|
|
|
|
তোলপাড় ঝাড়খণ্ড প্রশাসন |
জেলে বাইরের বিষাক্ত খাবার ও পানীয় খেয়ে মৃত ৩, অসুস্থ ৪ বন্দি |
ঋজু বসু ² রাঁচি |
শিরোনামে এ বার রাঁচির বিরসা মুন্ডা সেন্ট্রাল জেল।
বেশ কয়েকজন কট্টর মাওবাদী জঙ্গি, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোড়া-সহ রাজ্যের কয়েকজন প্রাক্তন মন্ত্রী যে জেলে বন্দি রয়েছেন, তার নিরাপত্তায় বড় মাপের ফাঁকফোঁকর নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে ঝাড়খণ্ড প্রশাসনে। গত রবিবার সকালে সাত জন বিচারাধীন বন্দি বাইরে থেকে আসা ‘নরম পানীয়’ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে তদন্তে নেমে চক্রান্তের হদিস পেয়েছে পুলিশ। তিন জন কয়েদি ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে। চারজন এখন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাঁচির রিজিওন্যাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিমস) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেল রক্ষীদের সঙ্গে যোগ-সাজশে ওই কয়েদিদের কেউ বা কারা বিষাক্ত পানীয় ও খাবার খাওয়ায় বলে দাবি পুলিশের। প্রাথমিক তদন্তে ন’জন জেলরক্ষীকে সাসপেন্ড করা হলেও সমাধান-সূত্র অবশ্য মেলেনি।
বেশ কয়েকজন ‘হেভিওয়েট’ আবাসিক ‘সমৃদ্ধ’ রাঁচির বিরসা মুন্ডা সেন্ট্রাল জেল দেশের অন্যতম ‘হাই-সিকিউরিটি জেল’ হিসেবে চিহ্নিত। অথচ সেই জেলেই বন্দি কয়েদিদের জন্য ‘বিষাক্ত’ পানীয় ও খাবার এল বাইরে থেকে! কোনও পরীক্ষা ছাড়াই কী ভাবে কয়েদিদের ওই থাবার দেওয়া হল, ঘটনার তিন দিন পরেও সে প্রশ্নের জবাব নেই। রবিবার সকালে কয়েদিদের অসুস্থতা প্রথম নজরে আসে। অনুমান করা হচ্ছে, শনিবার কোনও সময়ে ‘বহিরাগত’ কেউ ওই পানীয় ও খাবার নিয়ে এসেছিল। ঝাড়খণ্ডের স্বরাষ্ট্র সচিব জে বি টুবিড এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অ্যাসিস্ট্যান্ট আইজি (কারা) এম হাসানের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলছে। তবে রাঁচির পুলিশকর্তা থেকে শুরু করে জেলের সুপার সকলেই স্বীকার করছেন, নিরাপত্তায় ‘মারাত্মক ত্রুটি’ ছিল। একই সঙ্গে নজরে এসেছে, এক বছর ধরে জেলের ক্লোজ্ড সাকির্ট টিভি অকেজো। তাই ওই টিভি থাকলেও তা থেকে কোনও সূত্র মেলেনি। জেল সুপার দিলীপকুমার প্রধান বলেন, “প্রশাসনকে টিভি-র বিষয়ে ঢের আগে জানানো হয়েছিল।” জেল সুপার বলেন, “কয়েদিদের সঙ্গে কেউ দেখা করতে এলে বায়ো-মেট্রিক পদ্ধতিতে তাঁর আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা ও ছবি তোলাই নিয়ম। খাতায় নাম-ধাম লিখতে তো হয়ই। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাটির ক্ষেত্রে কোনও নথিই পাওয়া যায়নি।” তিনি আরও বলেন, “বাইরে থেকে কয়েদিদের জন্য কেউ খাবার আনলে রক্ষীদের সামনে সেই খাবার তিনি আগে নিজে খান। তারপরে রক্ষীরাও সে খাবার যাচাই করেন। এটাই নিয়ম।” এত নিয়ম সত্ত্বেও এত বড় ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা ভেবে পাচ্ছেন না জেল সুপার। রাঁচির এসপি শম্ভু ঠাকুর বলেন, “জেলের নিরাপত্তায় গাফিলতির জন্যই এমনটা হয়েছে। কয়েদিদের জন্য কোনও পানীয় যাতে জেলে না ঢোকে তা জেলকর্তাদের আগেই বলা হয়েছিল। সেই নির্দেশ কেউ মানেনি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, জোড়া খুনের অভিযুক্ত শ্যামকিশোর চৌধুরীকে কেউ নরম পানীয়, আম ও কিছু খাবার পাঠিয়েছিল। ওয়ার্ডের ন’জন কয়েদি মিলে তা খায়। শ্যামকিশোর নিজেও অসুস্থ। প্রশ্ন উঠেছে, একই মামলায় শ্যামকিশোরের সহ-অভিযুক্ত, দাগি তোলাবাজ সন্দীপ থাপা কেন ওই খাবার ছোঁয়নি। |
|
|
 |
|
|