৩০ ভাদ্র ১৪১৯ শনিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২


নানা রকম
একই পদ এক এক জনের হাতে এক এক রকম। শুধু যে হাত বদলের কারণে স্বাদ বদল হয়, তা ঠিক নয়, পাল্টায় রেসিপির কারণেও।
উপকরণ ও প্রণালীতে সামান্য ‘চেঞ্জ’ মানেই রান্নাটাও গেল কিছুটা বদলে। একই দই ইলিশ, কুমড়োর ছক্কা অথচ রাঙা পিসিমা আর মেজ মাসির
দু’ বাড়িতে দু’রকম স্বাদ। আবার কখনও রান্নার প্রতি গভীর ‘প্যাশন’ থেকেও নতুন নতুন ‘মেনু’ উদ্ভাবিত হয়। গৃহিনীর কাছে রান্নাঘরটা আসলে এক মজার
‘ল্যাবরেটরি’। যদিও পুরুষরাও এই ব্যাপারে এক্কেবারে পিছিয়ে নেই। রান্না সংক্রান্ত আপনার সমস্ত ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ‘শেয়ার’ করার জন্য ‘আপনার রান্নাঘর’।

 
চিজ ভরা ক্যাপসিকাম ভাজা

উপকরণ

ক্যাপসিকাম: ৫-৬টি (বড় আকারের) কর্নফ্লাওয়ার: ১/২ বাটি সাদা ময়দা: ১/২ বাটি ডিম: ৩ টি ফেটানো বিস্কুট বা কর্নফ্লেক্সগুঁড়ো: ১/২ বাটি
সফ্ট চিজ: ৩০০ গ্রাম রসুন পাউডার: ১ চামচ পাপ্রিকা বা সিমলা মরিচগুঁড়ো: ১ চামচ ভেজিটেবল-তেল: ভাজার জন্য নুন: স্বাদ মতো

প্রণালী
ক্যাপসিকামগুলো ৩ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে ভেতর থেকে সব বীজ বাদ দিতে হবে।
চিজ ২ ঘণ্টা আগে ফ্রিজ থেকে বের করে রাখুন।
ক্যাপসিকামের প্রত্যেক টুকরোয় ১ চামচ চিজ ভরে ২ ঘণ্টা ডিপ ফ্রিজে রাখতে হবে।
এ বার তিনটে বাটি নিন:
প্রথম বাটি: কর্নফ্লাওয়ার, সাদা ময়দা, নুন, রসুন পাউডার আর পাপ্রিকাগুঁড়ো মেশাতে হবে।
দ্বিতীয় বাটি: ডিম ফেটিয়ে রাখতে হবে।
তৃতীয় বাটি: বিস্কুট বা কর্নফ্লেক্সেরগুঁড়ো রাখতে হবে।
ক্যাপসিকামগুলো একে একে বাটি তিনটেতে পর পর ডুবিয়ে ভাল করে মাখাতে হবে। সব ক’টা এক বারে মাখাবেন না, চিজ গলতে শুরু করবে। বাকি ক্যাপসিকাম ডিপ ফ্রিজে তুলে রাখুন।
এ বার প্যানে তেল গরম করতে হবে।
গরম তেলে ক্যাপসিকামগুলো বাদামি করে ভেজে নিতে হবে।
মেয়োনিজের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।

বাঁধাকপির রঙিন ভাজা

উপকরণ
বাঁধাকপি: অর্ধেক (মাঝারি আকৃতি) গাজর: ২ টি ক্যাপসিকাম: ২ টি পেয়াঁজ: ১ টি (বড়) রসুন: ১/২ চা-চামচ (থেতো করা)
আদা পেস্ট: ১/২ চামচ জিরেগুঁড়ো: ১/২ চামচ ধনেগুঁড়ো: ১/২ চামচ কারিপাতা: ৪-৫ টি
গোটা সরষে ও গোটা জিরে: অল্প (ফোড়ন এর জন্য) কাঁচালঙ্কা: স্বাদ মতো হলুদ, নুন, মিষ্টি, তেল: আন্দাজমতো

প্রণালী
বাঁধাকপি ভাল করে ধুয়ে যতটা সম্ভব মিহি করে কেটে নিন।
গাজর ও ক্যাপসিকাম ধুয়ে ঝিরি ঝিরি করে কেটে নিন। পেঁয়াজও কেটে রাখুন।
কড়াইতে তেল গরম করে গোটা জিরে, সরষে, কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিতে হবে।
ফোড়নের গন্ধ বেরোলে কারিপাতা দিয়ে দিন।
ওই তেলে পেঁয়াজের টুকরো দিয়ে কিছুটা ভাজা হলে রসুনের পেস্ট দিতে হবে।
পুরো মিশ্রণটি ভাল করে ভাজা হয়ে গেলে প্রথমে বাঁধাকপি ও পর পর গাজর ও ক্যাপসিকাম দিয়ে দিন।
বেশি শুকনো হয়ে গেলে সামান্য জল দিতে পারেন।
এ বার হলুদ ও নুন দিয়ে অল্প নেড়েচেড়ে জিরেগুঁড়ো, ধনেগুঁড়ো, আদার পেস্ট দিতে হবে।
ঝাল বেশি খেতে চাইলে পরিমাণ মতো লঙ্কাগুঁড়ো দেওয়া যেতে পারে।
মাঝারি আঁচে কিছু সময় নাড়াচাড়া করলে জল শুকিয়ে যাবে।
শেষে অল্প একটু মিষ্টি দিলেই হয়ে যাবে চট জলদি রঙিন ভাজা।

বেগুন বাসন্তী

উপকরণ

বেগুন: ২ টি টক দই: ৩ চামচ সরষেবাটা: ৩ চামচ কাঁচালঙ্কা: ২ টি কালোজিরে: ২ চামচ শুকনো লঙ্কা: ২ টি
তেঁতুলগোলা জল: ১/২ চামচ তেল, নুন, চিনি ও হলুদগুঁড়ো: পরিমাণ মতো

প্রণালী
বেগুনগুলো লম্বালম্বি ভাবে ২ টুকরো করে কেটে নিন।
টুকরোগুলো ভাল করে ভেজে আলাদা করে সরিয়ে রাখুন।
টক দইয়ের সঙ্গে পরিমাণ মতো নুন ও ১ চা-চামচ হলুদ মিশিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিন।
কড়াইয়ে যে অতিরিক্ত তেল থাকবে তাতে শুকনো লঙ্কা ও কালোজিরে ফোড়ন দিন।
এর পর সরষেবাটা ও কাঁচালঙ্কা কড়াইয়ে দিয়ে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন।
এ বার দইয়ের মিশ্রণটি কড়াইয়ে ঢেলে অল্প ক্ষণ নাড়তে থাকুন
বাসন্তী রঙের এই মিশ্রণটি নামানোর আগে তেঁতুলজল এবং পরিমাণ মতো নুন ও চিনি মিশিয়ে দিন।
এ বার ভেজে রাখা বেগুনগুলি সুন্দর ভাবে সাজিয়ে মিশ্রণটি উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।

স্পাইসি ক্যাবেজ রাইস

উপকরণ

চাল (বাসমতি): ৫০০ গ্রাম বাঁধাকপি (লম্বা করে কুচানো): ২ কাপ গোটা সরষে: ১ চামচ গোটা জিরে: ১ চামচ হিং: ১ চিমটে কুচোনো রসুন: ১ চামচ
কারিপাতা: ৪/৫ টি কুচানো ধনে পাতা: ২ চামচ লঙ্কাগুঁড়ো/কুচানো কাঁচালঙ্কা: ২ চামচ হলুদগুঁড়ো: অর্ধেক চামচ ধনেগুঁড়ো: ১ চামচ
জিরেগুঁড়ো: ১ চামচ পাতিলেবুর রস: ১ টির নুন: স্বাদ মতো কাঠবাদাম: ২ চামচ মটরশুঁটি: ২ চামচ সাদা তেল: ২৫ গ্রাম

প্রণালী
প্রথমে চালটা অল্প শক্ত রেখে ভাত করে নিন।
কড়াইতে সামান্য তেল দিয়ে বাদামগুলো লাল লাল করে ভেজে রাখুন।
এর পর কড়াইতে তিন চামচ তেল গরম করে আঁচ কমিয়ে দিয়ে সরষে, জিরে ও হিং ফোড়ন দিন।
২ মিনিট পর কুচানো রসুন দিন।
অল্প লাল হয়ে এলে কারিপাতা দিয়ে দিন।
প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাঁধাকপি দিয়ে সামান্য নুন ছড়িয়ে ভাল করে নেড়েচেড়ে চাপা দিয়ে রাখুন।
১০ মিনিট মতো হওয়ার পর ভাত দিয়ে দিন এবং তার উপর লঙ্কা, হলুদ ও লেবুর রস ছড়িযে দিন।
আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে নাড়তে থাকুন।
২ মিনিট পর আঁচ কমিয়ে ধনেগুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো ও মটরশুঁটি মিশিয়ে আবার চাপা দিয়ে রাখুন।
প্রায় ৫/৭ মিনিট পর চেখে দেখে নুন ও ঝাল দিতে পারেন।
আঁচ বন্ধ করে ধনেপাতা ও বাদাম ছড়িয়ে কষা মাংসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।


অ্যাপল জলেবি

উপকরণ

ব্যাটারের জন্য
গ্রিন আপেল: ১টা ময়দা: ৩ কাপ জল: ৩ কাপ চিনি: আধ টেবল-চামচ ইস্ট: আধ টেবল-চামচ তেল: ১ টেবল-চামচ

সিরাপের জন্য
চিনি: ২ কাপ জল: ২ কাপ লেবুর রস: ১ টেবল-চামচ এলাচগুঁড়ো: ১ টেবল-চামচ তেল: ডুবিয়ে ভাজার জন্য

গার্নিশিং-এর জন্য
কাজুবাদাম, পেস্তাগুঁড়ো: ১ টেবল-চামচ (টুকরো করা)



প্রণালী

ব্যাটার
২-৩ টেবল-চামচ জল উষ্ণ গরম করে তাতে আধ টেবল-চামচ করে চিনি ও ইস্ট দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে রাখুন।
আলাদা একটা পাত্রে ময়দার সঙ্গে উপরের পেস্টটি মিশিয়ে দিন। সঙ্গে সাদা তেল ১ টেবল-চামচ তেল ও সামান্য জল দিন।
মিশ্রণটি ভাল করে ফেটিয়ে ব্যাটার তৈরি করে ১ ঘণ্টা মতো রাখুন। খেয়াল রাখতে হবে যে ব্যাটারটি যেন খুব পাতলা বা ঘন না হয়।

সিরাপ
একটা প্যানে চিনি, জল, লেবুর রস, এলাচগুঁড়ো দিয়ে ফোটাতে হবে যত ক্ষণ না পরিমাণ অর্ধেক হয়ে যায়।
আপেল প্রথমে গোল গোল চাকার মতো কেটে নিন।
এ বার একটা কড়াইতে বেশি করে তেল দিয়ে গরম করে নিন।
আপেলের চাকতিগুলো এক এক করে ব্যাটারে চুবিয়ে ভাল করে ভেজে নিন।
ঢিমে আঁচে হাল্কা লাল রং হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন।
ভাজার পর টিস্যু পেপার জড়িয়ে বাইরের তেলটা মুছে নিন।
এ বার গরম অবস্থাতেই টুকরোগুলো সিরাপে চুবিয়ে রাখুন এক মিনিট মতো।
প্লেটে রেখে উপরে কাজুবাদাম, পেস্তাগুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

টিপস
গ্রিন আপেল না থাকলে লাল আপেল দিয়েও করা যায়। তবে গ্রিন আপেলের হাল্কা টক স্বাদ বেশি সুস্বাদু।


চিজ ভরা ক্যাপসিকাম ভাজা
বাঁধাকপির রঙিন ভাজা

শর্মিষ্ঠা চৌধুরী
লন্ডন
বর্তমানে লন্ডনবাসী।
জাপানি ট্রাভেল কোম্পানির কাজ
ছেড়ে এখন পুরো সময়ের গৃহিনী।
রান্নার মাধ্যমে পূর্ব-পশ্চিমকে
মেলানো তাঁর নেশা। ভালবাসেন
বই পড়তে ও বেড়াতে।

রান্নায় হাতেখড়ি বিয়ের পরে। স্বামীর কর্মসূত্রে, এক মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় সংসার। সময় কাটে বিভিন্ন ধরনের রান্না করে। ভাল লাগে গান শুনতে, আপন মনে গান গাইতে আর গল্পের বই পড়তে।


অর্পিতা সাহা নন্দ
হিলস বোরো, ওরেগন
অ্যাপল জলেবি
সঞ্চিতা মহান্তি
, টরেন্টো, কানাডা

পূর্ব মেদিনীপুরের মেয়ে। উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করলেও সাংবাদিকতা, উপস্থাপনা এবং মাল্টিমিডিয়া
ও গ্রাফিক ডিজাইনিং নিয়েও চর্চা করেছেন। স্বামীর রিসার্চের সুবাদে আপাতত টরন্টোয় বসবাস। নানা ধরনের রান্না
করাটা নেশা। অবসর সময় কাটে ছবি এঁকে ও নানা ধরনের বই পড়ে। গান এবং কবিতাও প্রাণ। ছবি তুলতেও ভাল লাগে।

বেগুন বাসন্তী
স্পাইসি ক্যাবেজ রাইস
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ্ সিঙ্গাপুরে
ক্যান্সার নিয়ে গবেষণারতা। ল্যাবরেটরিতেই
কাটে বেশির ভাগ সময়। অবসরে মা এবং
শাশুড়ি মায়ের কাছ থেকে নতুন নতুন
রেসিপি সংগ্রহ করে রান্না করা। ভালবাসেন
রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে এবং ছবি আঁকতে।

দীপাঞ্জনা ঘোষ বসু
সিঙ্গাপুর


সৌমি মণ্ডল
শিকাগো
জন্ম উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে।
স্বামীর কর্মসূত্রে এখন শিকাগোর বাসিন্দা।
রান্নাটা একটা সময় খুব কঠিন মনে হলেও
এখন দিনের অনেকখানি সময় কাটে
রান্নাঘরেই। এ ছাড়াও আছে বেড়াতে
যাওয়া, নেট সার্ফ করা ও গল্পের বই পড়া।

 


লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ: ৩০ সেপ্টেম্বর
বিষয়ের জায়গায় অবশ্যই লিখুন: ‘পুজো স্পেশ্যাল’

লেখা পাঠানোর ঠিকানা
হাওয়াবদল, আপনার রান্নাঘর
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com

সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সঙ্গে আপনার ও ‘ডিশ’-এর ছবি পাঠানো বাধ্যতামূলক।


রোজের আনন্দবাজার এ বারের সংখ্যা সংবাদের হাওয়াবদল আপনার রান্নাঘর স্বাদবদল চিঠি পুরনো সংস্করণ