|
|
|
|
উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ বেতন দিতে |
অনিয়মে অভিযুক্ত বাম জেলা পরিষদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²বালুরঘাট |
উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা থেকে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন মেটানোর অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। মাসের পর মাস ধরে এই অনিয়ম চলছে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে পরিষদের স্টেট গভর্নমেন্ট তৃণমূল এমপ্লয়িজ ফেডারেশন। জেলাশাসকের কাছে তারা অবিলম্বেই অনিয়ম বন্ধের দাবি জানিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থ না নিলে আন্দোলন করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছে তারা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ সিপিএমের দখলে। বিরোধীদের দাবি, বিগত অডিট রিপোর্টে অন্য তহবিল থেকে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেওয়ার বিষয়টি উল্লখ করে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রতি আপত্তিসূচক ‘নোট’ দিয়ে জেলা পরিষদের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক তাপস বাগচী উন্নয়ন তহবিল থেকে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন মেটানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেন, “আমার সময় বাড়তি কোনও অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়নি। তবে আয় বাড়িয়ে আমরা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হব।’’ জেলাশাসক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “অন্য খাতের টাকা থেকে অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের বিষয়টি শুনেছি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ৮৯ জন। প্রতিমাসে বেতন দিতে খরচ হয় ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৮৫ টাকা। নিয়ম মতো জেলা পরিষদের নিজস্ব হতবিল থেকে তাঁদের বেতন দেওয়ার কথা। অথচ তহবিলে আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ। ট্রাক টার্মিনাস, ইটভাটা, প্রিন্টিং প্রেস, মার্কেট কমপ্লেক্সের ঘর ভাড়া, কলকাতার অতিথি নিবাসের মতো নিজস্ব আয়ের উৎস থেকে মাসে সংগ্রহ হয় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। তাতে অস্থায়ীদের বেতন মেটাতে প্রতিমাসে ঘাটতি দাঁড়ায় ২ লক্ষ টাকা। তৃণমূল এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের জেলা সহ সভাপতি কার্তিক সান্যাল অভিযোগ করেন, “কেন্দ্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পের একাংশ টাকা অস্থায়ী কর্মীদের বেতনে খরচ হচ্ছে। এটা অর্থ তছরুপেরই সমান। আয় না বাড়িয়ে প্রতি বছর ক্যাডারদের চাকরিতে ঢুকিয়ে আদতে ওই অস্থায়ী কর্মীদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।”
কার্তিকবাবু জানান, ঘটনার তদন্ত করে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থ না নিলে আন্দোলন করা হবে। জেলা পরিষদেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, সিপিএমের ক্ষমতায় থাকা জেলা পরিষদের বিগত বোর্ডের সময় থেকেই অস্থায়ী কর্মী নেওয়া হচ্ছে। স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ৮০ জন হলেও অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। ৩ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে রাখা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যুক্ত করা হয়। ৫১ জন জব-ওয়ার্কার হিসাবে অফিসের কাজে যুক্ত। হিলির বালুপাড়ায় জেলা পরিষদের নিজস্ব ট্রাক টার্মিনাসে ১৬ জন। নূরপুরে ইটভাঁটায় ১১ জন, জেলা পরিষদের নিজস্ব ছাপাখানায় ৭ জন এবং কলকাতার অতিথি নিবাসে ৪ জন কাজ করছেন। সিপিএম নিয়ন্ত্রিত জেলা পরিষদ এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নেতা দিলীপ দত্ত বলেন, “যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। জেলা পরিষদের নিজস্ব সম্পত্তি থেকে আয় বাড়াতে কর্মীরাও উদ্যোগী। সংগঠনের তরফে বিষয়টি সভাধিপতিকেও জানানো হয়েছে।”
জেলা পরিষদের বিরোধী তৃণমূল সদস্য অখিল বর্মনের অভিযোগ, কুশমন্ডি, গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জের মার্কেট কমপ্লেক্সগুলির ঘরভাড়া মাসে ২৫ টাকা রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। তিনি বলেন, “গঙ্গারামপুরে কালদিঘির ৯১ একর জলাশয়ের লিজ দেওয়া হয় বছরে মাত্র ২৫ হাজার টাকায়। যা হওয়া উচিত বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। কুমারগঞ্জের ইটভঁটাও বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। নিজস্ব হতবিলের যা পরিস্থিতি তাতে প্রতি মাসে অফিসের স্টেশনারি খরচের ২৫ হাজার টাকা বিলও বাকি পড়ে থাকছে। |
|
|
|
|
|