|
|
|
|
অস্বস্তি এড়াতে অনশনকে কটাক্ষ |
রামদেব-প্রশ্নে মনমোহনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে সনিয়ার |
নিজস্ব সংবাদদাতা²নয়াদিল্লি |
যোগগুরু রামদেবকে ঘিরে অস্বস্তির হাওয়া কংগ্রেসের অন্দরমহলে।
কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সূত্রের খবর, রামদেবকে ‘অতিরিক্ত গুরুত্ব’ দেওয়ার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস সভানেত্রীর মধ্যে মতান্তর এখন চরমে। অসন্তুষ্ট রাহুল গাঁধীও। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ এ-ও বলেছেন, “রামদেবের সঙ্গে যে আলোচনা ও দৌত্য চলছে, সে ব্যাপারে সরকারই জবাব দেবে। এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই।” রামদেব-প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়ে এখন পাল্টা যোগগুরুকেই নিশানা করছে কংগ্রেস। দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহ আজ রামদেবকে কটাক্ষ করে জানান, বহু কোটি টাকার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন যিনি, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আদর্শ হতে পারেন না। কিন্তু তাতেও কংগ্রেসের ঘরের সমস্যা মিটছে কি? |
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক শীর্ষ নেতা আজ জানান, মূল সমস্যা রামদেবের সঙ্গে আলোচনায় বসা নিয়ে নয়। বরং তাঁকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া। পরশু যে ভাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়-সহ সরকারের চার মন্ত্রী রামদেবের সঙ্গে কথা বলতে বিমানবন্দরে যান, তা একেবারেই উচিত হয়নি। তাতে এই বার্তাই গিয়েছে যে, সরকারের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতটাই যে, রামদেবের সামনেও মাথা নোয়াতে হচ্ছে। বস্তুত ওই বৈঠকের দিন রাতেই কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতাও একই মত পোষণ করে সরব হয়েছিলেন। তখনই সংশয় তৈরি হয় এই বলে যে, এটা কি ওই নেতার ব্যক্তিগত মত, নাকি সনিয়া গাঁধীও তেমনই মনে করছেন। তবে এখন যে ভাবে এআইসিসি-র অধিকাংশ নেতা ঘরোয়া আলোচনায় অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন, তাতে স্পষ্ট হচ্ছে যে, সনিয়াও বিষয়টি নিয়ে অখুশি। দলনেত্রীর অসন্তোষের বিষয়টি তুলে ধরে তাঁরা জানাচ্ছেন, গত কাল কোর গ্রুপের বৈঠকেও সনিয়া এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রণববাবু-সহ মন্ত্রিসভার চার সদস্যকে রামদেবের সঙ্গে আলোচনায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনীতি বিষয়ক কমিটিতে। সিদ্ধান্ত সনিয়া গাঁধীকে পরে জানানো হয়। যে হেতু বিমানবন্দরের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি এবং তা নিয়ে কংগ্রেসের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, তাই দলের নেতারা দূরত্ব তৈরি করতে চাইছেন। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, অধিকাংশ নেতার মতে, কেবল একজন বা দু’জন মন্ত্রী রামদেবের সঙ্গে আলোচনায় গেলেই হত। গুরুত্বের বিচারে প্রণববাবু ইউপিএ সরকারে মনমোহন সিংহের পরেই। তিনি বিমানবন্দরে যাওয়ায় অস্বস্তিটা বেশিই হচ্ছে। সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে ক্ষোভ জানিয়ে কালই প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেন দিগ্বিজয় সিংহ। সূত্রের খবর, প্রণববাবু তাঁকে জানান, রাজনীতি বিষয়ক কমিটির বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি বিমানবন্দরে যান।
রাহুল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের অন্যতম দিগ্বিজয়। সূত্রের খবর, দিগ্বিজয়ের মতোই গাঁধী পরিবারের তরুণ প্রজন্মও বিষয়টি নিয়ে অখুশি। এই অবস্থায় ক্ষত মেরামতে নেমে এখন রামদেবের সমালোচনায় নেমেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দিগ্বিজয় আজ বলেন, “রামদেব যে সব বিষয় উত্থাপন করেছেন, সে ব্যাপারে সরকার আগে থেকেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। এমন নয় যে, উনি নতুন কোনও কথা বলছেন। সরকার অনেকটা উদার মনোভাব নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। কিন্তু তাকে সরকারের দুর্বলতা বলে মনে করলে ভুল হবে।” |
|
|
|
|
|