কেউ যেন অভুক্ত না থাকে, বার্তা মন্ত্রীর
ব বাড়িতেই যেন বেঁচে থাকার ন্যূনতম রসদের জোগান থাকে। এক জনকেও যেন অর্ধাহারে কাটাতে না হয়। অনাহার মৃত্যুর ঘটনা যেন না ঘটে আর। এই লক্ষ্যেই জঙ্গলমহলে গণবন্টন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে চাইছে রাজ্যের খাদ্য দফতর। সেই সঙ্গেই দুর্নীতি রোধেও কড়া হচ্ছে দফতর। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে এই বার্তাই দিলেন নতুন সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর বক্তব্য, “কোথাও কেউ খেতে পাচ্ছেন না, এমন ঘটনা যেন না ঘটে। এমন শোনা গেলে দু’ঘণ্টার মধ্যে সেখানে খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটারদের রেয়াত করা হবে না।”
শুধু বার্তা দিয়েই কাজ শেষ করেননি মন্ত্রী। জানিয়েছেন, নিয়মিত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য থাকবে ‘ভিজিল্যান্স মনিটরিং কমিটি’। জঙ্গলমহলের তিন জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় ৪৫ দিন অন্তর তিনি নিজে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসবেন বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত রূপায়িত হয়েছে কি না, না হলে কেন হয়নি, পরবর্তী বৈঠকে তা আলোচনা করবেন। প্রত্যন্ত এলাকাতেও নিজে গিয়ে পরিস্থিতি দেখবেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে রাজ্যস্তরে অভিযোগ-গ্রহণ কেন্দ্র খোলা, টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা চালুর কথাও জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। সপ্তাহে ৪ দিন রেশন দোকান খোলা রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্য, “স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করতে চাইছি আমরা।
মেদিনীপুরে বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
আমাদের বিশ্বাস, তা করতে পারব।” রাজ্যে ১ কোটি ৩২ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে বলেও মন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন। তার মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই রয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ভুয়ো কার্ড। ভুয়ো কার্ড বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। কাজে গতি এবং সমন্বয় আনতে দফতরের সব কর্মী ও অফিসারদের পাশাপাশি রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটারদের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর সংবলিত নতুন সফটওয়্যার তৈরি হচ্ছে বলেও মেদিনীপুরে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে জানান মন্ত্রী।
এত দিন জঙ্গলমহলে ২৪ হাজার টাকা বার্ষিক আয় পর্যন্ত ব্যক্তিদের ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হত। আইটিডিপি-র (ইন্টিগ্রেটেড ট্রাইবাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট) অন্তর্ভুক্ত মৌজার আদিবাসী ও অ-আদিবাসী প্রতিটি মানুষই এই সুবিধা পেতেন। আরও বেশি মানুষকে সস্তায় চাল দিতে আয়ের সীমা বাড়িয়ে আদিবাসীদের জন্য ৩৬ হাজার টাকা এবং অ-আদিবাসীদের জন্য ৪২ হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাতে কাউকেই অনাহারে মরতে না হয়, সে জন্য বিডিও ও মহকুমাশাসকদের বিশেষ তহবিল চালুর নির্দেশও দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। জেলা স্তরে কমিটি করে গণবন্টন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। সোমবার মেদিনীপুরের বৈঠকে জেলসাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি, জেলা খাদ্য নিয়ামক প্রদীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকের কাছেই জেলায় গণ-বণ্টন ব্যবস্থার বর্তমান হাল নিয়ে খোঁজখবর নেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। মন্ত্রী বলেন, “সবাই মিলেই কাজ করতে হবে। তবেই প্রতিটি মানুষের কাছে আমরা বাঁচার ন্যূনতম রসদ খাদ্যটুক পৌঁছে দিতে পারব।”
Previous Story Medinipur Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.