বছর পার হয়ে যায়। নির্দেশের পরেও আরও ৩ মাস গড়িয়ে গিয়েছে। এখনও গরিব মানুষ এক দানাও চাল পাননি। আদৌ পাবেন কি না, তা নিয়েই সংশয়। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, এর পর ত্রাণের চালের কথা লোকে ভুলেই যাবে। আর তার পর কি চোরা-পথে ত্রাণের চাল বিক্রি হয়ে যাবে? শেষ পর্যন্ত সেই বঞ্চিতই থেকে যাবেন গরিব মানুষ?
সরকারি হিসাব বলছে, জঙ্গলমহলের তিন জেলা--পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৩৭ হাজার ২৪৫ মেট্রিক টন চাল, বাঁকুড়ার জন্য ১৪ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন, পুরুলিয়ার জন্য ১৮ হাজার ১৭৬ মেট্রিক টন। বরাদ্দই কি সার, বিলি হবে আর কবে? এই নিয়ে আমলারাও সদুত্তর দিতে পারছিলেন না। সোমবার জঙ্গলমহলে সফরে এসে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে সম্ভাব্য প্রাপকদের হাতে ত্রাণের চাল তুলে দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রীর নির্দেশই এখন ভরসা। |
|
|
 |
|
|