|
|
|
|
ইঞ্জিনিয়ার হয়ে মায়ের ঠোঙা তৈরি বন্ধ করতে চায় প্রমতোষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²ব্যারাকপুর |
টালির চালের এক চিলতে ঘর। চাল ফুটো হয়ে জল পড়ে। ফাটা টালির ফাঁক দিয়ে আসা আলোয় পড়তে ভালবাসে প্রমতোষ। বেশ একটা টেবিল ল্যাম্প গোছের মনে হয় তার। উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের ১নম্বর গুড়দহের মালাকার পাড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত রায় আর রিনা রায়ের ছেলে প্রমতোষ এ বার মাধ্যমিকে ৭৩৬ নম্বর পেয়ে জেলার অন্যতম এক কৃতী ছাত্র। শ্যামনগর কান্তিচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রটি মাধ্যমিকে শুধু নিজের স্কুলেই নয়, গোটা এলাকার সবকটি স্কুলের মধ্যেই সেরা হয়েছে। মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে মা, বাবা আর দিদিদের জন্য টিফিনের জমানো টাকায় মিষ্টি কিনে বাড়ি ফিরেছিল প্রমতোষ। |
|
ছবি: বিতান ভট্টাচার্য। |
বলে, “খুব ইচ্ছে করে মাকে একটা শাড়ি কিনে দিই, দিদিদের পছন্দের জিনিস আর বাবাকে একটা ভাল কাঠের কাজের সরঞ্জামের বাক্স। কিন্তু ওটা এখনও আমার কাছে স্বপ্ন। কিছু কেনার কথা ভাবলেই শুধু মনে পড়ে যায় আমরা খুব গরিব।” সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। প্রশান্তবাবু কাঠের মিস্ত্রি। কিন্তু নিয়মিত কাজ নেই। যেদিন কাজ জোটে সেদিনই আয়। সংসার টানতে ঠোঙা বানান রিনাদেবী। তাতেও সংসার চলে না। তাই ছোট দিদিও সেলাই করে সংসারে সাহায্য করে। আর প্রমতোষও পড়ার ফাঁকে মায়ের সঙ্গে হাত লাগায় ঠোঙা বানানোয়। বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় সে। তাই উচ্চমাধ্যমিক দিয়েই আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সেই স্বপ্ন সার্থক করতে গেলেও যে টাকার প্রয়োজন তা নেই প্রশান্তবাবুর। ছেলের কৃতিত্বে গর্বিত গরিব কাঠমিস্ত্রির কথায়, “ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখে ছেলেটা। সবাই মিলে খেটেখুটেও সারা মাসে চার হাজার টাকার বেশি রোজগার করতে পারি না। কোনও মাসে তাও হয় না। কি করে ছেলে-মেয়ের পড়ার খরচ জোগাব বলতে পারেন?” |
|
|
|
|
|
|