পুলিশ এল না, সদ্যোজাতকে হাসপাতালে নিলেন গ্রামবাসীই
বর পৌঁছেছিল পুলিশের কাছে। সব জেনেও শুক্রবার কাকভোরে উদ্ধার হওয়া সদ্যোজাত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেনি পুলিশ। এমনই অভিযোগ পুরুলিয়া মফস্সল থানার দুমদুমি গ্রামের বাসিন্দাদের। শেষ পর্যন্ত বাসিন্দাদের চেষ্টায় ওই শিশুকন্যাকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার কাকভোরে রাস্তার ধারে একটা গাছের নীচ থেকে জিলাপি মাহাতো নামে গ্রামেরই এক প্রৌঢ়া ওই শিশুকে উদ্ধার করে গ্রামে নিয়ে আসেন। ওই প্রৌঢ়ার কথায়, “আমি গরু নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি গাছের নীচে তোয়ালে জড়ানো অবস্থায়় কিছু একটা পড়ে আছে। কাছে গিয়ে দেখি একটি ফুটফুটে বাচ্চা। গায়ে হাত দিতেই কেঁপে উঠল। এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে ওই শিশুকে গ্রামে নিয়ে আসি।”
গ্রামবাসী শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, “শিশুটির শরীরে পিঁপড়ে ধরে গিয়েছিল। ওকে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে প্রথমে পুলিশে খবর দিই।” তাঁর অভিযোগ, “শিশুটিকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে তা নয়, ওরা বলে, ‘আপনারাই হাসপাতালে ভর্তি করে দিন।” গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “সাত সকালে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি না পেয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও বিধায়ক কেপি সিংহদেওকে খবর দিই। খবর পাঠাই চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সনের কাছে।”
পুরুলিয়া হাসপাতালে উদ্ধার হওয়া শিশু। শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন সুজিত মাহাতো।

পুরুলিয়া জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন দীপক দাস বলেন, “গ্রামবাসীরা আমাকে যখন বিষয় জানিয়েছিলেন, ততক্ষণে বিধায়ক মহকুমাশাসকের (সদর) সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেলেছিলেন। তিনি পুরুলিয় ২ ব্লকের বিডিওকে গ্রামে গাড়ি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে খবর পাওয়ার পরেই পুলিশের উচিত ছিল শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। এ নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে কথা বলব।”
এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আলাদা খাটে অঘোরে ঘুমোচ্ছে শিশুটি। নার্স মোনালিসা জানা, সুমনা ষড়ঙ্গী, তপশ্রী মিশ্র-সহ অন্যান্য নার্সরা শিশুটির পরিচর্যা করছেন। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ রমাদাস মুর্মু বলেন, “ওজন কম রয়েছে। কয়েক দিন তত্ত্বাবধানে রাখতে হবে।” হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তপন মাইতি বলেন, “চিকিৎসকেরা যতদিন মনে করবেন, ততদিন শিশুটি হাসপাতালে থাকবে। তার পরে নিয়ম অনুযায়ী শিশুকল্যাণ কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
ইতিমধ্যে গ্রামবাসীরা শিশুটির নামকরণও করে ফেলেছেন। পথের ধারে মিলেছে বলে বাসিন্দারা তার নাম রেখেছেন শকুন্তলা। আর নার্সরা তার নাম রেখেছেন সৃজনী। পুরুলিয়ার বিধায়ক কেপি সিংহদেও বলেন, “পুলিশ সব জেনেও কেন উৎসাহ দেখাল না, তা পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চাইব।”

Previous Story Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.