টুকরো খবর

প্রতি পদে লড়েই সাফল্য ইদ্রিসের
জন্ম থেকেই দু’টি পা অচল। অবলম্বন হুইল চেয়ার। বাবা নেই। মা ভিক্ষে করে দু’বেলা অন্ন সংস্থানের চেষ্টা করেন। শরীর থেকে পরিবার, প্রতিবন্ধকতা প্রতি পদে। এ সবের সঙ্গে লড়েই কাঁথি ক্ষেত্রমোহন বিদ্যাভবনের প্রতিবন্ধী ছাত্র শেখ ইদ্রিস উচ্চ মাধ্যমিকে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে। ৫১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সে। কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন বাবা শেখ বাসেদ। মা ফতেমা বেওয়া ভিক্ষে করেন। এমন পরিবারে লেখাপড়া করাটাই বিলাসিতা। তবু ইদ্রিসের লেখাপড়ার পাট চুকে যায়নি। সৌজন্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ত্রিপাঠি। দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা পঞ্চায়েতের গোটসাউরি গ্রামের বাড়ি থেকে ইদ্রিসের স্কুল কয়েক কিলোমিটার। হুইলচেয়ারে চেপেই স্কুলে যাতায়াত করত সে। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরে নিখরচায় স্কুলের হস্টেলে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলের সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডা ও আরও কয়েকজনের সাহায্যেই চলতে থাকে লেখাপড়া। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার খরচ জোগাড় হবে কোত্থেকে? ভিখারিনি মায়ে পক্ষে পড়ার খরচ জোগানো একেবারেই অসম্ভব। ইদ্রিসের কথায়, “পড়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা কাজ চাই।

জয়দেবের স্বপ্নের পথে বাধা দারিদ্র
বাবা-মায়ের অক্ষরপরিচয়টুকুই নেই। দারিদ্র্যও নিত্যসঙ্গী। এরই মাঝে উচ্চ মাধ্যমিকে সফল ভগবানপুরের পশ্চিম মাশুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জয়দেব দাস। বিভীষণপুর হাউস্কুল থেকে বিজ্ঞান শাখায় ৪২২ নম্বর পেয়েছে সে। বাবা শুকদেব দাস ও মা মঞ্জরীদেবী দিনমজুরি করে সংসার চালান। বললেন, “নিজেরা পড়ার সুযোগ পাইনি। জেদ ছিল যে ভাবেই হোক ছেলেকে পড়াবই।” তবে ভাল ফল করেও ছেলের উচ্চ শিক্ষার খরচ কোত্থেকে জোগাড় হবে, সেটাই এখন চিন্তা। এতদিন স্কুলের শিক্ষকরা সামান্য বেতনে পড়িয়েছেন। ভবিষ্যতে কী হবে? জয়দেব পদার্থবিদ্যায় গবেষণা করতে চায়। আপাতত পড়তে চায় কাঁথি কলেজে। তার কথায়, “বাবা-মাআমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু অর্থাভাবই স্বপ্নপূরণের পথে বাধা।” কৃতী এই ছাত্রের স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন মণ্ডল বলেন, “ওর আসাধারণ মেধা। সাহায্য পেলে ও অনেক বড় হবে।”
ছবি: কৌশিক মিশ্র।

ভাল ফল করেও দুশ্চিন্তায় অরিন্দম
অসচ্ছল পরিবারেই বেড়ে ওঠা রামনগরের শোনপুরের বাসিন্দা অরিন্দম পন্ডার। বাবা হরিপদবাবু চাষবাস করেন। মা সুপ্রভাদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। আর্থিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করেই এগরা ঝাটুলাল হাইস্কুলের ছাত্র অরিন্দম এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখায় ৪৪৮ নম্বর পেয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়তে চায় এই লড়াকু ছাত্র। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য অর্থের সংস্থান হবে কী করে? সেই ভাবনাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে পন্ডা দম্পতিকে। তাঁদের অসহায় স্বীকারোক্তি, “ছেলে বাইরের কোনও ভাল কলেজে পড়তে চায়। কিন্তু আমাদের সেই সামর্থ নেই।” অরিন্দম যে ছোট থেকেই মেধাবী ও সাহায্য পেলে বহু দূর যাবে, সে কথা জানালেন তার স্কুলেক প্রধান শিক্ষক অমল রায়। আর অরিন্দমের বক্তব্য, “সাহায্য পেলে জীবনে আমি সফল হবই।”
ছবি: কৌশিক মিশ্র।

সাঁতারু মাসাদুরই প্রেরণা আজহারের
জন্ম থেকেই বাঁ হাতের কনুইয়ের নীচের অংশটা নেই শেখ আজহারের। বাবা শেখ কাসিরুদ্দিন বাস কন্ডাক্টর ছিলেন। এখন আর কাজে যেতে পারেন না। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও দমে যাওয়ার পাত্র নয় আজহার। হলদিয়ার কুকড়াহাটি ঢেকুয়া হাইমাদ্রাসার এই ছাত্র উচ্চ মাধ্যমিকে রীতিমতো ভাল ফল করেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন তার দু’চোখে। প্রতিবন্ধী সাঁতারু মাসাদুর রহমানই তাঁর প্রেরণা। ভাল লাগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও। উচ্চ শিক্ষার পথে বাধা অবশ্য অর্থাভাব। সেই সঙ্কট মেটানোই এখন দুশ্চিন্তা আজহারের।

বাসের সঙ্গে ধাক্কা, মৃত ট্যাক্সি চালক
বাসের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হল ট্যাক্সি চালকের। জখম হয় ট্যাক্সি-আরোহী তিন ছাত্র-ছাত্রী। সোমবার সকালে তমলুকের ডিমারি বাজারের কাছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃত ট্যাক্সি চালক শাহ আলম (৪২)-এর বাড়ি কোলাঘাটের বাড়বহলা গ্রামে। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের টাউনশিপ থেকে তিন পড়ুয়া ট্যাক্সিতে তমলুক শহরের দিকে পড়তে যাচ্ছিল। সকাল ৬টা নাগাদ ডিমারি বাজারের কাছে হলদিয়া-মানকুর রুটের বেসরকারি বাসের সঙ্গে ট্যাক্সিটির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ট্যাক্সি চালক। দ্বাদশ শ্রেণির তিন ছাত্রছাত্রী জখম হয়। বাসিন্দারাই তাদের উদ্ধার করে তমলুক হাসপাতালে পাঠান। পুলিশ যাত্রিবাহী বাসটিকে আটক করেছে।

পাঠ্যপুস্তক বিতরণ
সপ্তর্ষি এডুকেশন্যাল ফ্রেন্ডস সোসাইটি শনিবার চণ্ডীপুরে প্রায় ৫ হাজার পড়ুয়াকে পাঠ্যবই বিলি করে। সোসাইটির সভাপতি গৌতম দাস ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর ছেলে সপ্তর্ষি জন্ম থেকেই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছিল। ১৭ বছর বয়সে মারা যায় সপ্তর্ষি। তার পর থেকে ছেলের প্রতিটি জন্মদিন এ ভাবেই পালন করে গৌতমবাবুর পরিবার। থ্যালাসেমিয়া বাহক-নির্ণয় শিবিরেরও উদ্বোধন হয়।

উপাচার্যের দ্বারস্থ
ফের কাউন্সিলিং শুরুর দাবি জানিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিল বিএড সংগ্রাম কমিটি। সোমবার সংগঠনের প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে বেশ কিছু দাবি পেশ করে। কমিটির দাবি, অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না। যাঁদের কাউন্সিলিং হয়ে গিয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কলেজে ভর্তি নিতে হবে। সরকারি উদ্যোগে আরও বিএড কলেজ খুলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৭টি বিএড কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি। বিএড- এর কাউন্সিলিং ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাড়তি ফি নেওয়াকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চাপানউতোর শুরু হয়। ফলস্বরুপ, কাউন্সিলিংয়ের শেষ দু’ দিন কোনও বেসরকারি কলেজের প্রতিনিধি উপস্থিত হননি। ফলে, ছাত্রছাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সংগ্রাম কমিটির বক্তব্য, উপাচার্য দাবি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। বিষয়টি উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে।

কুশবনির দেহ শনাক্ত হল
রবিবার সন্ধ্যায় বিনপুর থানার দহিজুড়ি-বড়শোলের মাঝে কুশবনির জঙ্গল রাস্তা থেকে যে রক্তাক্ত দেহটি উদ্ধার হয়েছিল, সেটি জামবনির চনসরো লাগোয়া বেলিয়াগুড়ি গ্রামের ইন্দ্রজিৎ হেমব্রমের (৩৮) বলে শনাক্ত করলেন তাঁর পরিজনেরা। এর ফলে খুনের পিছনে মাওবাদীদের ভূমিকা রয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণাও আরও দৃঢ় হয়েছে। পুলিশের দাবি, গত ৯ মার্চ ইন্দ্রজিতের ভাই ধনিরামের সঙ্গে মাওবাদীরা চনসরো গ্রামের এক তরুণীর এক প্রকার জোর করেই বিয়ে দিয়েছিল। ধনিরাম ওই মেয়েটিকে ভালবাসত। কিন্তু পরে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। মেয়েটির পক্ষ নিয়ে মাওবাদীরা সালিশি বসিয়ে ধনিরামকে তাঁর পুরনো প্রেমিকাকেই বিয়েতে বাধ্য করে। ১০ মার্চ বিকেলে চনসরোয় যৌথ বাহিনীর গুলিতে নিহন হন মাওবাদী দলের অন্যতম শীর্ষনেতা শশধর মাহাতো। ধনিরামের পরিবারই পুলিশকে খবর দিয়েছে সন্দেহে ইন্দ্রজিৎকে রবিবার হিরুরডিহি গ্রামের মেলা থেকে দুপুর ১২টা নাগাদ সশস্ত্র মাওবাদীরা অপহরণ করে খুন করেছে বলে দাবি পুলিশের।
Previous Story Medinipur Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.