|
|
|
|
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ |
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে টাস্ক ফোর্স হাওড়ায় |
দেবাশিস দাশ ²কলকাতা |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হাওড়ায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দ্রুতগতিতে তদন্তের জন্য একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি করল হাওড়া পুলিশ। জেলার অপরাধ জগৎ এবং অপরাধীদের সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞ ২০ জনের এই দলটিতে নেওয়া হয়েছে জেলার কয়েক জন পদস্থ পুলিশ অফিসার-সহ বিভিন্ন থানার দক্ষ পুলিশকর্মীদের। যাঁরা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা সদর থেকে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কাজ করবেন।
নির্বাচনের দিন থেকে হাওড়া শহরাঞ্চলে একের পর এক খুনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী গত ২ জুন রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়কে হাওড়ায় পাঠিয়েছিলেন। ওই দিন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ট্রাফিক ব্যবস্থার পাশাপাশি হাওড়ায় ক্রমবর্ধমান অপরাধ নিয়ে জেলা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিজি। বৈঠকে নপরাজিতবাবু জানান, অবিলম্বে জেলার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করে দলমত নির্বিশেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরে চার দিনের মধ্যেই হাওড়ায় তৈরি হয় এই বিশেষ টাস্ক ফোর্স।
সোমবার জেলার পুলিশ সুপার রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই দলটি জেলার যে কোনও বিশেষ ধরনের অপরাধ নিয়ে তদন্ত করবে এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে। শুধু জেলা বা রাজ্যে নয়, প্রয়োজনে রাজ্যের বাইরেও তদন্ত করতে যাবে দলটি।” তিনি জানান, হাওড়ায় এমন কিছু অপরাধী আছে, যাদের সাম্রাজ্য পাশের জেলা হুগলিতেও বিস্তৃত। তাই এই টাস্ক ফোর্সের কাজ হবে আশপাশের জেলাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা।
হাওড়া শহর এবং শহরতলিতে গত ৩ মে থেকে ৫ জুনের মধ্যে ৭টি খুনের ঘটনা ঘটে এবং এক জনকে খুনের চেষ্টা করা হয়। গত ৩ মে, বিধানসভা নির্বাচনের দিনে বাকসাড়ায় খুন হন তামস দাস নামে এক ব্যক্তি। ৬ মে ফের দু’টি খুনের ঘটনা ঘটে। ওই দিন সকালেই শালিমার রেললাইনের ধার থেকে মেলে বেশ কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ থাকা শাকিল খান নামে এক যুবকের পচাগলা দেহ। পুলিশের অনুমান, ওই যুবককে অন্যত্র খুন করার পরে ওই জায়গায় ফেলে যাওয়া হয়। ওই রাতেই বালি লেভেল ক্রসিংয়ে পরপর ৭টি গুলি করে তৃণমূল নেতা তপন দত্তকে খুন করে একদল দুষ্কৃতী। এই ঘটনার জেরে বালিতে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরের ঘটনাটি ঘটে ওই মাসেরই ২০ তারিখে। ওই দিন ডন বস্কো মোড়ে একটি ছাঁট লোহার গুদামে স্থানীয় কুখ্যাত দুষ্কৃতী ও তোলাবাজ পলাশ দাসকে গুলি করে এবং কুপিয়ে খুন করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। এরই দু’দিন পরে ২২ তারিখ দিনেদুপুরে মধ্য হাওড়ার কৈলাস বসু লেনে এক দুষ্কৃতীর উদ্দেশে ছোড়া গুলি লেগে মৃত্যু হয় রাজীব প্রসাদ নামে এক ভ্যানচালকের। এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে ফের ২৯ তারিখ সাঁকরাইলে শিবরাম মাহাতো নামে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন করে মোটরবাইক-আরোহী দুষ্কৃতীরা। এর পরে গত রবিবার বিকেলে ব্যাঁটরার ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় রঞ্জন চক্রবর্তী নামে এক গাড়িচালককে।
অন্য দিকে, হাওড়া শহরের ভেঙে পড়া ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজার আর্জি নিয়ে সোমবার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তাঁর সংগঠন, ‘গণতান্ত্রিক নাগরিক সমিতি’র তরফে একটি স্মারকলিপিও পেশ করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার।
বিষয়টি নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনা করতে চান বলে জানিয়েছেন সুভাষবাবু। |
|
|
 |
|
|