|
|
|
|
গ্রেফতার রেজ্জাক ও জেলার ১২ নেতা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
বিধানসভা ভোটে ধরাশায়ী হওয়ার ২৩ দিন পরে আন্দোলনের রাস্তায় নামল সিপিএম।
পুলিশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে সোমবার ভাঙড়ে ‘থানা ঘেরাও এবং জেল ভরো’ কর্মসূচি পালন করল তারা। বিরোধী পক্ষে এসে এমন আন্দোলন এই প্রথম। আর প্রথম আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার হলেন দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিধানসভায় সিপিএমের সচেতক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা, ভাঙড়ের সিপিএম বিধায়ক বাদল জমাদার, প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ী, দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী-সহ ১৩ নেতা। পরে তাঁরা ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান।
এ দিনের কর্মসূচি পূর্বঘোষিত। রেজ্জাকের নেতৃত্বে সকাল ১০টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা থালা-বাটি-গ্লাস এবং জামা-কাপড় নিয়ে ভাঙড় থানা ঘেরাও করেন প্রায় দেড় হাজার সিপিএম কর্মী-সমর্থক। বেলা ১টা নাগাদ নেতারা থানা ঢুকলে গ্রেফতার করা হয়। রেজ্জাক বলেন, “বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নামে ভাঙড় ও ক্যানিংয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের হয়রান করছে। মহিলারাও ছাড় পাচ্ছেন না। তাই আমরাই থানায় গ্রেফতার হওয়ার জন্য এসেছি। বাড়িতে গিয়ে মিথ্যা তল্লাশি অভিযান চালাতে হবে না।”
সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকায় নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চালালেও পুলিশ উদাসীন। সুজনবাবু বলেন, “রাজ্যের সব সিপিএম পার্টি অফিস, নয়তো সিপিএম নেতাদের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের গল্প করছে পুলিশ। সিপিএম অত বোকা নয় যে বাড়িতে অস্ত্র মজুত রাখবে। প্রতিটি অস্ত্র সিপিএমের পতাকা দিয়ে মুড়ে নিজের নাম লিখে রাখবে। আসলে চক্রান্ত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মুখে বলছেন পুলিশকে নিরপেক্ষ থাকতে। আর কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শাসকদের দলদাসের কাজ করছে পুলিশ।” |
|
পুলিশ ভ্যানে রেজ্জাক মোল্লা। সোমবার ভাঙড়ে।শামসুল হুদা |
নেতাদের দেখে সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা থানায় ঢুকতে গেলে তাঁদের আটকে দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। থানার বাইরে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জানান, রেজ্জাক মোল্লা-সহ ১৩০০ সিপিএম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে নেতাদের এসডিপিও (বারুইপুর) দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই তাঁরা ব্যক্তিগত জামিন নেন। বাকি বিক্ষোভকারীরার ব্যক্তিগত জামিন পান ভাঙড় থানা থেকে। পুলিশ সুপার বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন ওই নেতারা। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” সুজনবাবু অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে পুলিশের ভূমিকার কটাক্ষ করলেও, রাজ্যের নানা এলাকা থেকে এ দিনও অস্ত্র মিলেছে। হুগলির গোঘাটের রথতলার পুকুর থেকে তিনটি মিনি কামান মেলে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের গামারীপুর গ্রামের একটি কালভার্টের নীচ থেকে মেলে দু’টি একনলা বন্দুক ও ৯টি কার্তুজ। বামুনদা গ্রামের এক সিপিএম কর্মীর দোকান থেকে ৫টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়। ওই গ্রামের সিপিএমের একটি শাখা কমিটির অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় বোমা তৈরির প্রায় দেড় কেজি মশলা। বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে সিপিএমের জোনাল কার্যালয় থেকে দু’টি মোটরবাইক, তৃণমূলের ছেঁড়া পতাকা, কার্তুজ, বেশ কিছু লাঠি ও রড পাওয়া গিয়েছে। একটি বাইক তাদের এক কর্মীর বাড়ি থেকে লুঠ করা বলে দাবি তৃণমূূলের। ইন্দাসের জিনকরা এবং ফতেপুর থেকে ৭টি পাইপগান ও মাস্কেট উদ্ধার হয়। |
|
|
|
|
|