|
|
|
|
|
|
|
|
রয়েল বেঙ্গল রহস্য |
জঙ্গলে ফেলুদা |
দু’ধারে ঘন জঙ্গল, ঘাড় উঁচু করে গাছগুলো দেখতে হয়, প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। গাছেদের লম্বা হাতে ধরা আকাশ, আর সেই ‘নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা...’ এমন অবাক-হওয়া নিয়েই ফিল্ম ইউনিটের জিপ পিচ-বাঁধানো রাস্তা পেরিয়ে, একটা ঢাল বেয়ে পৌঁছে গেল নদীর ধারে। জল শুকিয়ে গেছে অনেকটা, তাতে বালি পাথর নিষ্পত্র বৃক্ষ, তবু কী আদিগন্ত ব্যাপ্তি! ‘উত্তরাঞ্চলের এই হদিশটুকুই থাকবে ছবিতে, জঙ্গল বা নদীর নাম থাকবে না, মূল গল্পেও ছিল না’, শট নিতে নিতে খেয়াল করিয়ে দেন সন্দীপ রায়। শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মস ও সুরিন্দর ফিল্মস-এর প্রযোজনায় সত্যজিতের রয়েল বেঙ্গল রহস্য-এর শু্যটিং করতে এসেছেন উত্তরবঙ্গে, শুকনা-র জঙ্গল আর মহানন্দা নদীতে। জঙ্গলে ফেলুদা তো এই প্রথম? ‘নিশ্চয়ই। |
|
গোয়েন্দাগিরির সঙ্গে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেও সচেতন এ বারের ফেলুদা। বেণু-র (সব্যসাচী চক্রবর্তী) অভিনয়েও তার ছাপ। ওর ওয়াইল্ড লাইফ নিয়ে যে প্যাশন সেটা হাঁটাচলা-চেহারায় ছাপ ফেলছে, এ-গল্পের ফেলুদার সঙ্গে ও নিজেকে রিলেট করতে পারছে, তাই এত স্বতঃস্ফূর্ত হচ্ছে ওর অভিনয়।’ সায় সব্যসাচীর কথাতেও: ‘জঙ্গলে বন্যপ্রাণীরা অত্যন্ত সহজ সরল, কিন্তু আত্মরক্ষার তাগিদে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে যে কোনও সময়ে, তাই রহস্যের কিনারা করা ছাড়াও সদাসতর্ক থাকতে হয় ফেলুদাকে। এতে আমি অভ্যস্ত বলেই আর অভিনয় করতে হচ্ছে না।’ জঙ্গলের ভেতর কাজ করতে ভয় করছে না? তোপসে ওরফে সাহেব ভট্টাচার্য জানালেন ‘প্রথম-প্রথম করত, কিন্তু এমন ঘন সুন্দর জঙ্গলে শট দেওয়াটাই দারুণ আনন্দের, তখন আর সাপ-বিছে-জোঁক-লেপার্ড-হাতির ভয়টয় কাজ করে না।’ |
|
আর লালমোহনবাবু-র ভূমিকায় বিভু ভট্টাচার্য: ‘শিহরন তো হয়ই, এমন গা-ছমছমে জঙ্গল, তবে তা বৈচিত্রে এত সুন্দর যে ভয়ের কথা মনেই থাকে না।’ সঙ্গে শশাঙ্ক আর মাধবলাল-এর ডাকাবুকো চরিত্রে চুটিয়ে অভিনয় দেবেশ রায়চৌধুরী আর সঞ্জীব সরকারের। শু্যটিংয়ের মধ্যেই হঠাৎ মেঘ, প্রবল বর্ষণ, আবার বৃষ্টি থামতেই ঝলমলে রোদ... ‘জঙ্গল আসলে ফেলুদা-র গল্পের মতোই রহস্যময়’, মন্তব্য সন্দীপ রায়ের। |
ছবি: হীরক সেন। |
রবীন্দ্র-সংগ্রহ |
বেঙ্গল সেক্রেটারিয়েট লাইব্রেরিতে ছিল ব্রাহ্ম মিশন, ইন্ডিয়ান প্রেস, শান্তিনিকেতন প্রেস থেকে ছাপা বেশ কিছু বই। পরে এগুলি এবং নানা ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে কিছু রবীন্দ্র পুস্তক আসে জাতীয় গ্রন্থাগারে। জাতীয় গ্রন্থাগারের রবীন্দ্র সংগ্রহে আছে সিয়াম: প্রথম দর্শনে-র ইংরেজি অনুবাদের পাণ্ডুলিপি ‘টু সিয়াম’, ১৯৩০-এ প্যারিসে কবির ছবির প্রদর্শনী উপলক্ষে লেখা ‘মাই পিকচার্স’-এর খসড়া, ডোয়ার্কিন থেকে প্রকাশিত দিনেন্দ্রনাথের সঙ্গে যৌথ ভাবে করা মিউজিক শিট এবং জ্যোতিরিন্দ্রনাথের করা তাঁর গানের বেশ কিছু স্বরলিপি। কিছু প্রথম সংস্করণ, যেমন চয়নিকা (১৯০৯) বা নন্দলাল চিত্রিত গীতাঞ্জলি অ্যান্ড ফ্রুট গ্যাদারিং (১৯২৭)। ১৯১৫-র এক ফোলিওতে রদেনস্টাইন অঙ্কিত রবীন্দ্রনাথের ছ’খানি বিরল চিত্র রয়েছে (সঙ্গে তারই একটি)। এ সব নিয়েই জাতীয় গ্রন্থাগার আয়োজন করেছে এক বিশেষ প্রদর্শনী। স্বপন মজুমদার পরিকল্পিত এই প্রদর্শনীটি আজ সকাল ১১টায় ভাষা ভবনে উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার। চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত, ১০-৫টা। আর ৮ জুন ভাষা ভবনে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় রবীন্দ্রগান শোনাবেন লোপামুদ্রা মিত্র ও দেবাশিস রায়চৌধুরী। |
তাক-লাগানো |
|
পাখি যেমন খড়কুটো দিয়ে বাসা সাজায়, সুনন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায় তেমন খুঁটিনাটি নিয়ে নিজের প্রদর্শনী সাজান। ম্যাজিক থলি যেন তাঁর হাতে, তাতে অফুরান জিনিসের ভাণ্ডার, সেখান থেকেই এটা নিয়ে ওটার সঙ্গে মিলিয়ে-মিশিয়ে আশ্চর্য কোলাজ! ডিজিটাল কোলাজ, তাক-লাগানো, হাঁ করে দেখার মতো। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী সুনন্দিনী গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে সিগাল বুকস-এর বইপত্রকে এমন ভাবে সাজান যে তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও নিয়ে আসে। এ বারে দ্বিতীয় প্রদর্শনীতে তাঁর মনোযোগ সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ‘মিনিয়েচার’ শিল্পকর্মে। ৮৬টি কোলাজের কাজ নিয়ে ১ জুন সন্ধে সাড়ে ছ’টায় শুরু হল প্রদর্শনী, সিগাল আর্টস অ্যান্ড মিডিয়া রিসোর্স সেন্টার-এ। চলবে ৩ জুলাই অবধি, ১১-৮টা।
|
নবীন দল |
প্রথমে বন্ধুদের বাড়িতে জমে উঠত আড্ডা। তাতে থাকত ম্যান্ডোলিন, দোতারা ইত্যাদি লোকবাদন, সঙ্গে ছবির আলোচনা। অতঃপর তৈরি হল দল ‘পেন্টার্স আই’। ওরা পাঁচ জন জয়দীপ ঘোষ, বিশ্বজিৎ মিত্র, শুভ বসু, সাহিত্য মণ্ডল আর গৌতম সরকার। এ বারে ওদের ছবি নিয়ে প্রথম প্রদর্শনী আকাদেমির দক্ষিণ গ্যালারিতে। অ্যাক্রিলিক এবং মিশ্র মাধ্যমের প্রায় কুড়িটি ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, সন্ধে ৬ টায়। সূচনায় থাকবেন যোগেন চৌধুরি ও শুভাপ্রসন্ন। প্রধান অতিথি অনুপ মতিলাল। এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র। প্রদর্শনী চলবে ১৫ জুন পর্যন্ত, ৩-৮টা।
|
নানা মুখ |
বাংলা থিয়েটারের বড় মাপের মানুষ, যিনি আমাদের থিয়েটার ভাবনাকেই অনেকখানি ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই বাদল সরকারের প্রয়াণের পর স্বাভাবিক ভাবেই বেশ কিছু শোকসভা হচ্ছে। হওয়ারই কথা। কিন্তু মানুষটির কাজ নিয়ে থিয়েটারের ছাত্রছাত্রী আর আগ্রহীদের জন্য গভীরে গিয়ে আলোচনারও তো দরকার আছে এখন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যবিভাগ ৮ জুন বিকেল ৪-৩০ থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেছে। বিষয়: বাদল সরকারের নানা মুখ। বলবেন রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, দত্তাত্রেয় দত্ত, বিশাখা রায়, ভারতী চট্টোপাধ্যায়। শেষে বাদল সরকারের দল শতাব্দী অভিনয় করবে তাঁর রচিত এবং নির্দেশিত একটি নাটক।
|
কোরাস |
বছর আটেক আগে কিশোরীদের গানের দল ‘সোনালি চড়ুই’ দিয়ে আরম্ভ হয়েছিল যাত্রা। সেই সূত্র ধরেই সম্প্রতি (২৯ মে) কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে মেয়েদের নতুন গানের দল ‘কোরাস’-এর সূচনা হল। টেলিকমের ব্যস্ত অফিসার অতনু ঘোষের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পনেরো থেকে পঞ্চান্ন বছর বয়সি মহিলাদের নিজস্ব এই গানের দল কিছুটা স্বতন্ত্র। প্রধানত নিজেদের লেখা ও সুর করা গানই তারা পরিবেশন করে, সঙ্গে থাকে রবীন্দ্রসংগীত ও লোকসংগীত। অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রির লভ্যাংশ তারা ব্যয় করে সমাজসেবায়।
|
বর্জ্য থেকে শিল্প |
পুরনো কাপড়, বোতলের ছিপি, স্ক্রু, এমন সব বাতিল জিনিসকে আমরা বর্জ্য হিসেবেই দেখি। পরিবেশের জন্যও এগুলি সমস্যা। অথচ এ সব থেকেই এখন তৈরি হচ্ছে চোখ জুড়ানো গয়না। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে মাথায় রেখে মির্জা গালিব স্ট্রিটে সাশায় সম্প্রতি শিল্পীরা করে দেখালেন এই শিল্পকর্ম। রিসাইকল জুয়েলারির অভিনব প্রস্তুতির সঙ্গেই ছিল পরিবেশ-বন্ধু আরও নানা হস্তশিল্প সামগ্রী। শিল্পকর্মগুলি প্রদর্শনের জন্য এখন রয়েছে সাশা বিপণিতে। ওদিকে গত কাল বিড়লা শিল্প ও কারিগরি সংগ্রহালয়ে সকাল থেকে ছাত্রছাত্রীরা মেতে রইল পরিবেশ সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠানে। এই সঙ্গে ‘ফ্রেশ ওয়াটার স্কেয়ারসিটি’ শীর্ষকে বললেন স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ-এর নির্দেশক দীপঙ্কর চক্রবর্তী। আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কে পি বসু সভাঘরে সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর উদ্যোগে আয়োজিত হল ‘সবুজ প্রযুক্তি ও পরিবেশ’ শীর্ষক আলোচনাচক্র।
|
‘বড়দা’ |
‘তুমি চলে যাবার পর/ সারাদিন বৃষ্টি হয়ে কেঁদেছিলাম’, ‘আকাশ এত মেঘলা/ যেও নাকো একলা’, ‘জলভর কাঞ্চনকন্যা/জলে দিয়া মন’, ‘তুমি আসবে এ তো জানতাম’, ‘টাপুর-টুপুর সারা দুপুর/ নূপুর বাজায় কে’-- স্বর্ণযুগের এ সব বাংলা গানের সফল গীতিকার সুনীলবরণ দে (৭৯) চলে গেলেন ৩১ মে। শেষ জীবনে হারিয়েছিলেন দৃষ্টিশক্তি। ওঁর বেশির ভাগ গানের সুরকার সুধীন দাশগুপ্ত। তিনি তাঁকে ‘বড়দা’ বলে ডাকতেন, আর হেমন্ত বলতেন ‘কবি’। এ ছাড়াও সুনীলবরণ গান লিখেছেন সুরকার প্রবীর মজুমদার, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনল চট্টোপাধ্যায়, রতু মুখোপাধ্যায়দের। ফিল্মের গানও লিখেছেন-- অজিত গাঙ্গুলির ‘জয় মা তারা’ (’৭৮), অগ্রদূত পরিচালিত ‘দিন আমাদের’ (’৭৭)। মৃত্যুর মাসখানেক আগে সুনীলবরণ তাঁর শেষ সাক্ষাৎকারে বড় দুঃখের সঙ্গে বলেছিলেন ‘মাঝে মাঝে মন চায় আবার গান লিখি। কিন্তু এও ঠিক, কার জন্য গান রচনা করব! প্রায় সবাই তো চলে গেলেন একে একে।’ শেষ পর্যন্ত ‘বড়দা’ও চলে গেলেন গানের ওপারে।
|
অনলাইনে শিক্ষা |
নিজের সঙ্গীত-জ্ঞানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা শুরু করলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সঙ্গীত শেখানোর অনুরোধ আসছিল। তাই তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শুরু করলেন এই ব্যবস্থা। www.shrutinandan.org নামের সাইটে ক্লিক করলেই পৌঁছে যাবেন পণ্ডিতজির অন্দরমহলে। প্রথম বিভাগ আরোহী, রাগ সঙ্গীত শিখতে আসা সদ্য শিক্ষার্থীদের জন্য। দ্বিতীয় বিভাগ আস্থায়ী, যাঁরা নিয়মিত সঙ্গীত চর্চা করেন তাঁদের জন্য। আর তৃতীয় বিভাগ আনন্দী, সঙ্গীত নিয়ে যাঁরা উৎসাহীদের জন্য। পণ্ডিতজি বলেন, ‘শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে এই প্রথম এমন অনলাইন ক্লাস চালু হল। ইতিমধ্যেই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ২৫০০ জন শিখতে চেয়েছেন।’
|
থিয়েটার এখন |
‘বিকল্প সংস্কৃতির চর্চা ক্রমেই দুঃসাধ্য থেকে আরও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। সাধ্যের ঘাটতি যে শুধুই আর্থিক, তা কিন্তু নয়। সঙ্গে সঙ্গে রুচির, মানসিকতার, আদর্শের।’ বাংলা নাটক নিয়ে এমন তর্ক-তোলা মন্তব্য রুশতী সেন-এর, তাঁর ফালতু লেখায় ফালতু কথা বইটিতে। প্রকাশনা সংস্থা সূত্রধর এ-বইটির বিষয়ভাবনাকে কেন্দ্রে রেখে বাংলা থিয়েটারের হালফিলের গতিবিধি নিয়ে ফের বিতর্ক তৈরিতে উদ্যোগী। ৭ জুন সন্ধে ৬টায় অ্যাকাডেমি-র আলোচনাকক্ষে একটি আলোচনাচক্র, অংশ নেবেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত কৌশিক সেন দেবাশিস মজুমদার।
|
নট্ট-কাহিনি |
বরিশালের মাচরং গ্রামে গান-বাজনার খ্যাতি ছিল বৈকুণ্ঠ নট্ট-র। পুরুষানুক্রমিক ব্যবসায় আসার কথা ভাবেননি তাঁর পৌত্র মাখনলাল, বরং শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ১৯৩০-এর দশকে নট্টরা শোভাবাজারে গঙ্গার ধারে গদিঘর পত্তন করেন। পঞ্চাশের গোড়ায় বাবা যোগেন প্রয়াত হলে, মাত্র কুড়ি বছর বয়সেই দলের দায়িত্ব নিতে হয় মাখনকে। তার পর থেকে ষাট বছর ধরে মাচরং বৈকুণ্ঠ সংগীতসমাজ বা নট্ট কোম্পানি যাত্রাপার্টির সঙ্গে তাঁর নাম এক নিশ্বাসে উচ্চারিত হয়ে এসেছে যাত্রা চর্চার ক্ষেত্রে সমার্থক প্রতিষ্ঠান হিসেবে। গত ৫ জুন পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের আনুকূল্যে ঐকতান মঞ্চে মাখনলালের একাশি বছরের জন্মদিনে সংবর্ধনা উপলক্ষে প্রদর্শিত হল ওয়ান ফর কোম্পানি: দ্য স্টোরি অব মাখনলাল নট্ট নামে একটি তথ্যচিত্র। তৈরি করেছেন গৌরব ঘোষ, জে এন ইউ থেকে যাত্রা নিয়েই তাঁর এম ফিল। নট্ট কোম্পানির পুতুলশোভিত সুপ্রাচীন অট্টালিকা ও মাখনলালের এখনকার দৈনন্দিন ক্যামেরার নৈপুণ্যে তুলে ধরেছেন দেবলীনা। নট্ট কোম্পানি ও মাখনলাল নট্ট বিষয়ে সূচনা-ভাষণ দিলেন বিশিষ্ট যাত্রা-গবেষক প্রভাতকুমার দাস।
|
শেষের কবিতা |
একটি ছিলই, তা কিংবদন্তিও বটে। যোগ হল আরও একটি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতার শ্রুতিপাঠ। সুমন মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় অমিত-লাবণ্যের কাহিনি পুনর্বার ধরা পড়ল তিনটি সিডি-র অ্যালবামে। প্রযোজনা ইনার সার্কল ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড। নিবেদনে ওরিয়ন এন্টারটেনমেন্ট। চরিত্রায়ণে তারকা সমাবেশ। ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, চিত্রা সেন, দেবশংকর হালদার, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সুজন মুখোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্রেরা যেমন কণ্ঠ দিয়েছেন, তেমনই গান গেয়েছেন শ্রাবণী সেন ও সুপ্রতীক দাস। সঙ্গীত পরিচালনা এবং আয়োজনে প্রবুদ্ধ বন্দোপাধ্যায়। ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শেষের কবিতা’র প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এই অ্যালবামে উপস্থাপনা একটা নতুন, সমকালীন ‘সাউন্ড’ পেয়েছে, বিষয়বস্তুও ক্ষুণ্ণ হয়নি, সেটাই এর সবথেকে উজ্জ্বল দিক’, বললেন ওরিয়ন-এর সিইও শুভজিৎ রায়।
|
যথা-ইচ্ছা |
|
রক্তে আছে অভিনয়। এবং, নাট-মঞ্চের ডাক। ফলে, পৌলমী বসু যে এক মঞ্চ থেকে আর এক মঞ্চে, এক চরিত্র থেকে অন্য চরিত্রের মধ্যে অনায়াস যাওয়া-আসা করবেন, তাকে বিচিত্র মনে হওয়ার কারণ নেই। ‘সুপারি কিলার’ নাটকে আছেন, আগামী রবিবার অ্যাকাডেমিতে নামছেন আর এক স্মরণীয় চরিত্রে। নাটক, ‘ইচ্ছের অলিগলি’। শতবর্ষ-ছোঁয়া টেনেসি উইলিয়ামসের নাটক ‘আ স্ট্রিটকার নেমড ডিজায়ার’-এর রূপান্তর। অনুবাদ-নির্দেশনায় অবন্তী চক্রবর্তী। ‘আরশি’-র প্রযোজনায় এই নাটকে তিনি ‘স্টেলা’। ‘অবন্তী যে ভাবে চরিত্রটাকে ইন্টারপ্রেট করেছে, সেটা আমার কাছে একটা উপহার। আমি থ্রিলড’, জানালেন পৌলমী। এই নাটকে তাঁর সঙ্গে আছেন সেঁজুতি মুখোপাধ্যায় (ব্লঁশ) এবং অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় (স্ট্যানলি)। ‘সুপারি কিলার থেকে স্টেলা, দুই মেরুর দু’টি চরিত্র। মাঝখানে আমি। আর, বাপির কয়েকটা নাটক তো আছেই। এত রকম কাজ করতে করতে মনে হচ্ছে, বেঁচে আছি, ভীষণ ভাবে বেঁচে আছি’ হাসলেন পৌলমী। ‘বাপি’র পরিচয়ের জন্য কুইজ লাগবে না। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। |
|
|
|
চিদানন্দ |
সত্যজিৎই একদিন বলল একটা ফিল্ম সোসাইটি করলে কেমন হয়... আমরা উঠে পড়ে লাগলাম।’ চিত্রভাষ-এ এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন চিদানন্দ দাশগুপ্ত। ’৪৪- ’৪৫ নাগাদ সত্যজিতের সঙ্গে নিয়মিত ছবি দেখা শুরু করার পর বুঝতে পারেন, হলিউডের বাইরে অন্য ধরনের ছবির যে শিল্প-সার্থকতা, তা অন্যান্য শিল্প মাধ্যমের সঙ্গেও সমকক্ষতার দাবি রাখে। তাই চিদানন্দ চাইলেন শিল্পসম্মত ছবি দেখার জন্যে দর্শকের একটা মন তৈরি করে দিতে। ১৯৪৭, স্বাধীনতার বছরেই ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি তৈরি করলেন তিনি, সত্যজিৎ রায় মনোজেন্দু মজুমদার বংশী চন্দ্রগুপ্ত প্রমুখকে নিয়ে। তাঁর অক্লান্ত চেষ্টাতেই সারা দেশের সাতটি ফিল্ম সোসাইটি নিয়ে তৈরি হল ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, ১৯৫৯-এ। সিনেমায় দর্শকের শিল্পরুচি তৈরির জন্যে সংগঠক ছাড়াও তাঁর ভূমিকা সমালোচকের। দ্য সিনেমা অব সত্যজিৎ রায়, দ্য পেন্টেড ফেস: স্টাডিজ ইন ইন্ডিয়াজ |
|
পপুলার সিনেমাজ, বা এ রকম বিষয়ে আরও বই লিখেছেন। শেষ বই সিইং ইজ বিলিভিং-এ সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল-এর সঙ্গে ছিল আদুর গোপালকৃষ্ণন আর শ্যাম বেনেগালকে নিয়েও আলোচনা। ব্ল্যাক কমেডি বা হিউমার-এ মুড়ে কাহিনিচিত্র করেন দু’টি: ‘বিলেত ফেরত’ (’৭২) ও ‘আমোদিনী’ (’৯৪)। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচিত্র: ‘দ্য ডান্স অব শিবা’, ‘দ্য পোর্ট্রেট অব আ সিটি’। ‘স্প্যান’ ও ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন একদা। সাহিত্য চর্চাও করতেন, ‘বনলতা সেন’-সহ জীবনানন্দ দাশের কবিতা অনুবাদ করেন। জীবনানন্দেরই ভাইঝি সুপ্রিয়া ছিলেন তাঁর স্ত্রী। সিনেমার উত্তরাধিকার কন্যা অপর্ণা আর দৌহিত্রী কঙ্কণা-য়। সদ্যপ্রয়াত মানুষটি সত্যজিতের সমবয়সি, শিলং-এ এক ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম, ১৯২১। গত কাল তাঁকে স্মরণ করা হল নন্দন-এ। |
|
|
|
|
|
|
|