কল্যাণী মেডিক্যাল
পঞ্চায়েতের গুদামঘরে চলছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের গুদামঘরে চলছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কোনও চিকিৎসক নন, রোগী দেখছেন ফার্মাটিস্ট। চিত্রটি দেখা যাবে উলুবেড়িয়া ১-ব্লকের অধীন ধুলাসিমলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির নিজস্ব ভবন ২০০৮ সালে ভেঙে পড়ে যায়। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় ধুলাসিমলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের গুদামঘরটিকেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসাবে অস্থায়ীভাবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। কথা ছিল নতুন ভবন তৈরি হলে সেখানেই ফের শুরু হবে চিকিৎসার কাজ।
পরিত্যক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
কিন্তু প্রায় তিন বছর কেটে গেলেও নতুন ভবন তৈরি হয়নি। ফলে এখনও গ্রাম পঞ্চায়েতের গুদামঘরেই চলছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। শুক্রবার এখানে এসে দেখা গেল গুদামঘরটি টিনের ছাউনি দেওয়া। জানালায় লোহার গ্রিল থাকলেও পাল্লা ভাঙা। এই ঘরেই রাখা হয়েছে ফ্রিজ। তাতে রয়েছে পালস্ পোলিও টিকা-সহ নানা ধরণের প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন এবং ওষুধপত্র। মেঝেতেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ওষুধপত্র। গুদামঘরেরই কোনে এক চিলতে ত্রিপল ঘিরে করা হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ‘স্টোর রুম’।
প্রতিদিন শতাধিক গ্রামবাসী এখানে আসেন চিকিৎসার জন্য। নিয়মানুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বর্হিবিভাগ চালু হওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ দিন বর্হিবিভাগ চালু হয় তারও পরে। রোগীরা এসে অপেক্ষা করেন। এখানে রয়েছেন একজন ফার্মাসিস্ট, একজন নার্স, একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী এবং একজন ঝাড়ুদার। ফার্মাটিস্ট অমিয় রায় রোগী দেখছিলেন। ঝাড়ুদার ওষুধ দিচ্ছেন। বাকি দু’জন কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তরে অমিয়বাবু বললেন, “নার্স ছুটি নিয়েছেন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী পালস পোলিও টিকাকরণের কাজে গিয়েছেন চণ্ডীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।”
২০১০ সালের অগস্ট মাস থেকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। অমিয়বাবু বলেন, “ছোটখাটো সব রকমের রোগের চিকিৎসা আমিই করি। বড় কিছু হলে রেফার করে দিই।” দেরিতে আসার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আমরা ঠিক সকাল ৯টার সময়েই হাজির হয়ে যাই। বিকেল আড়াইটা পর্যন্ত থাকি। ওই সময়ের মধ্যেই সব রোগী দেখা হয়ে যায়।”
গুদামঘরে চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
ধুলাসিমলা পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের গোপীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তিন বছর আগে যখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন ভেঙে পড়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। উলুবেড়িয়ার তৎকালীন মহকুমাশাসক এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা আমাকে অনুরোধ করেন সাময়িকভাবে বিকল্প ব্যবস্থা করার। তখন আমি গ্রাম পঞ্চায়েতের গুদামঘরটি ব্যবহার করতে দিই।”
এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শনে এসে এখানকার বেহাল দশা নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ)-এর সঙ্গে কথা বলেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক পুলক রায়। তিনি বলেন, “শীঘ্রই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও আলোচনা করব।” বিএমওএইচ সম্রাট রায়চৌধুরীর বক্তব্য, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেহেতু চিকিৎসক নেই তাই ওখানকার ফার্মাটিস্টকেই সাধারণ কিছু রোগের চিকিৎসা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক চেয়ে স্বাস্থ্য দফতররের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, “কাজ চলছে’’।
ছবি: হিলটন ঘোষ।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.