ইন্দিরা আবাসের সব টাকা মেলেনি, সমস্যায় পরিবার
ন্দিরা আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না-পেয়ে এক গ্রামবাসী বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেননি। প্রথম কিস্তির টাকা তিনি পেয়েছিলেন প্রায় এক বছর। সেই টাকায় তিনি বাড়ির অর্ধেক কাজ করেন। কিন্তু তার পরে আর তিনি দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাননি।
হাওড়ার ডোমজুড়ের মাকড়দহ ১ পঞ্চায়েত এলাকার ডোঙাপাড়ার বাসিন্দা ওই মহিলার নাম সন্ধ্যা মল্লিক। পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। স্বামী এক সময়ে ভ্যান রিকশা চালালেও বর্তমানে কর্মহীন। বছরখানেক আগে সন্ধ্যাদেবীর নামে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য ৩৫ হাজার টাকা অনুমোদিত হয়। নিয়মানুযায়ী, ব্লক থেকে সরাসরি প্রাপকদের হাতে প্রথম কিস্তির অর্ধেক টাকার চেক দিয়ে দেওয়া হয়। সেই টাকায় তিনি বাড়ির অর্ধেক কাজ করেছেন এই মর্মে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত শংসাপত্র ব্লকে পাঠিয়ে দিলে প্রাপককে পরবর্তী কিস্তির টাকার চেক দেওয়া হয়। সেই নিয়মে, বছরখানেক আগে সন্ধ্যাদেবীর হাতে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়ে ১৭ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। সেই টাকায় পুরনো ছিটেবেড়ার বাড়ি ভেঙে ফেলে পাকা বাড়ি তোলার কাজ শুরু করেন তিনি। টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার পরে পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক নিয়মানুযায়ী পরিদর্শনও করেন।
অসমাপ্ত ঘর। নিজস্ব চিত্র।

সন্ধ্যাদেবীর অভিযোগ, তিনি ব্লক প্রশাসনের কাছে গিয়ে পরের কিস্তির টাকা পাননি। তাঁর কথায়, “আমাকে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথম কিস্তির টাকা খরচের শংসাপত্র পঞ্চায়েত থেকে এখনও জমা পড়েনি। ফলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া যাবে না।” সন্ধ্যাদেবীর অভিযোগ, তার পর থেকে তিনি বার বার পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছেন। গিয়েছেন ব্লক প্রশাসনের কাছেও। চেক আর পাননি।
পঞ্চায়েতটি তৃণমূল পরিচালিত। সন্ধ্যাদেবীকে টাকা না-দেওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলেরই প্রধান এবং উপ প্রধানের বক্তব্যে ফারাক আছে। প্রধান সুভাষ পার বলেন, “যে নিয়মে বাড়ি তৈরি হওয়ার কথা সন্ধ্যাদেবী তা মানেননি। তার ফলেই তাঁকে সার্টিফিকেট দেওয়া যায়নি।” অন্য দিকে, সন্ধ্যাদেবী যে গ্রাম সংসদ এলাকার বাসিন্দা সেখান থেকে নির্বাচিত উপ-প্রধান সৌমেন ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক মাপের ক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গ করা হয়েছে বলে রিপোর্ট দেওয়ার পরে পঞ্চায়েতে বিরোধী দলনেতা-সহ একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সন্ধ্যাদেবীর বাড়ি পরিদর্শন করেন। তাতে আমিও ছিলাম। পরিদর্শনে দেখা যায় সন্ধ্যাদেবীর বাড়ি তৈরির মাপে কোনও ভুল ছিল না। কমিটির পক্ষ থেকে পঞ্চায়েতের বৈঠকে এ কথা জানানো হয়। তার পরেও কেটে গিয়েছে প্রায় আট মাস। সন্ধ্যাদেবীর টাকা খরচের সার্টিফিকেট ব্লক প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়নি। তা ছাড়া, তিনি যদি বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গ করেই থাকেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে এত দিনে আইনানুগ ব্যবস্থাই বা নেওয়া হল না কেন?”
প্রধানের অবশ্য দাবি, “সন্ধ্যাদেবীর বাড়ির মাপে যে গোলমাল ছিল সম্প্রতি তিনি তা সংশোধন করেছেন। তাঁর সার্টিফিকেট ব্লকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” এ দিকে বাকি টাকা না-পেয়ে সন্ধ্যাদেবী বাড়ির অসম্পূর্ণ অংশেই কোনও মতে প্লাস্টিকের ত্রিপল টাঙিয়ে তার ভিতরে স্বামী, মেয়ে দুই ছেলে এবং দুই বৌমাকে নিয়ে বসবাস করছেন। সন্ধ্যাদেবীর দাবি, “বাড়ি আমি যে ভাবে করেছিলাম তাই আছে। কিছুই সংশোধন করিনি। খামোখা ঘোরানো হচ্ছে।” সৌমেনবাবুর বক্তব্য, “আমার সন্দেহ কোনও কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থের জন্যই এতদিন তাঁর সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি।” এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন প্রধান।

Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.