|
|
|
|
বেশি ভয়ঙ্কর র্যান্টি, ইস্টবেঙ্গল এ বার আরও ভাল দল |
ওডাফা এলেও জিততে দেব না মোহনবাগানকে বললেন বন্ধু ওপারা |
রূপায়ণ ভট্টাচার্য ² কলকাতা |
কোথায় আতঙ্ক? কলকাতায় ওডাফা ওকোলির আবির্ভাবে আদৌ ভয় পাচ্ছেন না উগা ওপারা। বরং হাসতে হাসতে আই লিগের এক নম্বর স্টপারের চ্যালেঞ্জ, “ওডাফা কলকাতায় খেলতে আসায় অনেক ভাল হয়েছে। আমরা আরও অনুপ্রাণিত হয়ে খেলব। বিপক্ষে ভাল প্লেয়ার থাকলে নিজের জেদ বাড়ে।”
হিন্দি সিনেমা নিয়মিত দেখেন এই নাইজিরিয়ান। সলমন খান প্রিয় অভিনেতা। সলমনের ঢংয়েই ডাকাবুকো ওপারার পরের সেংযাজন, “যে সব ট্রফি এ বছর জিততে পারিনি, সব পরের বার জিততে চাই ইস্টবেঙ্গলে। আই লিগ, আইএফএ শিল্ড, ডুরান্ড কাপ। প্রথম লক্ষ্য আই লিগ। আর এ বারও মোহনবাগানকে জিততে দেব না।”
ওডাফা মোহনবাগানে আসায় এখন থেকেই ময়দান জুড়ে ওপারা বনাম ওডাফা রব। শুনে শুক্রবার বিকেলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে সাক্ষাৎকার দিতে বসে ওপারা বললেন, “ওডাফা দারুণ প্লেয়ার। রেকর্ডই সেটা বলছে। তবে ওর বিরুদ্ধে আমার রেকর্ড ভাল। পাঁচবার খেলে মাত্র একটা হেরেছি। তা ছাড়া এ বছর আমাদের দল তো গতবারের থেকে ভাল।” ওপারার চোখে সবচেয়ে বিপজ্জনক ভারতীয় ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রী, সেরা নির্ভরযোগ্য ভারতীয় স্টপার গৌরমাঙ্গি সিংহ। কেউই তাঁর দলে নেই। তবু নিজের দলকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন।
টিমগেমের আলোয় লাল-হলুদের এক নম্বর স্টপার মনে করছেন, ওডাফার থেকে র্যান্টি মার্টিন্স বেশি ভয়ঙ্কর। “ওডাফা অনেক ব্যক্তিগত ফুটবল খেলে। র্যান্টির ফুটবল সেখানে দলগত। ওডাফা পাওয়ার দিয়ে খেলে। র্যান্টি খেলে বুদ্ধি দিয়ে।” নাইজিরিয়ায় ওপারার বাড়ি থেকে ওডাফার বাড়ি গাড়িতে পৌনে এক ঘণ্টা। প্রতিবেশী রাজ্যে বাড়ি। র্যান্টির বাড়ি বরং অনেক দূর, বিমানে এক ঘণ্টা। ওই প্রসঙ্গে ওপারার মন্তব্য, “ওডাফা খুব ভাল ফুটবলার। আমার ভাল বন্ধু। সই করে ফোন করেছিল। শুভেচ্ছা জানিয়েছি।” ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উদ্দেশে ওপারার বার্তা, “আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। গতবারের থেকে এ বার ইস্টবেঙ্গল দল অনেক ভাল হয়েছে। নবির অভাব সামলে নেব।” নবিকে যে তিনি পাশে চেয়েছিলেন, তা মানলেন। “অভ্রর বাড়িতে দু’দিন আগেও নবিকে অনুরোধ করেছি, টিম ছেড়ো না। ও মানল না। কী করব?”
এ বার আই লিগ চলার সময় বারবার তাঁকে নিয়ে গুজব উড়েছে, ইস্টবেঙ্গল ছাড়বেন। ওপারা ক্লাবে সন্তুষ্ট নন। সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় হাসিখুশি ওপারা প্রসঙ্গটা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। দু’কানের হিরের দুল যত ঝলসাচ্ছে, তত ঝলসাচ্ছে মুখের হাসি। পাশে বসা কর্তা দেবব্রত সরকারকে দেখিয়ে বললেন, “আরও দু’বছর চুক্তি হয়ে আছে। ইস্টবেঙ্গল পরের বছরও ছাড়ছি না। অনেকে বলেন, বিদেশিরা কলকাতায় চাপের জন্য খেলতে আসে না। এখানে মিডিয়ার চাপ। কর্মকর্তাদের চাপ। ফ্যানদের চাপ। আমি সেটা মনে করি না। ওডাফা যে ও সব উপেক্ষা করে আসছে, সেটা ভাল। কলকাতায় খেলা আমি উপভোগ করি।” কিন্তু আপনার সঙ্গে তো ক্লাবের ঠোকাঠুকি হয়েছে। বলা হলে ওপারা হাসেন, “মাঝেমাঝে ইস্টবেঙ্গলের উপর আমি বিরক্ত হয়েছি। এটা সব সংসারে হয়। আবার মিটেও যায়। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলে কর্তারা খুব ভাল ব্যবহার করেছেন।” |
|
সপরিবার শহর ছাড়লেন ওডাফা। শুক্রবার বিমানবন্দরে। -শঙ্কর নাগ দাস |
মোহনবাগানের ৫ গোলের ম্যাচটা ইস্টবেঙ্গল বেঞ্চে বসে দেখেছিলেন। তাঁকে খেলাননি কোচ সুভাষ ভৌমিক। আপনাকে ওই দুঃখ কতটা নাড়া দেয়? ওপারা কাউকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান না, “আমি নতুন এসেছি। কোচ জানতেন না, আমি কেমন। ওঁকে দোষ দেব না। পরের দিকে উনি স্ট্রাইকারে নামাতে চেয়েছিলেন। আমি রাজি হইনি। প্রথম ম্যাচে আমি অন্য পজিশনে খেলব কেন? তবে ওটা ভুলে গিয়েছি। গতবার ওরা আমায় হারাতে পারেনি।”
আই লিগটা পরের বার চাই, বারবার বলছিলেন ওপারা। এ বার ছ’টা ম্যাচ খেলেননি। তিনটেতেই দল হেরেছে। তাঁর জন্য বাড়তি কৃতিত্ব নিতে চান না। ইস্টবেঙ্গল আই লিগে কোন জায়গাটায় ধাক্কা খেল? ওপারার ধারণা, ঘরের মাঠে মুম্বই এফসি-র কাছে হারই টার্নিং পয়েন্ট। “সালগাওকর ম্যাচটায় রেফারি বড় ভুল করেছিল। পেনাল্টিটা না দিলে ০-২ থেকে ওরা ৩-২ জেতে না। ওটা জিততে পারলে...”
হাসিখুশি ওপারার মুখে এই প্রথম বিষণ্ণতা। |
ওডাফা বনাম ওপারা |
l৫ বার মুখোমুখি। ২ বার জেতে ওপারা’র ইস্টবেঙ্গল। ১ বার ওডাফা’র চার্চিল। ২টো ড্র।
l৫ ম্যাচে ওপারাকে টপকে ৩টি গোল করেছেন ওডাফা।
l৫ ম্যাচে ৩টি ম্যাচে ওডাফাকে গোল করতে দেননি ওপারা।
lএ বার আই লিগে দুটি ম্যাচেই ওডাফা নায়ক। মারগাওয়ে শেষ ম্যাচে জোড়া গোল করেন। কলকাতায় আহত অবস্থায় শেষ পাঁচ মিনিট নেমে, ইস্টবেঙ্গলের জেতা ম্যাচ ২-২ ড্র করান ভিনসেন্টকে দিয়ে গোল করিয়ে। |
তথ্য: হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় |
|
|
|
|
|
|