|
|
|
|
দফতরের কাছে কৈফিয়ত চাইলেন বনমন্ত্রী |
হলংয়ে এসি-এলসিডি বসানোর প্রস্তাব
খারিজ করে ঘরের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ |
নিলয় দাস²ফালাকাটা |
হলং বনবাংলোয় থাকার জন্য চেয়েও পর্যটকেরা ঘর পান না। অথচ ঘর বাড়ানোর কথা না-ভেবে ওই বনবাংলোর প্রতিটি ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র ও এলসিডি বসাতে ২১ লক্ষ টাকার দরপত্র আহ্বান করায় বনকর্তাদের কৈফিয়ত তলব করলেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। ক্ষুব্ধ বনমন্ত্রী ওই প্রস্তাব বাতিল করে বনকর্তাদের অবিলম্বে কী ভাবে ঘরের সংখ্যা বানানো যায় তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। বনমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাতানুকূল যন্ত্র, এলসিডি বসিয়ে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরির দরকার নেই। বরং প্রাকৃতিক পরিবেশে যাতে আরও বেশি পর্যটকেরা থাকতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে হবে।
বনমন্ত্রী বলেন, “অরণ্যপ্রেমী মানুষ হলংয়ে যান। প্রাকৃতিক পরিবেশে বসে বনপ্রাণীর বিচর দেখতে চান। খোলা হাওয়ায় বসে নুন খেতে আসা বুনো জন্তু না-দেখে এলসিডি দেখবেন কেন? তা হলে হলংয়ে যাওয়ার দরকার কী! এ সব হল টাকার অপচয়। আমি বলে দিয়েছি, ওখানে থাকার জন্য অনেকেই ঘর পান না। নাকাল হন। সে জন্য ঘর বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।” পাশাপাশি, এর আগে বনবাংলো সাজাতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার বিস্তারিত হিসেবও চেয়েছেন বনমন্ত্রী। বন দফতর সূত্রের খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু অবসর পেলে মাঝেমধ্যেই হলং বনবাংলোয় যেতেন। জ্যোতিবাবুর জন্য বাংলোর ৪ নম্বর ঘরটি বরাদ্দ থাকত। ওই ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র বসানো হলেও বেশির ভাগ সময়েই তা অকেজো থাকত। হলংয়ে থাকার জন্য বহু পর্যটকদের আগ্রহ সীমাহীন। কিন্তু, হলংয়ে মোটে ৮টি ঘর রয়েছে। তার মধ্যে ৪টি ঘর পর্যটন দফতরের হাতে রয়েছে। বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বছরও ঘরগুলো সাজাতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করা হয়। অথচ ঘর বাড়ানোর কথা সংশ্লিষ্ট বনকর্তারা ভাবেননি। তবে উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল বিপিন সুদ বলেছেন, “পর্যটন দফতর ওই টাকা দিচ্ছিল। বনমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। ওই কাজ হবে না।” সম্প্রতি হলংয়ের সব কটি ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র ও এলসিডি বসানোর পরিকল্পনা হয়। ওই টাকা পর্যটন দফতর দেবে বলে জানানো হয়। সে জন্য ২১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে দরপত্র ডাকা হয়। বিষয়টি জানতে পারেন বনমন্ত্রী। তার পরেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ডিএফও কোচবিহার ওমপ্রকাশ জানান, বাংলোর ঘরগুলো অত্যাধুনিক ভাবে সাজানোর জন্য ওই টাকা বরাদ্দ হয়। বৃহস্পতিবার অরণ্য ভবনে গিয়ে বনমন্ত্রী বিস্তারিত খোঁজ নেন। তার পরেই ওই টাকা খরচ করতে নিষেধ করে দেন। তাঁকে না-জানিয়ে কেন ওই ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সেই ব্যাপারেও কেফিয়ৎ তলব করেন তিনি। বনমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডবেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ) ও আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাব। এই প্রসঙ্গে ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “যাঁরা হলংয়ে যান, তাঁরা প্রকৃতির মধ্যে থাকতে চান। এসি চালিয়ে, টিভি দেখার জন্য হলংয়ে যাওয়ার দরকার নেই। মন্ত্রী ঠিকই করেছেন।” নেচার ক্লাবের মুখপাত্র অমল দত্ত বলেন, “বাতানুকূল যন্ত্র থেকে যে গ্যাস বার হয় তা প্রকৃতির ক্ষতি করে। সব দিক থেকেই বনমন্ত্রী ঠিকই করেছেন।” |
|
|
|
|
|