হুব্বা শ্যামলের প্রাক্তন শাগরেদ রমেশ গ্রেফতার
হুগলির ত্রাস হুব্বা শ্যামলের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রমেশ মাহাতোকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে একসময়ে শ্যামলের ডান হাত ছিল। গ্রেফতার হয়েছে রমেশের শাগরেদ জিতেন্দ্র সিংহও। তবে রমেশের আর এক শাগরেদ নেপু গিরি এখনও ফেরার। জেলার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “রমেশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েকজন দুষ্কৃতী ওই ঘটনায় জড়িত ছিল। তাদের খোঁজ চলছে।” তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা, শ্যামলকে সরিয়ে রমেশ এলাকায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েম করতে চেয়েছিল।
বছর তিনেক আগেও সাধারণ মানুষ তো বটেই, পুলিশও ভাল ভাবে চিনত না শ্যামলকে। সে ছিল ‘অদেখা ত্রাস’। বরাবরই সে কোনও না কোনও রাজনৈতিক ‘দাদা’র ছত্রচ্ছায়ায় ছিল। কয়েক মাস আগে শ্যামলকে দেখা গিয়েছিল বৈদ্যবাটির একটি ফুটবল মাঠে। সকলের সঙ্গেই সে হাসিমুখে কথা বলছিল।
রমেশ মাহাতো জিতেন্দ্র সিংহ
তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা মনে করছেন, শ্যামল কয়েক কোটি টাকার মালিক ছিল। ইদানীং সে অনেক বেশি মন দিয়েছিল সংসারের দিকে। এই সুযোগে নেপু গিরি বা চিকুয়ার মতো দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। প্রাক্তন শাগরেদ নেপুর সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন ধরে শ্যামলের। সেই সুযোগটাই নেয় সমাজবিরোধী রমেশ মাহাতো। শ্যামলের অনুচর রমেশ পরে নিজেই দল গড়ে। উত্তরপাড়া -কোন্নগর -রিষড়া জুড়ে প্রোমোটারি ব্যবসায় একচ্ছত্র দাদাগিরি করার নেশা পেয়ে বসে রমেশকে। তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা, তাই শ্যামলকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে রমেশ। কোন্নগরের ধর্মডাঙা এলাকায় শ্যামলের বাড়ি। পুলিশ জেনেছে, গত রবিবার নিখোঁজ হওয়ার দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মোটরবাইকে চেপে রিষড়ার দাসপাড়ায় আসে শ্যামল। সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিল রমেশ। শ্যামল বাইক রেখে রমেশের গাড়িতে উঠে পড়ে। তাদের সঙ্গে আরও এক দুষ্কৃতী ছিল। তারা উত্তরপাড়ার মাখলায় একটি জমি দেখতে যায়। কাজ সেরে ৮টা নাগাদ ফের দাসপাড়ায় আসে। মাঝপথে নেপু তাদের গাড়িতে ওঠে। এর পর থেকে শ্যামলের কোনও খোঁজ মেলেনি। ঠিক কোথায় শ্যামলকে খুন করা হয়, তা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঁচ জন চিকিৎসকের একটি দল শ্যামলের দেহের ময়না -তদন্ত করেন। এর পরে শববাহী গাড়িতে চাপিয়ে জিটি রোড ধরে ধর্মডাঙার বাড়িতে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ‘মাঝারি’ নেতাদেরও হাসপাতালে দেখা যায়।
খুব ছোট বয়স থেকেই চুরি, ছিনতাইয়ের মাধ্যমে শ্যামলের অপরাধ জগতে প্রবেশ। বন্ধ কারখানার মালপত্র অন্যত্র সরাত সে। শ্রীরামপুর মহকুমায় শ্রীদূুর্গা কটন মিল, জে কে স্টিল, ইউনাইটেড ভেজিটেবিলস, সেরাইকেল্লা, বিন্দাল, বাগখাল জুটমিল, শ্রীরামপুর বেল্টিং -সহ বিভিন্ন বন্ধ কারখানার মালপত্র গায়ের জোরে সরাত শ্যামল। এই কাজে সে রাজনৈতিক দলের সাহায্য পেয়েছিল। কয়েকটি কারখানার জমি হাতিয়ে তাতে প্লটিং করে বাড়ি পর্যন্ত তৈরি করা হয়। এ ছাড়াও, রিষড়া -কোন্নগরে প্রোমোটিং করে বহু ফ্ল্যাট তৈরি করে সে। খুন, তোলাবাজি -সহ বহু মামলা দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। হাওড়ার সমাজবিরোধীরাও হুগলি শিল্পাঞ্চলের জমি গ্রাস করতে হাত মিলিয়েছিল হুব্বার সঙ্গে। হাওড়া ও হুগলির ছাঁট লোহার ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও তার যোগসাজশ ছিল বলে পুলিশের দাবি।
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.