নজরে উৎকর্ষ
প্রেসিডেন্সি উন্নয়নে অমর্ত্য, সুগতকে আমন্ত্রণ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রেসিডেন্সি কলেজকে ফের আন্তর্জাতিক শিক্ষা মানচিত্রে তুলে ধরার প্রক্রিয়া শুরু হল। এবং সেটা হল, ওই প্রতিষ্ঠানেরই অতি-উজ্জ্বল প্রাক্তনীদের হাত ধরে।
প্রেসিডেন্সির জন্য রাজ্য সরকারের গড়া ‘মেন্টর গ্রুপ’-এর মুখ্য উপদেষ্টা হচ্ছেন নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। চেয়ারম্যান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসু। এঁদের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকছে বাকি সদস্যদের বেছে নেওয়ার। সেই প্রক্রিয়া তাঁরা অচিরেই শুরু করবেন বলেও জানা গিয়েছে। শুক্রবার সরকারি ভাবে এ কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলেছি, দলতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রই আমাদের লক্ষ্য। মেন্টর গ্রুপের বাকি সদস্যদের মনোনয়ন ওঁরাই করবেন। আমরা এর মধ্যে নাক গলাব না।”
প্রেসিডেন্সির পঠনপাঠনের মান ক্রমশই নিম্নমুখী হয়ে পড়ছে, এই অভিযোগ অনেক দিন ধরেই উঠছিল। এর প্রধান কারণ হিসেবে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের ভূমিকাই বারবার সামনে এসেছে। স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়ার বদলে বাম জমানায় প্রেসিডেন্সিকে অন্যতম সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবেই দেখা হয়েছে। ফলে শাসক দলও সেখানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখাটাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে। চাপের মুখে বামফ্রন্ট সরকার প্রেসিডেন্সিকে স্বশাসন দিয়েছে ঠিকই, প্রেসিডেন্সিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করাও হয়েছে। কিন্তু সেখানেও দলতন্ত্রের আসনটি মজবুত রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল।
ক্ষমতায় আসার দু’দিনের মধ্যেই নতুন সরকার অবশ্য ঘোষণা করে, প্রেসিডেন্সির জন্য নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাঁচে ‘মেন্টর গ্রুপ’ গড়া হবে। বাম সরকারও প্রেসিডেন্সির জন্য একটি কাউন্সিল গড়েছিল। তবে তার ব্যাপ্তি আন্তর্জাতিক স্তরের নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এসেই সেই জরুরি কাজটি করে দেখাল। চেনা বৃত্ত থেকে না বেরনোর দীর্ঘ অভ্যাসে ইতি টেনে রাজ্য সরকার এত দিনে বাইরের দিকে তাকাল। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের বহু প্রাক্তনী দুনিয়ার নানা প্রান্তে সম্মানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত। অমর্ত্যবাবু, সুগতবাবুর মতো বিশিষ্ট শিক্ষকদের প্রেসিডেন্সির সঙ্গে যুক্ত করে রাজ্য সরকার প্রেসিডেন্সির সেই সব প্রাক্তনীর সঙ্গেও যোগসূত্র গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করল।
প্রেসিডেন্সির জন্য আন্তর্জাতিক মানের এই মেন্টর গ্রুপ গড়ার কাজকে বলা যেতে পারে বাতি জ্বালানোর আগে সলতে পাকানো। স্বাভাবিক ভাবেই পরের ধাপটি হল, অতি বিশিষ্ট এই প্রাক্তনীদের প্রেসিডেন্সির মানোন্নয়নের ব্যাপারে পরিকল্পনা করার ষোলো আনা স্বাধীনতা দেওয়া। আর্থিক সহায়তা বা পরিকাঠামো গড়ায় সাহায্য করা ছাড়া সরকারের এই ব্যাপারে অন্য কোনও ভূমিকা থাকবে না, এটাই অভিপ্রেত। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকার প্রেসিডেন্সির জন্য যে আইন তৈরি করেছে, তা রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েরই হুবহু প্রতিলিপি। তার সাহায্যে উৎকর্ষ বাড়ানো কঠিন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই আইন মোতাবেক প্রাক্তনীদেরও উপদেষ্টামণ্ডলীতে আসতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। কিন্তু দুনিয়ার কোনও প্রথম সারির উৎকর্ষ কেন্দ্রে এমন নিয়ম নেই। বিশিষ্ট প্রাক্তনীদের সসম্মানে আমন্ত্রণ জানানোই রীতি। যে রীতি অনুসরণে এই নতুন প্রয়াস।
First Page Calcutta Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.