লালগড়ে আইটিআই তৈরি করবে কেন্দ্র
মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (আইটিআই) গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল কেন্দ্রীয় সরকার। একই সঙ্গে গড়ে তোলা হবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সেন্টারও (আইটিসি)। কম সময়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই সব এলাকার বেকার যুবক-যুবতীরা যাতে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে পরিকাঠামো তৈরি করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করে দিতে হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একটি আইআইটি ও দু’টি আইটিসি গড়ে তোলা হবে লালগড়ে। ইতিমধ্যেই জমি দেখার কাজ প্রায় শেষের পথে। কারিগরি প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামো তৈরির খরচের ৭৫ শতাংশ অর্থ দেবে কেন্দ্র। বাকি ২৫ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করবে রাজ্য। প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের ভাতাও দেওয়া হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দু’টি বিভাগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আইটিআই-এ এক হাজার ও স্বল্প-মেয়াদি প্রশিক্ষণে ৪ হাজার মিলিয়ে বছরে মোট ৫ হাজার ছাত্রছাত্রীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শঙ্কর হালদার বলেন, “জমি দেখার কাজ প্রায় শেষের পথে। শীঘ্রই প্রকল্প রূপায়ণের ব্যবস্থা হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আইটিআইয়ের জন্য ৫-৬ একর জমির প্রয়োজন। এক ও দু’বছরের পাঠ্যক্রমে ফিটার, মেশিনিস্ট, মোটর ভেহিকেলস মেকানিক, কার্পেন্টার-সহ বিভিন্ন বিভাগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এই প্রতিষ্ঠানে। পশ্চিম মেদিনীপুরে আগে থেকে ৪টি আইটিআই রয়েছে। লালগড়ে আরও একটি তৈরি হলে আইটিআইয়ের সংখ্যা হবে ৫। আর জেলায় আইটিসি রয়েছে ২টি। আরও ২টি আইটিসি গড়া হলে জেলায় এই ধরনের প্রতিষ্ঠান হবে ৪টি। এত দিন শহরাঞ্চলের মুষ্টিমেয় ছাত্রছাত্রীই এই প্রশিক্ষণের সুযোগ পেতেন। লালগড়ে প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানগুলি তৈরি হলে প্রত্যন্ত এলাকার বহু যুবক-যুবতী সেই সুযোগ পাবেন। বাড়বে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতের ৯টি রাজ্যের ৩৪টি জেলা ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রতিটি জেলাতেই কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ায় তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩২ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকেও নির্দেশ পাঠিয়েছেন রাজ্যের টেকনিক্যাল এডুকেশন ট্রেনিং বিভাগের সচিব মনোজকুমার অগ্রবাল। তার পরেই জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। জমি দেখা ও দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ নিয়ে আলোচনা হয়। অনুন্নয়নই মাওবাদী প্রভাব বাড়ার অন্যতম কারণ হিসাবে প্রায় সব মহলে স্বীকৃত। শিক্ষার হার কম, শিল্প নেই। সেচও বেহাল। কৃষি-শিল্প দুই-ই দুর্বল হওয়ায় মানুষের হাতে তেমন কাজ থাকে না। ফলে স্বনির্ভর হওয়া দূরের কথা, দু’বেলা খাবার জোটাতেই মানুষকে হিমসিম খেতে হয়। এ রকম ‘পিছিয়ে পড়া’ এলাকার বেকার যুবক-যুবতীরা হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ পেলে উপকৃত হবেন বলে প্রশাসন আশাবাদী। প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্র দেওয়া হবে। তাতে ঋণও মিলবে সহজে। এ ভাবেই স্বাধীন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হবে। মাওবাদী প্রভাবও খর্ব হবে।
Previous Story Medinipur Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.