১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯ মঙ্গলবার ১৫ মে ২০১২


নানা স্বাদে পনির

একই পদ এক এক জনের হাতে এক এক রকম। শুধু যে হাত বদলের কারণে স্বাদ বদল হয়, তা ঠিক নয়, পাল্টায় রেসিপির কারণেও।
উপকরণ ও প্রণালীতে সামান্য ‘চেঞ্জ’ মানেই রান্নাটাও গেল কিছুটা বদলে। একই দই ইলিশ, কুমড়োর ছক্কা অথচ রাঙা পিসিমা আর মেজ মাসির
দু’ বাড়িতে দু’রকম স্বাদ। আবার কখনও রান্নার প্রতি গভীর ‘প্যাশন’ থেকেও নতুন নতুন ‘মেনু’ উদ্ভাবিত হয়। গৃহিনীর কাছে রান্নাঘরটা আসলে এক মজার
‘ল্যাবরেটরি’। যদিও পুরুষরাও এই ব্যাপারে এক্কেবারে পিছিয়ে নেই। রান্না সংক্রান্ত আপনার সমস্ত ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ‘শেয়ার’ করার জন্য ‘আপনার রান্নাঘর’।


  ম্যানচেস্টার থেকে শ্রীমতি পারমিতা ভর (সোম)
পনির ভুর্জি

উপকরণ

পনির: ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ কুচি: ২টো ছোট টোম্যাটো বাটা: ২টো ছোট কাঁচা লঙ্কা: ২টো হলুদ গুঁড়ো: ১/৪ চামচ নুন ও চিনি স্বাদ অনুযায়ী জিরে গুঁড়ো: ১ চামচ
কারি পাতা: ৮-৯টা গোটা জিরে: ১ চামচ গরম মশলা বা ভাজা মশলা: আধ চামচ শুকনো কসুরি মেথি পাতা: আধ চামচ তেল: ২ চামচ মাখন (ইচ্ছা অনুযায়ী)
দুধ: আধ কাপ কাজু বাটা: ২ চামচ তন্দুরি মশলা: ১ চামচ (ব্যবহার না করলেও হবে) ভাজা কাজু ও ধনে পাতা কুচনো: সাজিয়ে পরিবেশনের জন্য



প্রণালী
ঝুরিঝুরি করে পুরো পনির কুরিয়ে নিন। মিক্সিও ব্যবহার করতে পারেন। জল দেবেন না।
এ বার কড়াতে তেল গরম করে গোটা জিরে ও কারি পাতা ফোড়ন দিন।
ফোড়নের গন্ধ বেরোলে পেঁয়াজ কুচি করে কেটে দিয়ে দিন।
পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে টোম্যাটো বাটা দিয়ে ভাল করে মেশাতে হবে।
এ বার কাঁচা লঙ্কা, হলুদ গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, তন্দুরি মশলা (যদি ব্যবহার করেন), নুন, চিনি, গরমমশলা মেশান।
মশলা ভাল করে মিশে গেলে পনির কুরানো দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে।
এর পর কাজু বাটা, কসুরি মেথি, মাখন ও দুধ ভাল করে মিশিয়ে বেশি আঁচে কিছু ক্ষণ রান্না করতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন তলায় না লেগে যায়।
এ বার আঁচ কমিয়ে কিছু ক্ষণ রাখতে হবে তেল ছেড়ে না যাওয়া অবধি। প্রয়োজনে একটু গরম জল দিতে পারেন।
তেল ছেড়ে গেলে ভাজা কাজু ও ধনে পাতা ছড়িয়ে নান, রুটি বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন।

টিপস
যদি কেউ শুকনো পনির ভুর্জি বানাতে চান, সেখানে কাজু বাটা ও দুধ দেওয়ার দরকার নেই।
এই একই পদ্ধতি অনুসরণ করে পনিরের বদলে নানা সব্জি ভাল করে কুচিয়ে সব্জি ভুর্জি বা ডিম ব্যবহার করে ডিম ভুর্জিও বানাতে পারেন।

হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় জন্ম। স্বামীর চাকরি সূত্রে, ২ বছরের মেয়ে আনিয়াকে নিয়ে এখন ম্যানচেস্টারের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই ছিল হাতের কাজের ঝোঁক। দেশ-বিদেশ ঘুরে নতুন রান্না শেখা এখন বড় সখ। আর আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফেসবুক-এ নিজের গ্রুপ ‘আওর ফার্স্ট কিচেন ও ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ল্ড’ গড়ে তোলা এখন নেশা।


হায়দরাবাদ থেকে শ্রীমতি সুমনা দে মল্লিক সিয়াটেল থেকে শ্রীমতি সায়ন্তনী মৈত্র
পনির সশলিক পনির কাটলেট

উপকরণ
চৌকো করে কাটা পনিরের টুকরো টোম্যাটো কাটা পেঁয়াজ
ক্যাপসিকাম নুন লেবুর রস
আদা বাটা রসুন বাটা
জল ঝরানো দই লঙ্কার গুঁড়ো কাঁচালঙ্কা বাটা সাদা তেল



প্রণালী
একটি বাটিতে পনির, নুন, লেবুর রস, আদা বাটা,
রসুন বাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা বাটা ও দই
একসঙ্গে মেখে ১-২ ঘন্টা রাখতে হবে ফ্রিজে।
এ বার কাবাবকাঠিতে পেঁয়াজ-টোম্যাটো- ক্যাপসিকাম-
পনির-পেঁয়াজ... এই ক্রমে গেঁথে নিন।
ফ্রাই প্যানে তেল বুলিয়ে নিয়ে তাতে
ওই কাঠিতে গাঁথা পনিরগুলো ভেজে নিতে হবে।
এ বার গরম গরম পরিবেশন করুন।

উপকরণ
পনির: ২৫০ গ্রাম ময়দা: ৮ চামচ আমচুর: ২ চামচ
নুন: স্বাদ মতো শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো: ২ চামচ
খাওয়ার সোডা: আধ চামচ জল: পরিমাণ মতো
তেল: ভাজার জন্যে পেঁয়াজ ও ধনেপাতা: সাজানোর জন্যে




প্রণালী
কাটলেটের মতো করে পনির কেটে নিন।
একটা পাত্রে ময়দা, খাওয়ার সোডা, আমচুর,
লঙ্কা গুঁড়ো, নুন ও জল দিয়ে মিশ্রণ বানাতে হবে।
প্যান এ তেল গরম করতে দিন।
পনিরের টুকরোগুলো ওই মিশ্রণে
ডুবিয়ে ডিপ-ফ্রাই করতে হবে।
পেঁয়াজ ও ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী। স্বামীর কর্মসূত্রে এখন বসবাস হায়দরাবাদে। নিজের ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ভালবাসেন নতুন নতুন পদ রান্না করতে।
নদিয়ার মেয়ে। আপাতত সিয়াটেলের বাসিন্দা। বেড়াতে আর অবসর সময়ে নতুন রেসিপি বানানোর চেষ্টার পাশাপাশি ভাল লাগে রবীন্দ্রনাথ-সহ আধুনিক কবিতা পড়তে।

ফিজির লাউটোকা থেকে শ্রীমতি শুচিস্মিতা বন্দোপাধ্যায়
ডিম ও পনিরের মিলমিশ

উপকরণ

সেদ্ধ ডিম: ৪টে দুধ: ৫০০ মিলিলিটার (ছানা তৈরি করার জন্য) পেঁয়াজ: ২ টি (একটি বাটা ও অপরটি পাতলা করে কাটা) হলুদ: ১/৩ চা-চামচ
লাল বা হলুদ ক্যাপসিকাম: ১টি (এক ইঞ্চি লম্বা ও সরু করে কাটা) আদা ও রসুন বাটা: ১ টেবল-চামচ করে টোম্যাটো পিউরি: ২ টেবল-চামচ
কাশ্মীরী লঙ্কা গুঁড়ো: ১ চা-চামচ ধনে গুঁড়ো: ১ চা-চামচ গরমমশলা গুঁড়ো: ১/২ চা-চামচ ক্রিম: ১/৩ কাপ নুন: স্বাদমতো চিনি: ১/২ চা-চামচ
তেল: ৩ টেবল-চামচ মাখন: ২ টেবল-চামচ সাজানোর জন্য ৭-৮ টি কাজু ও একমুঠো ধনেপাতা কুচানো



প্রণালী

ডিম সেদ্ধ করে আড়াআড়ি ভাবে দু’ ভাগে কেটে নিন। খেয়াল রাখতে হবে কুসুমটা যাতে বেরিয়ে না যায়।
এর পর দুধ কেটে ছানা তৈরি করে ভাল করে জল ঝরিয়ে ছানাটা মেখে নিন।
এ বার তেল ও মাখন গরম করে কাজুগুলো অর্দ্ধেক করে হালকা করে ভেজে তুলে রাখতে হবে।
এ বার গরম তেলে ১/২ চা-চামচ চিনি দিন। একটু লাল ভাব হলে পেঁয়াজ-কাটা দিয়ে ভাজতে থাকুন।
খেয়াল রাখতে হবে যেন পুড়ে না যায়। প্রয়োজনে আঁচ কমিয়ে দেবেন।
এর পর বাটা পেঁয়াজ দিয়ে আরও কিছু ক্ষণ ভাজুন।
রং পালটে গেলে আদা-রসুন দিয়ে নাড়াচাড়া করুন।
১ মিনিট পর হলুদ, লঙ্কা ও ধনে গুঁড়ো দিয়ে কষতে হবে।
এ বার টোম্যাটো পিউরি দিয়ে আরও কষতে থাকুন যতক্ষণ না মশলা থেকে তেল বেরিয়ে আসে।
এ বার মাখা ছানাটি দিয়ে দিন।
পরিমাণ মতো নুন দিয়ে সামান্য (৩-৪ টেবল-চামচ) গরম জল মেশাতে হবে।
কেটে রাখা ক্যাপসিকাম দিয়ে ২ মিনিট রাখতে হবে ঢিমে আঁচে।
ক্রিম ভাল করে ফেটিয়ে ঢেলে দিয়ে অল্প আঁচে ঢাকা দিয়ে ৫-৬ মিনিট রান্না হতে দিন।
তেল বেরোলে গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে আঁচ নিভিয়ে দিন।
একটি পাত্রে কেটে রাখা ডিম সাজিয়ে, তার ওপরে এই ছানার মিশ্রণ ঢেলে দিন।
ভাজা কাজু আর আর ধনেপাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। ভাত, পরোটা, রুটি বা লুচি... সব কিছুর সঙ্গেই খাওয়া যাবে এই মিলমিশ।

কর্মসুত্রে ফিজিতে থাকলেও বাঙালি রান্না ভোলেননি। শুধু বাঙালি ঘরানা নয়, অন্যান্য ঘরানার রান্না নিয়েও চলে নানা এক্সপেরিমেন্ট। গীতবিতানের এই প্রাক্তনী রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে ও শুনতে ভালবাসেন। রাইফেল শ্যুটার হিসেবে জাতীয় পদকপ্রাপ্ত হলেও গল্পের বই পড়া ও বেড়ানোর নেশার পাশাপাশি পছন্দ করেন নির্ভেজাল আড্ডা দিতে।



আপনারাও পাঠাতে পারেন নতুন পুরনো ভিন্ন স্বাদের নানা রেসিপি, ছবি-সহ, নীচের ঠিকানায়
হাওয়াবদল, আপনার রান্নাঘর
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com

সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সঙ্গে আপনার ছবি পাঠানো বাধ্যতামূলক।


রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যা • সংবাদের হাওয়াবদল আপনার রান্নাঘর স্বাদবদল পুরনো সংস্করণ