|
|
|
|
শিক্ষিকা হতে চায় শিয়াখালার পিয়ালি |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²শিয়াখালা |
গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো’।
ঘরে ঢুকতে হয় মাথা হেঁট করে। মাটির বাড়িটার প্রতি কোণে দারিদ্রের উপস্থিতি। সেই দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেই মাধ্যমিকে ৬৩৩ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে হুগলির শিয়াখালার পাতুল গ্রামের পিয়ালি মাঝি। শিয়াখালা বেণীমাধব উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীটি মাধ্যমিকে বাংলা দু’টি পত্র মিলিয়ে ১৪৩, ইংরেজিতে ৬৫, অঙ্কে ৮২, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৩, জীবনবিজ্ঞানে ৯৪, ইতিহাসে ৭০ এবং ভুগোলে ৮৬ পেয়েছে। গত বুধবার শিয়াখালা বেণীমাধব উচ্চ বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হয়েছে পিয়ালি। তার ইচ্ছে, শিক্ষিকা হওয়ার। কিন্তু তার উচ্চশিক্ষার প্রশ্নে কপালে ভাঁজ পড়েছে বাবা -মায়ের। কেননা, প্রতিবন্ধকতা পরিবারের প্রবল আর্থিক অনটন। বাবা নিমাই মাঝি পরের সামান্য জমিতে ভাগচাষ করেন। আয় যৎসামান্য। তার উপর ঘাড় -পিঠের যন্ত্রণা তাঁর পরিশ্রমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রায়ই। স্ত্রী শঙ্করীদেবী বাড়ির কাজের ফাঁকে নিমাইবাবুকে সাহায্য করেন। পিয়ালিকেও মাঝেমধ্যে হাত লাগাতে হয়। নিমাইবাবু বলেন, “এমনও দিন গিয়েছে মেয়েটা মাথায় করে ধান বয়েছে।” তবে পড়াশোনা ছাড়া আপাতত আর কিছু ভাবতে চায় না পিয়ালি। নিমাইবাবু এবং শঙ্করীদেবী কেউই বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। তবু তাঁরা দু’জনেই চান মেয়ে অনেক বড় হোক। কিন্তু পড়াশোনার খরচের কথা ভেবে তাঁদের চোখে জল চলে আসে। শঙ্করীদেবী বলেন, “এতদিন মেয়ের স্কুলের দিদিমণি আর গৃহশিক্ষকেরা ওকে সাহায্য করেছেন। কিন্তু এখন আমাদের পক্ষে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো অসম্ভব। কী করে যে ওর পড়াশোনা হবে ভেবে পাচ্ছি না।” |
|
|
|
|
|