|
|
|
|
বিমানবন্দরে পরিবর্তন |
লাল বা তেরঙ্গা কেউ পাশে নেই, কর্মবিরতির ভরাডুবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
বাম কিংবা অ-বাম, কোনও শিবিরেরই সমর্থন মিলল না। তৃণমূল কিংবা সিটু কোনও পক্ষেরই সমর্থন না-থাকায় এমনিতেই কর্মবিরতির আন্দোলন দানা বাঁধেনি। তাই শুক্রবার সন্ধ্যায় মৌখিক আশ্বাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কর্মবিরতি তুলে নিলেন আন্দোলনকারীরা।
ঘটনাস্থল কলকাতা বিমানবন্দর। যেখানে এত দিন কর্মীদের যে-কোনও আন্দোলনই কোনও না কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের মদতে জোরদার হয়ে উঠত। যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মনে রাখত না কেউ। শুক্রবারটা সে-দিক থেকে ব্যতিক্রম। সিটুর প্রত্যক্ষ সমর্থন না-পেয়ে একটি বিমান সংস্থার মালবাহকদের একাংশ এ দিন তৃণমূলের সমর্থন চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের পরিষ্কার জানিয়ে দেন, নেত্রীর বারণ আছে। তাই তাঁরা কর্মবিরতির আন্দোলনে সামিল হতে পারবেন না।
তার পরে কোনও রাজনৈতিক দল কিংবা শ্রমিক সংগঠনের সমর্থন ছাড়াই ১৮০ জন মালবাহক বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি আন্দোলনে সামিল হন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, তাঁরা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছেন না। কিন্তু এই প্রথম বিমানবন্দরের কোনও আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা দেখা গেল না। কয়েক বছর ধরে কলকাতা বিমানবন্দরে যে-হারে বন্ধ, ধর্মঘট এবং অবরোধ হয়েছে, তাতে জেরবার হয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বদনাম হয়েছে কলকাতার। এ দিন তার ব্যতিক্রম ঘটল।
এ দিন সকাল থেকে যাঁরা ওই কর্মবিরতি আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে সিটু-সমর্থকেরাও ছিলেন। কিন্তু কারও হাতে লাল ঝান্ডা দেখা যায়নি। লাল বা তেরঙ্গা এ দিন আন্দোলনস্থলে কোনও ঝান্ডাই ছিল না। সিটু সরাসরি আন্দোলনে সামিল না-হওয়ায় আন্দোলনকারীরা যান তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। কিন্তু তাঁরাও আন্দোলনকারীদের আবেদনে সাড়া দেননি। যে-বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সেই স্পাইসজেটের কয়েকটি উড়ান এ দিন দেরিতে ছেড়েছে মাত্র। সংস্থার অফিসার ও কর্মীরাই মালবাহকের কাজ করেছেন। বিমানবন্দরের অন্য কোনও কাজ ব্যাহত হয়নি।
দমদম পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ নট্ট এখন দলের পক্ষে কলকাতা বিমানবন্দরের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, “নেত্রীর কড়া নির্দেশ রয়েছে। কোনও ধরনের বন্ধ বা অবরোধ করা যাবে না। আমরা বিমান সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় চেয়েছিলাম। ওঁরা শোনেননি।” বিমানবন্দরে ঠিকাদারের অধীনে কাজে নিযুক্ত কর্মীদের নিয়ে গঠিত সিটু ইউনিয়নের সম্পাদক প্রণব চক্রবর্তী বলেন, “বিমানযাত্রীদের যাতে অসুবিধা না-হয়, সেই জন্যই আমরা এই কর্মবিরতিতে সরাসরি ঝান্ডা নিয়ে নামিনি। তবে যে-দাবিতে কর্মীরা কর্মবিরতি আন্দোলন করেছেন, তাতে আমাদের সমর্থন রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা ওই বিমান সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছি।” যাত্রীদের সমস্যা নিয়ে তাঁরাও যে ভাবেন, এমন কথা এর আগে কখনও সিটু নেতৃত্বের মুখে এ ভাবে শোনা যায়নি!
কর্মবিরতিতে যোগ দেওয়া ঠিকাদার সংস্থার কর্মী কার্তিক পাল এবং অন্যদের অভিযোগ, স্পাইসজেট তাঁদের সাপ্তাহিক ছুটি, ওভারটাইম দেয় না। বর্ধিত ন্যূনতম মজুরিও দিচ্ছে না। এয়ারলাইন্স অপারেটিং কমিটির চেয়ারম্যান সম্বুদ্ধ গুপ্ত বলেন, “কর্মীদের এই সমস্যার সমাধান তো ঠিকাদারেরই করা উচিত।” সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তপন রায়চৌধুরী সন্ধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি ন্যূনতম মজুরির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিমান সংস্থা সেই বর্ধিত হারে মজুরি দিতে রাজি হয়েছে।” |
|
|
|
|
|