তৃষ্ণা নিবারণে জল সরবরাহের মতো অতি জরুরি ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে রাজ্যে। নির্দিষ্ট এলাকায় পানীয় জলের সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করতে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার কথা ভাবছে নতুন সরকার।
নির্বিচারে ভূগর্ভের জল তুলে নেওয়ার ফলে বাংলায় জলভাণ্ডারের
অবস্থা শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত ভূগর্ভস্থ জলের ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রায় দেউলিয়া অবস্থার দিকে নজর রেখেই পানীয় জল সরবরাহের জন্য নতুন নীতি তৈরির উপরে জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে ‘ভিশন টোয়েন্টি-টোয়েন্টি’ নামে একটি খসড়া রূপরেখাও তৈরি করেছে তাঁর দফতর। ২০২০ সাল পর্যন্ত রাজ্যের কোথায় কোথায় পানীয় জলের পরিমাণ কত থাকতে পারে, কোথায় কোথায় জলে আর্সেনিক ও ফ্লোরাইডের সমস্যা আরও বাড়তে পারে, কোন কোন অঞ্চলেই বা পানীয় জলের উৎস ক্রমশ শুকিয়ে যেতে পারে তার খতিয়ানের ভিত্তিতেই তৈরি করা হয়েছে ওই রূপরেখা। তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত পরিকল্পনা রূপায়ণের সময়েই জল সরবরাহ ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন হবে।
শুক্রবার পানীয় জল প্রকল্পের ওই খসড়া রূপরেখা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি বা বেসু, খড়্গপুরের আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন সুব্রতবাবু। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড বা কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদের প্রাক্তন এক অধিকর্তাও। জল সরবরাহের প্রযুক্তি জানা কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিও আলোচনায় ছিলেন। এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রী বলেন, “কলকাতা বাদে প্রায় সব জেলাতেই পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে।” তিনি জানান, এক-এক জেলার সমস্যা এক-এক রকমের। কোথাও পানীয় জলে আর্সেনিকের সমস্যা রয়েছে। কোথাও আছে ফ্লোরাইডের সমস্যা। কোথাও কোথাও আবার পানীয় জলের উৎসই ঠিকমতো নেই। সুব্রতবাবু বলেন, “এই সব সমস্যার কথা মাথায় রেখেই জল সরবরাহের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে আমাদের।”
পানীয় জলের সমস্যার প্রসঙ্গে জঙ্গলমহলের প্রসঙ্গও তোলেন সুব্রতবাবু। তিনি জানান, জঙ্গলমহলে পানীয় জলের সমস্যা সম্পূর্ণ অন্য ধরনের। সেখানে নদীর জলকে সারা বছর পানীয় জলের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। তাই জঙ্গলমহলে জল ধরে রাখার জন্য অন্য ব্যবস্থা করতে হবে। |