দিল্লির বাজার ‘দখল’ করতে চলেছে মুর্শিদাবাদের লিচু
দিল্লির বাজার ধরতে চায় মুর্শিদাবাদের লিচু।
সম্প্রতি দিল্লিতে জাতীয় উদ্যান পর্ষদের মেলায় ফরাক্কা ও লালবাগ থেকে ১৩ জন চাষি লিচু নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই লিচুর বাজার ও দান দেখে মুর্শিদাবাদের লিচু উত্তর ভারতে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা।
জেলার উদ্যান পালন দফতরের সাহায্য নিয়ে এ বারই প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে ওই মেলায় ৫ কুইন্টাল লিচু নিয়ে গেছিলেন চাষিরা। চড়া দামে বিকিয়েছে সেই লিচু। উদ্যান পালন দফতরের সহকারী অধিকর্তা শুভদীপ নাথের কথায় ‘‘ওই মেলায় দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফল ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে এ জেলার লিচুচাষিদের সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে একটা বাণিজ্যিক সংযোগ গড়ে তোলার চেষ্টা হয়েছে। এর ফলে এ জেলার লিচুচাষিরা দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় একটা ভাল বাজার ধরতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।”
শুভদীপবাবু বলেন, “মুর্শিদাবাদে লিচু উঠেছে প্রায় দু’সপ্তাহ আগে। বিহারের মুজফ্ফরপুরের লিচু এখনও বাজারে আসতে এক সপ্তাহ। এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে মুর্শিদাবাদের লিচু যাতে দিল্লি এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাজার ধরতে পারে, লক্ষ্য সেটাই। জেলায় ২৩০০ হেক্টর লিচু বাগানে উৎপাদন হয় গড়ে প্রায়২১ হাজার টন লিচু। জেলায় লিচু বিক্রি হয় গড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কিলো হিসাবে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, উৎপাদিত লিচুর অন্তত ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাজার না-পেয়ে। লিচু চাষিরা যাতে এ থেকে বাঁচতে পারেন এবং লিচুর ভাল দাম পান তারই উদ্যোগ দরকার। এ বছর সেটা সম্ভব না-হলেও আগামী বছরের দিকে লক্ষ রেখেই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে জেলা উদ্যানপালন দফতরকে বলা হয়েছে।”
নিজস্ব চিত্র

মুর্শিদাবাদে মূলত উৎপাদিত হয় বোম্বাই, বেদানা গুটি জাতের লিচু। মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ তা বাজারে চলে আসে। মুজফ্ফরপুরের লিচুও এ জেলার মাটিতে লাগিয়ে আগেই ফল পাচ্ছেন চাষিরা। লালবাগের লিচুচাষি হায়াতুন নবি পরীক্ষামূলক ভাবে এ বারে দিল্লির মেলায় পাঠিয়েছেন ১৩০ প্যাকেট (দেড় কেজির প্যাকেট) লিচু। এখানে যে লিচুর দাম ৫০ টাকার মতো, দিল্লিতে সেই লিচুর দাম যথেষ্ট বেশি।
হায়াতুন বলেন, “মুজফ্ফরপুরের লিচু এই সময় বাজারে আসেনি। সেই কারণেই মুর্শিদাবাদের লিচু নিয়ে ফল ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে। মেলায় যদিও সে লিচু সাত গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। দিল্লির সাধারণ বাজারে অতটা না-হলেও মুর্শিদাবাদের লিচুর দাম তিন গুণ হবে বলে আমাদের ধারণা। কারণ, এ জেলার লিচুর মিষ্টি বেশি।” হায়াতুনবাবু বলেন, “উত্তর ভারতে লিচুর বাজার ধরে তা প্যাকেজিং করে পাঠাতে পারলে বাণিজ্যিক দিক থেকে লাভবান হবেন চাষিরা। কিন্তু সমস্যা লিচু পাঠানোর। ট্রেনে ‘এ সি’-র মধ্যে পাঠাতে হবে লিচু। ভাড়া বেশি। সেক্ষেত্রে উদ্যান পালন দফতর আশ্বাস দিয়েছে, উন্নতমানের প্যাকেজিং ব্যবস্থা প্রয়োগ করে দিল্লি বা তার আশপাশে লিচু পাঠানো সম্ভব।”
জাতীয় উদ্যান বোর্ডের এই মেলার অন্যতম সংগঠক জয়ন্ত ঘোষ বলেন, “দিল্লি এলাকার ফল ব্যবসায়ীদের মুর্শিদাবাদের লিচু সম্পর্কে কোনও ধ্যান-ধারণা ছিল না। ফরাক্কায় সবচেয়ে বেশি লিচু হয়। অথচ সেখানকার লিচু আসে না দিল্লিতে। গ্রীষ্মের প্রথমেই যদি দিল্লিতে মুর্শিদাবাদের লিচু এসে পড়ে তা হলে সে জেলার লিচু চাষিরা ভাল পয়সা পাবেন। আগামী বছর থেকে চাষিরা যাতে সে সুযোগ পান তার জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে চাষিদের।”

Previous Story Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.