|
|
|
|
জঙ্গলমহলে স্বাস্থ্য ফেরাতে স্বেচ্ছাসেবীদের দ্বারস্থ রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² কলকাতা |
রাজ্যের জঙ্গলমহলে সামগ্রিক উন্নয়ন তো থমকে আছেই। সেই সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মাওবাদী প্রভাবিত এবং আদিবাসী অধ্যুষিত ২৩টি ব্লকে স্বাস্থ্য-পরিষেবার কার্যত কোনও অস্তিত্বই নেই। সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে অবশেষে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্যের নতুন সরকার।
মাওবাদী কার্যকলাপ এবং সেই সঙ্গে প্রশাসনিক ঔদাসীন্যের কারণে জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই উন্নয়ন স্তব্ধ। এর মোকাবিলায় উন্নয়ন ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত এবং পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা সোমবার মহাকরণে স্বাস্থ্য, স্কুলশিক্ষা, বিদ্যুৎ, ক্ষুদ্র সেচ, আদিবাসী কল্যাণ, কারিগরি শিক্ষা, ক্ষুদ্র শিল্প, খাদ্য প্রভৃতি দফতরের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সব ব্লকে এখন কোন কোন প্রকল্প চালু আছে এবং সেগুলির সফল রূপায়ণে কোন দফতরের কত টাকা দরকার, তা জানতে চান মণীশবাবু।স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হয়, জঙ্গলমহলে শুধু সরকারি স্বাস্থ্য-পরিকাঠামোর ভরসায় থাকলে চলবে না। যে-সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মেডিক্যাল ভ্যানে দুর্গম এলাকায় চিকিৎসক ও নার্স পাঠিয়ে চিকিৎসা করে, তাদের মধ্যে কারা জঙ্গলমহলে কাজ করতে আগ্রহী, সেটা জানতে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেবে স্বাস্থ্য দফতর। নির্বাচিত স্বেচ্ছাসেবীদের ওই সব ব্লকে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে বলা হবে। তাতে বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব। |
মণীশ গুপ্ত
|
সুকুমার হাঁসদা
|
|
একই ভাবে আদিবাসী উন্নয়ন দফতরকে ওই সব এলাকায় দ্রুত বাড়তি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আদিবাসীদের জন্য ওই ২৩টি ব্লকে এখন ২১০টি শস্যগোলা রয়েছে। ভাদ্র মাসে যখন ওখানে মানুষের হাতে কোনও কাজ থাকে না, তখন ওই সব গোলা থেকে পরিবার-পিছু ১০০ কিলোগ্রাম করে চাল ধার দেওয়া হয়। পৌষ মাসে মাঠে ধান কাটার কাজ মেলে। তখন সেই চাল শোধ করে দেন আদিবাসীরা। কেন্দ্র ওই সব গোলার জন্য খাদ্য নিগমের মাধ্যমে চাল পাঠায়। এক-একটি গোলা তৈরির জন্য রাজ্য সরকার এক লক্ষ টাকা দেয়। শস্যগোলার সংখ্যা আরও বাড়ানোর ব্যাপারেও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
ওই ২৩টি ব্লকের ৬০ বছরের বেশি বয়সের প্রায় ২৭ হাজার ৫০০ আদিবাসী মাসে ৭৫০ টাকা পেনশন পান। সেটা বাড়িয়ে হাজার টাকা করার জন্য অর্থ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। ওখানে আদিবাসীদের বহুমুখী সমবায় (ল্যাম্পস) ও মিনি ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়িয়ে সেগুলিকে আরও কার্যকর করতে বলা হয়েছে। শালপাতার বাটি, থালা তৈরির জন্য ওই সব এলাকায় সামান্য হলেও যে-সব ক্ষুদ্র শিল্পগুচ্ছ রয়েছে, তার সংখ্যা বাড়ানো এবং পুরুলিয়ায় লাক্ষা চাষে আরও জোর দেওয়া হবে। গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রূপায়ণ করতে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ দফতরকে। বৈঠকের পরে মণীশবাবু জানান, ওই সব এলাকায় থমকে থাকা উন্নয়নের কাজে এ বার হাত দিতে হবে। সেই জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি ওখানে কী কাজ করছে, সেই খতিয়ান পেশ করতে বলা হয়েছে। তাদের কত টাকা লাগবে, জানাতে বলা হয়েছে তা-ও। তার ভিত্তিতে অন্য খাত থেকে টাকা এনে ওই অঞ্চলে উন্নয়নের কাজ করা হবে। |
|
|
|
|
|