হকারদের দখলে প্রতীক্ষালয়, উদাসীন পুর কর্তারা
যাত্রী প্রতীক্ষালয় বলতে রয়েছে পুরসভার পুরনো একটা ছাউনি। বহু দিন ধরে সেই প্রতীক্ষালয়ের জায়গাও দখল করেছে হকারেরা। রকমারি জিনিসের পসরা সাজিয়ে সারাদিনই চলছে বিকিকিনি। অগত্যা খোলা রাস্তায় রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাসের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। দুর্গাপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডের ছবিটা ঠিক এরকমই।
এই স্টেশন এলাকা দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন। সারাদিনই যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা থাকে বাসস্ট্যান্ডও। গুরুত্বপূর্ণ এই স্ট্যান্ডে একটি বেসরকারি প্রতীক্ষালয় থাকলেও পুরসভার প্রতীক্ষালয়টির বেহাল অবস্থা। সেখানে চলে হকারদের রমরমা কারবার। এর জেরে নাকাল হতে হয় যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, প্রতীক্ষালয়টিকে ব্যবহারের উপযুক্ত করে তোলার কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পুরসভা।
বর্ধমানের বাসিন্দা মলয় কবিরাজ প্রায়ই দুর্গাপুরে যাতায়াত করেন। তাঁর অভিযোগ, “এই হকারদের অবিলম্বে প্রতীক্ষালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া দরকার। অন্যান্য জায়গাতেও হকারদের সমস্যা আছে। তবে এখানকার মত এতটা নয়।” দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কলেজে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীরা বললেন, “আমরা তো জানিই না এটা যাত্রী প্রতীক্ষালয়। আমরা মাঝে মধ্যে এখান থেকে খাবারও কিনি। তবে জায়গাটা পরিষ্কার করা দরকার।” প্রতীক্ষালয় জুড়ে সার সার দোকান। চা, পান, গুটখা, ঠান্ডা পানীয় থেকে শুরু করে রুটি-পরোটাও মিলবে এখানে। বড় বড় উনুন জ্বালিয়ে সারাদিন ধরে চলে রান্না।
নিজস্ব চিত্র

রেল স্টেশন থেকে বেরিয়ে প্রতীক্ষালয়ের সামনের দিকে মিনিবাস ও অন্য দিকে বড় বাস এবং অটো-রিকশার স্ট্যান্ড। যাত্রীরা জানালেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষা করতে বাধ্য হন তাঁরা। সব থেকে বেশি সমস্যা হয় গ্রীষ্ম ও বর্ষার সময়ে। প্রতীক্ষালয়ে দাঁড়ানোর জায়গা পান না বেশির ভাগ যাত্রীই। বাধ্য হয়েই বৃষ্টির মধ্যে মাথায় ছাতা ধরে রাস্তাতেই দাঁড়াতে হয় তাঁদের। দোকানিরা অবশ্য ঝড় জলের দিনে বয়স্কদের বসার জন্য একটু জায়গা করে দেন।

উদয় চট্টোপাধ্যায় নামে এক যাত্রী বলেন, “অনেক দিন ধরে এখানে আসছি। বসা দুরের কথা এই প্রতীক্ষালয়ে দাঁড়ানোও দায়। বৃষ্টিতে জায়গা না মিললে ছাতা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। তা না হলে ভিজতে হয়। শরীর অসুস্থ থাকলেও উপায় নেই। দুর্গাপুরে আগের থেকে কত উন্নতি হয়েছে, অথচ এই জায়গাটা সেই একই রকম রয়ে গিয়েছে।” তবে যাত্রীদের অভিযোগ সত্ত্বেও উদাসীন পুরসভা। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ পুরসভার তরফে কোনও দিনই চোখে পড়েনি বলে জানালেন যাত্রীরা। অন্য দিকে, দোকানিরা বলছেন, “এ ভাবে ব্যবসা করার নিয়ম নেই তা জানি। কিন্তু আমাদেরও তো কিছু করার নেই।” তবে হকার উচ্ছেদ করতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান বলেন, “সত্যি এটা বড় সমস্যা। প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। এই সমস্যার দায় আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। তবে এবার আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে আহ্বান করে টেন্ডার ডেকেছি। আশা করছি তারা দায়িত্ব নিয়ে এই প্রতীক্ষালয় পরিষ্কার করবে এবং পরবর্তীকালে এই স্ট্যান্ডের দেখাশোনাও করবে।”
দুর্গাপুর বাস ওয়ার্কমেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তথা স্থানীয় কংগ্রেস নেতা স্বপন বন্দোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা কোনও দিন এই সমস্যার দিকে নজর দেয়নি। আজ হকারদের তুলবে কি করে? ওদেরও তো জায়গা দিতে হবে।”

Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.