জিয়াগঞ্জে শিশুকে বাঁচিয়ে বিদ্যুতের বলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² জিয়াগঞ্জ |
নিজের জীবনের বিনিময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট এক বালককে নিশ্চিত মৃত্যুর হাতে থেকে বাঁচালেন রিকশাচালক এক যুবক। জিয়াগঞ্জ থানার বাগডহরা-পালপাড়ার মৃত ওই যুবকের নাম ভবানী মণ্ডল (৩০)। সোমবার সকালে বাগডহরা-পালপাড়ার প্রতিবেশী গোপাল মণ্ডলের বছর আটেকের ছেলে পাঁচু মণ্ডলকে হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতির কারণে ওই দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ তুলে জিয়াগঞ্জ টাউন কংগ্রেস বিদ্যুৎ বিভাগে তালা দিয়ে দেয়। অবশেষে বিদ্যুৎ বিভাগের তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ডিভিশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার স্বাগতা পাল মণ্ডল ঘোষণা করেন, “ক্ষতিপূরণ বাবদ আড়াই লক্ষ টাকা মৃতের পরিবারকে মাস খানেকর মধ্যে দেওয়া হবে। আহত বালকের চিকিৎসার খরচ দেবে বিদ্যুৎ দফতর। পুরো তদন্ত করার পর ঘটনার জন্য দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে।” লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর জিয়াগঞ্জের বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যালয়ের তালা খুলে দেওয়া হয়। |
|
গ্রামবাসীদের ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র। |
বছর খানেক আগে স্থানীয় বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলির বাড়িতে বিদ্যুৎ দফতর থেকে বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অর্ধেক বাড়িতে বছর ঘুরে গেলেও বিদ্যুতের সংযোগই দেওয়া হয়নি। রবিবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি পালপাড়ায় গিয়ে সুইচ বোর্ডের সঙ্গে ২২০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন জুড়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে বিভাগীয় কর্মীরা। ভবানী মণ্ডলের বাড়ির সামনের খুঁটির সঙ্গে বিদ্যুতের তার জুড়ে দেওয়া হয় ওই রাতেই। লুটিয়ে পড়ে থাকা সেই তারে পা পড়তেই ছিটকে পড়ে পড়শি শিশু পাঁচু। তাকে বাঁচাতে গিয়েই ওই তারে পা জড়িয়ে যায় ভবানীর। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
ভবানীবাবুর স্ত্রী বীনাপানিদেবী বলেন, “তখন সকাল সাতটা। ও বহরমপুরে রিকশা চালাতে যাওয়ার জন্য কলতলায় হাত-মুখ ধুচ্ছিল। আমি উঠোনে বসে স্বামীর জন্য রুটি বানাচ্ছিলাম। এমন সময় প্রতিবেশি ওই বাচ্চাটির চিৎকার শুনে ছুটে যান উনি। বাচ্চাটিকে বাঁচালেও তারে আটকে গিয়ে ওখানেই মারা যান।” |
|