|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা
নিত্য যন্ত্রণা |
বাজার-রাজ |
দেবাশিস দাস |
মাত্র সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া রাস্তা। তারও দু’পাশ জুড়ে রোজ সকালে বাজার বসে। দুপুর পর্যন্ত পুরোদমে চলে বাজার। ফলে যানজটে আটকে পড়েন অফিসযাত্রী, ছাত্রছাত্রী ও নিত্যযাত্রীরা। সোনারপুর-চকবেড়িয়া রোডের এটিই নিত্যদিনের ছবি। এই রাস্তাটিই শহর সোনারপুরের সঙ্গে সোনারপুরের গ্রামীণ অঞ্চলের যোগাযোগ রক্ষা করছে।
দীর্ঘ দিন ধরে সোনারপুর-চকবেড়িয়া রোডের ঘাসিয়ারা মোড় থেকে পদ্মমধু এলাকা পর্যন্ত রোজ সকালে নিয়মিত বাজার বসে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে এই রাস্তাটি সোনারপুর সংলগ্ন পঞ্চায়েত এলাকায় মিশেছে। সোনারপুর থেকে ঘটকপুকুর যাওয়ার জন্য বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা এই রাস্তা ব্যবহার করেন। দুই ২৪ পরগনার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রেও এই রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। |
|
বাসিন্দাদের অভিযোগ, যত দিন যাচ্ছে বাজারের এলাকা বেড়েই চলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে রোজ সকালে এই ভাবেই বসি। আমাদের কোনও কমিটি নেই।” এ রকম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দু’ধারে বাজার গড়ে উঠল কী ভাবে?
সোনারপুর দক্ষিণের নব-নির্বাচিত বিধায়ক তৃণমূলের জীবন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতি দিন সকালে বাজারের জন্য ঘাসিয়ারা সংলগ্ন এলাকার রাস্তার শোচনীয় অবস্থা হয়। এত দিন বামফ্রন্টের মদতেই বাজার বেড়েছে। অনেকের রুজি-রুটি এর সঙ্গে যুক্ত। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।” এই অভিযোগ অস্বীকার করে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বললেন, ‘‘ঘাসিয়ারা এলাকায় একটি আধুনিক বাজার তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। রাস্তার পাশের ব্যবসায়ীদের সেখানে পুনর্বাসন দেওয়া যেতে পারে।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তাটিও অবহেলিত। দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। রয়েছে দখলদারির সমস্যাও। জন প্রতিনিধিদের বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বাসিন্দা আশিস মৈত্রের কথায়: “দিনের ব্যস্ত সময়ে এই রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই এখানে।” রাজপুর- সোনারপুর পুর এলাকার মধ্য দিয়ে গেলেও এই রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। পুরসভার ১২ নম্বর ওয়াডের্র কাউন্সিলর তৃণমূলের সুজিত মণ্ডলের কথায়: “দীর্ঘ দিন ধরে পথচারীদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। এলাকায় একটি আধুনিক বাজারের প্রয়োজন। তবে জায়গার অভাবে তা করা যাচ্ছে না।” |
|
বাসিন্দাদের একাংশের বাড়ির কাছেই কেনাকাটি সেরে নেওয়ার প্রবণতা থেকে পুর এলাকার যত্রতত্র বাজার গজিয়ে উঠছে বলে মনে করেন পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের ইন্দুভূষণ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়: “রাস্তার পাশে গজিয়ে ওঠা এই ধরনের বাজারগুলিকে সরিয়ে এক জায়গায় নিয়ে আসার কথা ভাবছে পুরসভা।” সঙ্কীর্ণ এই রাস্তায় বাজার বসার সমস্যার কথা জানেন পূর্ত দফতরের কর্তারাও। বারুইপুর মহকুমার পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার প্রবাল সেনগুপ্ত বলেন, “সোনারপুর-চকবেড়িয়া রোডের মতো সঙ্কীর্ণ রাস্তার দু’ধার জুড়ে বাজার বসায় সমস্যা হয়। কিন্তু সকলের সাহায্য ছাড়া এই সমস্যার সমাধান করা খুব কঠিন বিষয়।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বললেন, “শহরতলি এলাকার যানজট কমাতে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। রাস্তার পাশের বাজার নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।” |
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|