|
|
|
|
গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ বনকর্মীদের বিরুদ্ধেই |
ক্রমশ কমছে উত্তরের জঙ্গলভূমি |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² ময়নাগুড়ি |
বন দফতরের অনুমতি না-নিয়ে পুরানো গাছ কেটে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ময়নাগুড়ির রামসাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের চত্বরে কেটে রাখা গাছ আটক করে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী যখন পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষার জন্য রাজ্যে এক কোটি গাছ লাগানোর কথা বলছেন, তখন কোনও অনুমতি না-নিয়ে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ৫টি পুরনো মূল্যবান গাছ কেটে বাইরে বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলেন। বিক্ষোভের জন্য তা সম্ভব হয়নি। খবর পেয়ে বন দফতরের কর্তারা ঘটনা পৌছে ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও কল্যাণ দাস বলেন, “কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র চত্বরে গাছ কাটার বিষয়ে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেটে ফেলা গাছ আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” |
|
ছবি: দীপঙ্কর ঘটক। |
রামসাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য পুরানো তাজা গাছ কাটার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “জীবন্ত গাছ কাটার কোনও প্রশ্নই নেই। ডেমনস্ট্রেশন ইউনিটের উন্নতির জন্য একটি মরা গাছ কাটা হচ্ছিল। সেটা নিয়েই ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনার পরে তা মিটে গিয়েছে।” এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ দিন আটক করা গাছটি ছিল পুরনো তাজা শিরিষ গাছ। যে ব্যক্তিরা গাছ কাটতে যান বিক্ষোভের মুখে তাঁরা জানান, কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছে ৪টি শিরিষ এবং একটি খয়ের গাছ মাত্র ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। রামসাই পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক মানিক দে সরকার বলেন, “ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই তাজা একটি গাছ কেটে ফেলা হয়। আরও একটি গাছ কাটার কাজ চলছিল। কিন্তু বাসিন্দাদের বাধায় তা সম্ভব হয়নি।” গাছ কেটে নেওয়ার জন্য এ দিন সাত সকালে একদল লোক ভ্যান রিকশা নিয়ে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের চত্বরে যায়। ঘটনাটি দেখার পরে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা কেন গাছ কাটা হচ্ছে জানতে গেলে তাঁরা জানায় কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছে ৫টি গাছ বিক্রি করেছে। সরকারি এলাকা থেকে এ ভাবে গাছ বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিরাট চত্বর ঘিরে ফেলে তাঁরা কাটা গাছ আটক করেন। রামসাই পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা ওই বিক্ষোভ আন্দোলনে যোগ দিয়ে বন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রামসাই-এর বিট আফিসার আশিস বিশ্বাস ঘটনাস্থলে পৌছে জানান, গাছ কাটার জন্য কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁর কাছে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “সরকারি সংস্থার চত্বরে গাছ কাটতে গেলে তদন্ত করে অনুমতি দেওয়া হয়। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে ওই ধরণের কোনও তদন্ত হয়নি।” পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার তদন্তের দাবি তোলেন। বন দফতরের কর্তারা তদন্তের আশ্বাস দিলে বেলা ১টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। |
|
|
|
|
|