সাত বছর বন্ধ বৈদ্যুতিক চুল্লি, শবদাহ নিয়ে সমস্যা
প্রায় সাত বছর ধরে বন্ধ দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি। ফলে শবদাহ সৎকার করতে গিয়ে দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিষয়টি প্রশাসনের জানা থাকলেও সমস্যা মেটাতে এ পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি।
প্রাচীন এই শ্মশানে তাড়াতাড়ি শবদেহ দাহ করার জন্য ১৯৯৬ সালে বৈদ্যুতিক চুল্লিটি চালু হয়। তার পর থেকে মাঝেমধ্যেই যন্ত্রাংশ বিকল হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যেই চুল্লিটি বন্ধ থাকত। পরে মেরামতির পরে ফের তা চালু হত। কিন্তু ২০০৪ সালে চুল্লিটি বিকল হওয়ার পর টাকার অভাবে তা সারানো যাচ্ছিল না। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে ক্ষমতায় ফেরার পর বৈদ্যুতিক চুল্লিটি চালু করতে গেলে দেখা যায় বিদ্যুতের বিল বাবদ ২৭ লক্ষ বাকি রয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা যায় বিকল হয়ে যাওয়া চুল্লির মেশিন সারাতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হবে। এত টাকা সংস্তার করা সম্ভব না হওয়ায় চুল্লি চালু করার বিষয়টি শিকেয় ওঠে।
এ দিকে ’৯৬ সালে যখন চুল্লিটি উদ্বোধন হয়, তখন এখানকার মানুষ ভেবেছিলেন শবদাহের জন্য আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হবে না। কিন্তু কিছু দিন চলার পর মেশিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে যায়। সেই থেকে সাবেক পদ্ধতিতেই চলছে শবদাহ। এর ফলে দুর্গন্ধে যেমন অতিষ্ঠ হচ্ছে সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা তেমনই পরিবেশও দূষিত হচ্ছে ভয়ানকভাবে। এ ছাড়া অন্যান্য সমস্যাও রয়েছে। যেমন শবদেহ দাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠের দাম আকাশছোঁয়া। তার উপর দাহ করার জায়গায় কোনও ছাউনি নেই। ফলে অল্প বৃষ্টি হলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। নেই শবদেব নিয়ে আসা লোকজনের বিশ্রামের জন্য কোনও ছাউনি ও শৌচাগার। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হওয়ার পর কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার এবং বারুইপুর এই তিন মহকুমা থেকে মানুষ এখানেই শবদেহ দাহ করতে আসত। দিনে ৮-১০টির মতো শব দাহ করা হত। কিন্তু চুল্লি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এখন তা কমে ৪-৫টিতে ঠেকেছে।
শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লিটি রয়েছে মন্দিরবাজার পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে। তদারকির জন্য ৪ জন কর্মী নিযুক্ত আছেন। তাঁদেরই একজন মনোজ ময়রা জানান, বিস্তীর্ণ এলাকায় কোনও বৈদ্যুতিক চুল্লি না থাকায় এখানে শবদাহ ভালই চলছিল। কিন্তু চুল্লি খারাপ হওয়ার পর এখানে শবদাহ কমে গিয়েছে। দক্ষিণ বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান আবুল হামিল হালদার বলেন, “পঞ্চায়েতের তহবিলে অত টাকা নেই। তাই চুল্লি সারানোর কাজ করা যায়নি। তবে চুল্লি বন্ধ থাকার কারণে যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।”
মন্দিরবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ জাটুয়া বলেন, “বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ২৭ লক্ষ টাকা। সুদ সমেত তা দাঁড়িয়েছে ৩৭ লক্ষ টাকায়। জেলা পরিষদ থেকে ১৩ লক্ষ এবং আমরা ৪ লক্ষ, মোট ১৭ লক্ষ টাকা দিয়ে মেশিন সারানো এবং বিদ্যুৎ বিলের কিছুটা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি সামনের সপ্তাহ থেকে চুল্লি চালু হয়ে যাবে।” তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় ছাদ, বিদ্যুৎ লাইনের ওয়্যারিং এবং কিছু বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। পরে সাংসদ কোটার টাকা দিয়ে এগুলি সারানোর ব্যবস্থা হবে।
Previous Story Jibjagat Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.