সাংবাদিক নন
সংক্ষিপ্ত জবাব না-পসন্দ, অগ্নিশর্মা সুনীল
ফের জুতা কাহিনি কংগ্রেস সদর দফতরে!
গত লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস সদর দফতরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে লক্ষ করে জুতো ছুঁড়েছিলেন হিন্দি সংবাদপত্রের এক সাংবাদিক জার্নেল সিংহ! আর আজ কংগ্রেসের মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান তথা দলের বর্ষীয়ান নেতা জনার্দন দ্বিবেদীর দিকে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন জুতো নিয়ে তেড়ে গেলেন আর এক ‘সাংবাদিক’। নাম সুনীল কুমার। পরক্ষণেই কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়ে দিলেন, রামদেবকে অনশন-রাজনীতিতে মদত দেওয়ার পর এটাও এখন আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারেরই কাজ। তাঁরাই এতটা ‘নীচে নেমে’ এই ধরনের হামলায় অবতীর্ণ হয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই দায় অস্বীকার করে পাল্টা সমালোচনা করেছে আরএসএসও।
ঘটনাটি এরকম। ‘অপারেশন রামদেব’-এর পর বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হওয়ায় আজ পাল্টা আগ্রাসী অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই মনীশ তিওয়ারিকে সঙ্গে নিয়ে দলের প্রধান মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী এসেছিলেন সাংবাদিক বৈঠক করতে। সব কিছু ভালই চলছিল। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দিচ্ছিলেন জনার্দন। সুনীল তখন দাঁড়িয়েছিলেন মঞ্চের ডান দিকে। এর আগে সুনীলকে কোনও দিনই কংগ্রেস দফতরে দেখা যায়নি।
চলছিল কংগ্রেসের সাংবাদিক বৈঠক। রামদেবকে নিয়ে প্রশ্ন করেন রাজস্থানের সুনীল কুমার।
তার পরেই জুতো হাতে পৌঁছে যান জনার্দন দ্বিবেদীর কাছে। রমাকান্ত কুশওয়াহা
রামদেব প্রসঙ্গ নিয়ে কথা চলছিল। তার মধ্যেই হঠাৎ সুনীল উত্তেজিত হয়ে প্রশ্ন করেন, “জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সামনে এখন কোনও বিরোধী শক্তিই নেই। এতে নিশ্চয়ই খুশি কংগ্রেস?” জনার্দন জবাবে বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধীরা থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক।” কিন্তু এই সংক্ষিপ্ত জবাব মনঃপূত না হওয়ায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন সুনীল। আর তার পরেই সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার পথে আচমকা মঞ্চে উঠে জুতো খুলে তেড়ে যান জনার্দনের দিকে। জনার্দনই উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে বিরত করেন। তত ক্ষণে কংগ্রেস দফতরের এক কর্মী সুনীলকে জাপটে ধরে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনেন। ভাল রকম পেটানো হয় সুুনীলকে। সুনীলের এই কাণ্ডে ‘সার্বিক ভাবে সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে’, এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সাংবাদিকরাও বেশ কয়েক ঘা লাগিয়ে দেন। তার পর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় তুঘলক লেন থানায়।
তুঘলক রোড থানায় পুলিশি হেফাজতে। প্রথমে সুনীল বলেন, তিনি সাংবাদিক।
পরে জানা যায় তা ঠিক নয়। সোমবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই
স্বাভাবিক ভাবেই ঘটনার পরে খোঁজ শুরু হয়, কোন পত্রিকার সাংবাদিক সুনীল? কেউ কেউ গোড়ায় রসিকতা করে বলেন, উনি যে পত্রিকায় কাজ করেন তার নাম ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’। কিন্তু পরে খোঁজ করে জানা যায়, রাজস্থানের ঝুনঝুনুর বাসিন্দা সুনীল। তিনি নাকি ‘নবসঞ্চার’ নামে রাজস্থানের একটি পত্রিকায় কাজ করেন। কিন্তু রাজস্থানের ওই সংবাদপত্রের মালিক মুকেশ মুন্দ জানিয়েছেন, তাঁর একটি কোচিং সংস্থাও আছে। সুনীল সেখানে কিছু দিন শিক্ষকতা করেছেন। পাঁচ মাস আগে সে কাজ ছেড়ে দেন তিনি। অর্থাৎ সুনীল আর যাই হোন, সাংবাদিক নন। পুলিশ সূত্রে বলা হয়, রামলীলা ময়দানে রামদেবের অনশনে যোগ দিতে এসেছিলেন সুনীল। তাঁর ব্যাগ থেকে রামদেবের লিফলেট পাওয়া গিয়েছে।
পাদুকা-পুরাণ
ভারতে
২০০৯, ৯ এপ্রিল
শিখ নিধন মামলায় জগদীশ টাইটলারকে
ক্লিন চিট দেওয়ায় ক্ষোভ। চিদম্বরমকে জুতো
সাংবাদিক জার্নেল সিংহের।
২০১০, ১৫ অগস্ট
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ওমর আবদুল্লাকে
জুতো কনস্টেবল আবদুল্লা আহাদ জানের।
এই ঘটনার পরেই জনার্দন ও কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন আরএসএস-কে। বলেন, আরএসএস যে কত বড় ‘ফ্যাসিস্ট শক্তি’, তা এই ঘটনাতেই প্রমাণিত। রামদেব যে তাঁরা মদত দিচ্ছেন, তা-ও এখন স্পষ্ট। ঘটনার পর জনার্দনকে জড়িয়ে ধরে দিগ্বিজয় বলেন, “পণ্ডিতজি এখন যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, তার জেরে এ ধরনের হামলা আমাদের এখন রোজ সামলাতে হবে।” তবে আরএসএস মুখপাত্র রাম মাধব বলেন, সঙ্ঘ পরিবারকে কলঙ্কিত করার জন্য কংগ্রেস ষড়যন্ত্র করছে। বিজেপি নেতৃত্বও জানিয়েছেন, জুতো-কাণ্ডকে তাঁরা নিন্দা করেন। দিগ্বিজয় কী বলছেন তা নিয়ে তাঁরা মাথা ঘামাচ্ছেন না।
Previous Story Desh Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.